নোমান সিকদার, চরফ্যাসন ॥ ভোলার চরফ্যাসনে মুরগী চুরির অপবাদে গ্রাম্যসালিশে কিশোর নির্যাতনের ঘটনায় তোলপাড় চলছে। এই ঘটনায় এক সপ্তাহের মধ্যে অনুসন্ধান প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সোমবার হাইকোর্টের স্বপ্রণোদিত নির্দেশের পর পুলিশ-প্রশাসনের কর্মকর্তারাও নড়েচড়ে বসেছেন। ঘটনার ৭৮দিন পর নির্যাতনের শিকার কিশোর রুবেলকে উদ্ধার করে গতকাল মঙ্গলবার চরফ্যাসন হাসপাতালে চিকিৎসা দিয়েছে পুলিশ। অর্থাভাবে চিকিৎসা বঞ্চিত রুবেলের চিকিৎসার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রুহুল আমিন ব্যক্তিগত উদ্যোগে রুবেলের মা বিলকিছ বেগমের হাতে ১০ হাজার টাকার অর্থসহায়তা তুলে দিয়েছেন। আসামীদের অব্যহত হুমকীর মুখে গ্রামজুড়ে পুলিশী তৎপরতা বৃদ্ধির মাধ্যমে মামলার বাদিনীর পরিবারের নিরাপত্তার নিশ্চিত করা হয়েছে। নির্যাতনের মূলহোতারা গা-ঢাকা দিলেও সোমবার রাতে মামলার ৪নং আসামী বাবুল মাঝি (৪৫)কে হাজারীগঞ্জের বাশিরদোন এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শশীভূষণ থানার ওসি মানিরুল ইসলাম ও চরফ্যাসন উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের টিএইচও ডা. শোভন বাসাক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। শশীভূষণ থানার অফিসার ইন চার্জ (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম জানান, সোমবার রাত সাড়ে ৮টায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে হাজারীগঞ্জের বাশিরদোন এলাকার সরকারি রাস্তার উপর থেকে কিশোর রুবেল নির্যাতন মামলার ৪ নং আসামী বাবুল মাঝিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ৫ দিনের রিমান্ড আবেদনসহ আসামী বাবুল মাঝিকে চরফ্যাসন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হলে বিজ্ঞ আদালত ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গতকাল মঙ্গলবারই আসামী বাবুল মাঝিকে শশীভূষণ থানা পুলিশের হেফাজতে নেয়া হয়েছে। ওসি আরো জানান, নির্যাতনের মূল হোতাদের গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান অব্যহত আছে। মূল আসামী গ্রেফতার না হওয়ায় বাদিনী রুবেলের মা বিলকিস বেগম ও তার পরিবারের নিরাপত্তার জন্য গ্রামজুড়ে পুলিশী নজরধারী বৃদ্ধি করা হয়েছে। এদিকে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রুহুল আমিনের কার্যালয়ে রুবেলের মা বিলকিছ বেগমকে ১০ হাজার টাকার অর্থসহায়তা প্রদান করা হয়েছে। নির্যাতিত কিশোর রুবেলের চিকিৎসার জন্য ব্যক্তিগত উদ্যোগে এই অর্থসহায়তা প্রদানের কথা জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রুহুল আমিন। চরফ্যাসন উপজেলা স্বাস্থ্যকপ্লেক্সের টিএইচও ডা. শোভন বসাক জানান, গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টায় শশীভূষণ থানা পুলিশ নির্যাতিত কিশোর রুবেলকে চিকিৎসার জন্য চরফ্যাসন হাসপাতালে নিয়ে আসেন। রুবেলের শরীরে নির্যাতনের ফলে সামান্য ব্যথা থাকলেও বর্তমানে তাকে হাসপাতালে ভর্তির মতো জটিলতা নেই। ফলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রুবেলকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
Leave a Reply