বিনোদন ডেস্ক ॥ ‘মেকআপ’ চলচ্চিত্রটিকে প্রদর্শনের অযোগ্য ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান সেন্সর বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান মো. জসীম উদ্দিন। ছবিটির ১৫টি দৃশ্যের সংলাপে আপত্তি জানিয়ে আটকে দেয় সেন্সর বোর্ড। সিনেমা হলে মুক্তি দেওয়ার জন্য জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে ‘মেকআপ’ ছবিটি সেন্সর বোর্ডে জমা দেন নির্মাতা অনন্য মামুন। জমা দেওয়ার পর ছবিটি দেখেন জুরিবোর্ডের সদস্যরা। তাঁরা সম্মিলিত সিদ্ধান্তে জানিয়েছেন, ছবিটিতে দেশের মিডিয়াকে ছোট করে উপস্থাপনা করা হয়েছে। ছবিটি দেখে অনেকেই চলচ্চিত্রের মানুষদের ছোট করে দেখবেন। অনেকে পেশা হিসেবে এটাকে অসম্মানের চোখে দেখবেন। সে জন্য তাঁরা প্রায় ১৫টি দৃশ্যে সংলাপ ও গল্প নিয়ে আপত্তি জানান। পরে সেন্সর বোর্ড ছবিটি পর্যবেক্ষণে রাখে। সেন্সর বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান মো. জসীম উদ্দিন বলেন, ‘আমরা সেন্সর বোর্ডের নীতিমালা অনুযায়ী কাজ করি। সব সময় চেষ্টা থাকে, একটি ছবি সেন্সরে পাস হয়ে হলে মুক্তি পাক। মুক্তির উদ্দেশ্যে ‘মেকআপ’ ছবিটি সেন্সরে জমা দিয়েছিলেন নির্মাতা। এটি দেখে বোর্ডের কাছে মনে হয়েছিল, এখানে সেন্সর নীতিমালার পরিপন্থী কিছু বিষয় আছে। যে কারণে আমরা ছবিটি পর্যবেক্ষণে রেখেছিলাম। সম্প্রতি সিদ্ধান্ত হয়েছে, ছবিটি অপ্রদর্শনযোগ্য। এটা হলে মুক্তি পাবে না।’ একজন সুপারস্টারের জীবন নিয়ে ছবির গল্প। সুপারস্টার চরিত্রে অভিনয় করেছেন তারিক আনাম খান। ছবিতে তাঁর নাম শাহবাজ খান। ২০১৯ সালে সুনামগঞ্জ, মানিকগঞ্জ ও ঢাকার বেশ কিছু স্থানে ছবিটির শুটিং হয়। ছবিটির গল্পে তুলে ধরা হয়েছে মিডিয়ার অন্তরালের মানুষের গল্প। যার উপস্থাপন সেন্সর বোর্ডের ভাষায় ‘আপত্তিজনক’। কিন্তু নির্মাতা অনন্য মামুন জানালেন, এই ছবিতে আপত্তিজনক বা কাউকে ছোট করা হয়নি। এখানে একজন সুপারস্টারের জীবনের গল্প দেখানো হয়েছে, যা কোনো বাস্তব গল্প নয়। এটাকে অন্যভাবে দেখার সুযোগ নেই। তিনি বলেন, ‘এখানে আমি কারও পক্ষ–বিপক্ষ নিয়ে কিছু দেখানোর চেষ্টা করিনি। আমি নিজেও একজন পরিচালক। অন্য চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক, শিল্পীদের ব্যক্তিগত কিছু বিষয় গল্পের স্বার্থে তুলে ধরা হয়েছে, যেখানে কাউকে অসম্মান করা হয়নি। এভাবে একটা সিনেমাকে আটকে দেওয়া ঠিক নয়। একটা ছবিকে এভাবে আটকে দেওয়াটা চলচ্চিত্রশিল্পের ওপর আঘাত। এভাবে ভালো ছবি হবে না। এভাবে কোনো শিল্প হয় না।’ অনন্য মামুন জানান, তিনি সেন্সর বোর্ড থেকে চিঠি পেয়েছেন। তিনি আবারও চিন্তা করছেন, কিছু দৃশ্যের সংযোজন–বিয়োজন ঘটিয়ে ছবিটি সেন্সরে জমা দেবেন। তিনি মনে করেন, এভাবে সেন্সর বোর্ড ছবিকে নিষিদ্ধ করে দিলে তরুণ নির্মাতারা ছবি বানাতে উৎসাহিত হবেন না। বরং সেন্সর বোর্ডের মতাদর্শে ছবি বানাতে হবে, যার বেশির ভাগ ছবিই হলে চলে না। তিনি আশাবাদী, পুনরায় তাঁর ছবিকে সেন্সর দেওয়া হবে। এদিকে ছবিটি দেখে ক্ষুব্ধ সেন্সর বোর্ডের বেশ কয়েকজন সদস্য। তাঁদের ভাষ্য, ছবিটিতে চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে নেতিবাচক কিছু বিষয় দেখানো হয়েছে, যা দেখে এই ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে মানুষের মধ্যে ভুল ধারণার সৃষ্টি হতে পারে। সম্প্রতি অনন্য মামুনকে চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। এর আগে ‘নবাব এলএলবি’ ছবিতে ‘অশ্লীল’ ও ‘কুরুচিপূর্ণ’ শব্দ ব্যবহারের জন্য জেল যেতে হয়েছিল অনন্য মামুনকে। এখন তিনি জামিনে আছেন।
Leave a Reply