দখিনের খবর ডেস্ক ॥ আওয়ামী লীগকে বাঁচাতে মাফ চেয়ে দেশের জনগণের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে দলটির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শুক্রবার রাজধানীর গুলিস্তানে মহানগর নাট্যমঞ্চের মিলনায়তনে কৃষক দলের জাতীয় সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান। সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন মহানগর নাট্যমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয়। বিকালে দ্বিতীয় অধিবেশন গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হবে। জাতীয় সম্মেলনে উপলক্ষে মহানগর নাট্যমঞ্চের মিলনায়তন ফুল, বেলুন, ফেস্টুন ও ব্যানার দিয়ে সাজানো হয়েছে। সম্মেলনে আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগকে যদি বাঁচাতে চান তাহলে মাফ চেয়ে দেশের জনগণের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের ব্যবস্থা করুন। পদত্যাগ করুন, নতুন নির্বাচন দিন, যোগ্য ব্যক্তি দিয়ে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করুন, নতুন সরকার আসুক। তিনি বলেন, এই যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। ওবায়দুল কাদের সাহেব। তিনি খুব সুন্দর সুন্দর কথা বলেন। চমৎকার আসনে বসে তিনি বিএনপির বিরুদ্ধে বিষোদগার করতে থাকেন। প্রতিদিন তিনি বিএনপিকে ছবক ও শিক্ষা দেন। আরে আগে আপনি নিজের ঘরে শিক্ষা দেন। আপনার ভাই কাদের মির্জা আপনার সম্পর্কে যে সমস্ত কথা বলেন এবং আপনাদের দলের লোকদের নিয়ে বলেন- সেগুলো শোনার পর আপনাদের থাকার কথা নয়, পদত্যাগ করা উচিত আপনাদের। আপনারা নিজেদের ঘরে মারামারি করে দু’জনকে হত্যা করেছেন। কোন বিচার নাই! বিএনপি চেয়ারপারসন প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে সাজা দিয়ে আটক করে রাখা হয়েছে। তিনি অসুস্থ। বলা হয়েছে, সাজা স্থগিত। কোথায় সাজা স্থগিত? তিনি চিকিৎসার জন্য বাইরে যেতে চেয়েছেন, তা দেয়া হয়নি। দেশে রেখে তার চিকিৎসা করা কঠিন হচ্ছে। তাই আমরা অবিলম্বে খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই। নিঃশর্তভাবে মুক্তি দিতে হবে। কৃষক দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আগে তো এই স্লোগান দেন নাই। আপনারা রাজনৈতিকভাবে তৈরি হন। আর স্লোগান হবে, খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই, সকল রাজবন্দিদের মুক্তি চাই, তারেক রহমানকে দেশে ফিরে আনতে হবে, রাষ্ট্র পরিচালনায় ব্যর্থ লুটেরা আওয়ামী লীগ সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে, যোগ্য ব্যক্তিদের দিয়ে ইসি গঠন করে একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্যে জনগণের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য তিনি আরও বলেন, যারা জেলা ও উপজেলা থাকেন, তারা আমার চেয়ে ভালো বলতে পারবেন। জেলা ও উপজেলায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাদের চেহারা বদলে গেছে না? সব সময় চক চক করে। তারা এখন গাড়িতে চড়ে বেড়ায়। তাদের এই পরিবর্তন হয়েছে ৫ বছরের মধ্যে। শুরুতেই জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করে সম্মেলন উদ্বোধন করেন মির্জা ফখরুল। পরে শোক প্রস্তাব পাঠ করা হয়। এরপর স্বাগত বক্তব্যে রাখেন সংগঠনটি আহ্বান শামসুজ্জামান দুদু এবং সাংগঠনিক প্রতিবেদন পেশ করেন সদস্য সচিব কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন। টানা ২২ বছর পর নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করতে জাতীয় সম্মেলন করছে জাতীয়তাবাদী কৃষক দল। এটা সংগঠনটির চতুর্থ জাতীয় সম্মেলন। সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছিল ১৯৯৮ সালের ১৬ মে। কৃষক দলের জাতীয় সম্মেলনে মোট কাউন্সিলরের সংখ্যা ৫৪৮জন। এর মধ্যে ৭৯ সাংগঠনিক জেলা কমিটির প্রতি জেলা থেকে ৫ জন করে মোট ৩৯৫ জন এবং কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির ১৫৩ জন সদস্য কাউন্সিলর উপস্থিত ছিলেন। গত বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনকে সামনে রেখে শামসুজ্জামান দুদুর নেতৃত্বে ১৫৩ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। কৃষক দলের আহ্বায়ক শামসুজ্জামান দুদুর সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেল হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, এমরান সালেহ প্রিন্স, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply