দখিনের খবর ডেস্ক ॥ ২১ ফেব্রুয়ারি মহান ভাষা আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে আয়োজিত প্রভাতফেরিতে পাঁচজনের বেশি সমবেত হতে পারবেন না। সাংগঠনিক পর্যায়ে সর্বোচ্চ পাঁচজন ও ব্যক্তিপর্যায়ে সর্বোচ্চ দুইজন শহীদ মিনারে ফুলেল শ্রদ্ধা জানাতে পারবেন। তবে করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে পুরোপুরি স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। গতকাল রোববার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও অমর একুশে উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক গোলাম রব্বানী সারাবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। অধ্যাপক গোলাম রব্বানী বলেন, ‘শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২০২১ উদযাপন কমিটির বৈঠক সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে বৈঠক হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী করোনাভাইরাস পরিস্থিতি বিবেচনায় যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে পুষ্পস্তবক অর্পণ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে সাংগঠনিক পর্যায়ে পাঁচজন ও ব্যক্তি পর্যায়ে সর্বোচ্চ দুজনের এই সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়েছে।’ এবারে শহীদ মিনারের সকল প্রবেশমুখে হাত ধোয়ার জন্য বেসিন ও লিকুইড সাবান রাখা হবে। হাত স্যানিটাইজ ও মুখে মাস্ক পরিধান ছাড়া কাউকে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। অধ্যাপক গোলাম রব্বানী বলেন, ‘অন্যবারের মতো এবারও যথাযথ ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে দিবসটি উদযাপন করা হবে। তবে করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবকিছু করতে হবে। এই কথা মাথায় রেখে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় আমরা বিভিন্ন ব্যবস্থা নিয়েছি।’ অন্যবারের মতো এবারও একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে উদযাপন কার্যক্রম চলবে। এ ক্ষেত্রে প্রথমে রাষ্ট্রপতি এবং পরে প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, শিক্ষক, ঢাকাস্থ বিভিন্ন দূতাবাসের কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতা, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন এবং সর্বস্তরের জনগণ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে শহিদ মিনার ও আশেপাশের এলাকায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) ও গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন সার্বক্ষডুক নিরাপত্তা কার্যক্রমে নিয়োজিত থাকবে বলে জানিয়েছেন অধ্যাপক গোলাম রব্বানী। গোলাম রব্বানী বলেন, ‘গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও কাজ করবেন। আগের দিন ২০ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত পাস কার্ড ছাড়া প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে।’ দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে শহিদ মিনার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের বিভিন্ন জায়গার শোভা বর্ধন করবে কর্তৃপক্ষ। শহীদ মিনার থেকে আজিমপুর কবরস্থান পর্যন্ত সড়কদ্বীপ সমূহ, ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) ও কার্জন হল সম্মুখস্থ সড়কদ্বীপসমূহ, বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদসহ বিভিন্ন জায়গায় বর্ণমালা-সংবলিত ফেস্টুন দিয়ে সজ্জিত করা হবে। প্রত্যেক বছর অমর একুশে উদযাপনে কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সমন্বয়কারী হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও যুগ্ম-সমন্বয়কারী হিসেবে সমিতির সাধারণ সম্পাদক দায়িত্ব পালন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা প্রক্টর সমন্বয় কমিটিতে সদস্য সচিব হিসেবে থাকেন। কেন্দ্রীয় কমিটির পাশে সহায়ক হিসেবে আরও ১৩টি উপ-কমিটি গঠন করা হয়। এর মধ্যে রয়েছেÑঘোষণা মঞ্চ ব্যবস্থাপনা উপ-কমিটি, সাজ-সজ্জা উপ-কমিটি, জরুরি চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা উপ-কমিটি, বৈদ্যুতিক আলো ব্যবস্থাপনা উপ-কমিটি, পরিবহন উপ-কমিটি, বাজেট উপ-কমিটি, আপ্যায়ন উপ-কমিটি, স্বেচ্ছাসেবক ব্যবস্থাপনা উপ-কমিটি, শৃঙ্খলা উপ-কমিটি, দাপ্তরিক কার্যাবলী ব্যবস্থাপনা উপ-কমিটি, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা উপ-কমিটি এবং একুশের রাতে শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতকরণ উপ-কমিটি। উল্লেখ্য, গত ১৮ জানুয়ারি অমর একুশে উদযাপন উপলক্ষে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পরে ২৪ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
Leave a Reply