স্টাফ রিপোর্টার ॥ বরিশাল সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়নের সাপানিয়া গ্রামের তৃতীয় শ্রেনী পড়ুয়া শিশু কন্যা অথৈ হত্যার জট খুলেছে। অন্যকে ফাঁসানোর জন্যই নিজ হাতে আদরের শিশু কন্যাকে হত্যা করে বাবা বিসিসি’র পানি শাখার পাম্প অপারেটর কাজী গোলাম মোস্তফা। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে গোলাম মোস্তফার মুখ থেকে এমন তথ্যই বেরিয়ে আসে বলে মেট্রোপলিটন কাউনিয়া থানার একটি দায়িত্বশিল সূত্র নিশ্চিত করেছে। যদিও গোপন সূত্রে পাওয়া এমন তথ্যের বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন কাউনিয়া থানার ওসি মো. আনোয়ার হোসেন। তার দাবী স্কুল ছাত্রীর বাবাকে আটক করা হলেও তার কাছ থেকে হত্যার বিষয়ে তেমন কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। তাকে এখনো জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তাছাড়া হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহত শিশু সাবিহা আক্তার অথৈ (০৯) এর মা শিউলী আক্তার রুমা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এদিকে কাউনিয়া থানার দায়িত্বশিল সূত্রটি জানিয়েছে, প্রথম থেকেই কাজী গোলাম মোস্তফার প্রতি সন্দেহ হয়েছিলো। যে কারণে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়। এর পর ধীরে ধীরে হত্যার রহস্য বেরিয়ে আসতে শুরু করে। প্রথম দিকে গোলাম মোস্তফা পুরো বিষয়টি এড়িয়ে গেলেও পরবর্তীতে সে হত্যার দায় স্বীকার করে নেয়। গোলাম মোস্তফা জানিয়েছে, চরবাড়িয়ার সাপানিয়া এলাকার বাসিন্দা রানা শরীফ নামের ব্যক্তির কাছে ৭ লাখ টাকা মূল্যে কিছু পরিমান জমি বিক্রি করে। এজন্য তার কাছ থেকে এক লাখ টাকা অগ্রিমও নেয় মোস্তফা। তাদের চুক্তি অনুযায়ী মঙ্গলবার তাকে দলীল দেয়ার কথা ছিলো। কিন্তা তা দিনে না পারলেও অগ্রিম নেয়া এক লাখ টাকা খরচ করে ফেলে। দলীয় এবং টাকা না দিতে পারার চিন্তায় অসু¯’ হয়ে পড়ে গোলাম মোস্তফা। এজন্য তাকে হাসপাতালে ভর্তিও করা হয়। সূত্রটি আরো জানায়, হাসপাতালে থাকাব¯’াতেই সাপানিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জামান মোস্তাফার কাছে ফোন করে অথৈর ছবি পাঠিয়ে দেয়ার কথা বলে। এর পরই দেনা পরিষোধ না করার জন্য বিকল্প চিন্তা মাথায় আসে মোস্তফার। সে নিজের মেয়েকে হত্যা করে পাওনাদার রানা শরীফকে ফাঁসানোর পরিকল্পনা করে। যেই পরিকল্পনা সেই কাজ। সকালে মেয়েকে স্কুলে নিয়ে যাবার কথা বলে মোটর সাইকেলে ঘর থেকে বের হয়। তাকে স্কুলে না নিয়ে ভাড়ায় চালিত মোটর সাইকেল যোগে নগরীর সদর রোডের সাউথইষ্ট ব্যাংকের পাশে বিসিসি’র পানির পাম্প হাউসের পাশে থাকা রুমে নিয়ে যায়। সেখানেই নিজ হাতে আদরের একমাত্র কন্যা অথৈকে শ্বাস রোধে হত্যা করে পাশন্ড বাবা কাজী গোলাম মোস্তফা। শুধু তাই নয়, হত্যার পরে সিএনজি ভাড়া করে অথৈ’র লাশকে একটি বোরকা পড়িয়ে নিজ এলাকায় নিয়ে লেবু বাগানের মধ্যে ফেলে রেখে আসে। এমনকি সেই সিএনজি নিয়েই গোলাম মোস্তফা তার নিজ বাড়িতে যায়। যা ¯’ানীয় কয়েকজ ব্যক্তির চোখে পড়ে। পরে অবশ্য ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রভাবিত করতে মোস্তফা তার স্ত্রীকে ফোন করে মেয়েকে খোঁজার জন্য বলেছিলো বলে সূত্রটি জানিয়েছে।
Leave a Reply