নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল বিভাগের প্রতিটি থানায় পুলিশি সেবার মান উন্নয়নে রেঞ্জ ডিআইজি অফিসে তদারকি সেল গঠন করা হয়েছে। এ সেল থেকে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) বা মামলার বাদীর সঙ্গে মোবাইলফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করে থানার সেবার মান সম্পর্কে জানতে চাওয়া হচ্ছে। থানায় জনসাধারণের ভোগান্তি কমাতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এবং সহকারি পুলিশ সুপারদের সার্বক্ষণিক থানা মনিটরিংয়ের নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে। এই কঠোর পর্যবেক্ষণ ও তদারকির ফলে বরিশাল রেঞ্জের আওতাধীন থানাগুলোতে মামলা বা জিডির ক্ষেত্রে আর্থিক লেনদেন হ্রাস পেয়েছে। ডিআইজি অফিস সূত্রে জানা গেছে, প্রত্যেক থানার গুরুত্বপূর্ণ জিডি ও মামলার কপি অভিযোগকারীর মোবাইল নম্বরসহ নির্দিষ্ট ছক পূরণ করে সংক্ষিপ্ত বিবরণ বেলা ১১টার মধ্যে বিভাগীয় প্রধানের (ডিআইজি) অফিসে পাঠিয়ে দেয়া হয়। এরপর ডিআইজি অফিসের একটি টিম জিডিকারী ও মামলাকারীর কাছে মোবাইল করে থানার সেবার মান কেমন ছিল? দীর্ঘ সময় ধরে বসিয়ে রাখা হয়েছে কিনা? আর্থিক লেনদেনে বাধ্য হয়েছেন কিনা? আচরণ ও ব্যবহার কেমন ছিল? মামলা বা জিডির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তদন্ত করতে এসেছিলেন কিনা? তদন্ত করতে এসে কোনো ধরনের খরচের টাকা নিয়েছেন কিনা? মামলার প্রয়োজনে কোনও ধরনের কাগজ বের করা বা তৈরি করার জন্য টাকা চেয়েছেন কিনা? তিনি যে কারণে জিডি করেছেন সেই সেবাটি তিনি পেয়েছেন কিনা? এমন সব বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়। যদি কেউ সেবাপ্রত্যাশীর সঙ্গে খারাপ ও হয়রানিমূলক আচরণ করে তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়। সেই সঙ্গে প্রতিটি থানার প্রকাশ্য স্থানে সংশ্লিষ্ট জেলার ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের মোবাইল নম্বর টানিয়ে দেয়া হয়েছে। যাতে থানার যেকোন অনিয়ম তাৎক্ষণিক ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাতে পারেন সেবাপ্রত্যাশীরা। ডিআইজি মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, সেবাগ্রহীতাদের সঙ্গে থানার পুলিশ সদস্যরা কেমন ব্যবহার করছেন এখন আমরা সেই বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছি। খারাপ ব্যবহারের অভিযোগ পেলেই সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কোনো সেবাগ্রহীতা থানায় এলে তার সমস্যা জেনে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় সেবা দিতে হবে। জিডি বা মামলা দায়ের হওয়ার পর একবার তদরকি করা হয়। এরপর ১৫ দিন বা এক মাস পরে ওই মামলার অগ্রগতির বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হয়। তখনও যদি কোনও ধরনের অভিযোগ পাওয়া যায় সঙ্গে সঙ্গে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপি মহোদয় দেশের সব থানাকে এই সেবা বাস্তবায়নের নির্দেশনা দিয়েছেন। পুলিশ জনগণের বন্ধু, আমরা এই বিষয়টি প্রতিষ্ঠিত করতে কাজ করছি। সেবাপ্রত্যাশী মানুষ এখন পুলিশের কাছে আসতে ভয় পায় না। এটাই আমাদের অর্জন। মানুষ পুলিশকে ভয় পাবে না বরং বন্ধু ভাববে। যে কোনো সমস্যায় পুলিশের সঙ্গে অবলীলায় যোগাযোগ করবে-এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
Leave a Reply