নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ পটুয়াখালীর দুমকিতে অতিদরিদ্রদের কর্মসংস্থানের জন্য ৪০ দিনের কর্মসূচিতে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এসব কর্মসূচির প্রকল্প তালিকায় দরিদ্র ব্যক্তিদের নাম থাকলেও বাস্তবে কাজ করানো হচ্ছে বাইরের শ্রমিক দ্বারা। এতে প্রকল্পের বরাদ্দের বড় একটি অংশের ভাগ দিতে হয় প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রকল্প বাস্তবায়ন দপ্তরকে। এমন ঘটনায় জনৈক ইউপি সদস্য উপজেলা প্রশাসনকে লিখিত অভিযোগ করলেও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। জানা যায়, উপজেলার পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. আল আমিন খান ৪০ দিনের কর্মসূচিতে অনিয়মের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগে বলা হয়, উপজেলার পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নে ৪০ দিনের কর্মসূচিতে প্রকল্প তালিকার শ্রমিক দ্বারা কাজ না করিয়ে কন্ট্রাক্ট শ্রমিক দ্বারা কাজ করাচ্ছেন; যা প্রকল্পের নিয়মবহির্ভূত কাজ। তাই প্রকল্পের চলমান কাজ দ্রুত বন্ধ করে এলাকার গরিব অসহায় মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেয়ার অনুরোধ জানান তিনি। সরেজমিন দেখা যায়, ৪০ দিনের কর্মসূচির আওতায় ২ লাখ ৮ হাজার টাকা বরাদ্দে দক্ষিণ পাঙ্গাশিয়ায় নুরুল হক বিশ্বাসের বাড়ি হতে রাজ্জাক জোমাদ্দারের বাড়ি পর্যন্ত ১৭শ’ ফুট রাস্তার মাটির কাজ করানো হয়েছে। পাঙ্গাশিয়ায় ইউপির সংরক্ষিত ইউপি সদস্য রাশিদা বেগম সিপিসি (প্রকল্প সভাপতি) কাজটি সম্পন্ন করেছেন। নিয়মানুযায়ী প্রকল্প তালিকার বাছাইকৃত শ্রমিকদের প্রত্যেকে দৈনিক ২শ’ টাকা মজুরিতে আট হাজার টাকা পাওয়ার কথা। ৪০ দিনের কাজের স্থলে বাইরের শ্রমিক দিয়ে মাত্র ৫ দিনেই কাজ সম্পন্ন হয়েছে। প্রকল্পের তালিকাভুক্ত শ্রমিক মোতালেব হাওলাদার, নিজাম উদ্দিন মৃধা, শেফালী বেগমের অভিযোগ করেন, তালিকায় নাম আছে কিনা তা তারা জানেন না। তারা কোনোদিন কাজও করেননি এবং কোনো টাকাও পাননি! পাঙ্গাশিয়ায় ইউনিয়নে এমন আরো ২টি প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে সেখানেও একই অবস্থা। সিপিসি সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য রাশিদা বেগম বলেন, আমি অল্প একটু কাজ পাইছি। তবে ২শ’ টাকা হাজিরায় কেউ কাজ করতে চায় না। তাই অন্য লেবার দিয়ে করাতে হয়। টাকার বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, বাবা এই টাকার ভাগ সবাইকে দিতে হয়। কাকে কাকে দিতে হয় এমন প্রশ্নে বলেন, পিআইও অফিস টাকা কেটে রাখে এবং ওখান থেকে ইউএনও অফিসসহ সবখানেই যায়। সবমিলিয়ে আমার অল্পকিছু থাকে। টাকা কেটে নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রাজিব বিশ্বাস বলেন, আপনার কাছেই শুনলাম তবে বিষয়টি আমি গিয়ে দেখব। উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে ৪০ দিনের কর্মসূচির কতটি প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে তার তথ্য চাইলে তিনি বলেন, চাইলেই আপনাকে তথ্য দেয়া যাবে না; আমার স্যারের সঙ্গে বুঝতে হবে। যোগাযোগ করা হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ আব্দুল্লাহ সাদীদ বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে কাজ পরিদর্শন করে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে।
Leave a Reply