বাউফল প্রতিনিধি ॥ বাউফলের তেটুুলিয়া নদীর তলদেশ দিয়ে (মেরিন সাব কেবল) লাইন টেনে বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত করা হবে মূল ভূখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন চন্দ্রদ্বিপ ইউনিয়েনের বসতিগুলো। মুজিব জন্ম শতবর্ষ উপলক্ষে আগামী ১৭ মার্চ ওই ইউনিয়নের আড়াই হাজার পরিবার একযোগে বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত হবে। ইতি মধ্যে ১০৫ কিলোমিটার খাম্বা স্থাপন করা হয়েছে। ওই খাম্বাগুলোতে তার টানার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আর এই স্বপ্ন বাস্তায়ন করতে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের কর্মীরা। চন্দ্রদ্বিপ ইউনিয়নের অবস্থান হচ্ছে তেটুুলিয়া নদীর বধ্যবর্তী স্থানে। একসময় ইউনিয়নটি নাজিরপুর ইউনিয়নের অন্তঃভূক্ত ছিল। ১৯১৩ সালে আলাদা একটি ইউনিয়ন হিসাবে বাউফলের মানচিত্রে স্থান করে নেয়। জাতীয় সংসদের সাবেক চীফ হুইপ আসম ফিরোজ এমপির প্রচেষ্টায় বিচ্ছিন্ন কয়েকটি চর নিয়ে চন্দ্রদ্বিপ ইউনিয়ন হিসাবে স্বীকৃতি পায়। এই ইউনিয়নটির নাম করণ করেন এমপি নিজেই। এরপর সরকারের ধারবাহিক উন্নয়নে ফলে ওই ইউনিয়নের চেহারা বদলে যেতে থাকে। যেখানে এক সময় পায়ে হেঁটে যাতায়ত করা কষ্ট কর হতো। সেখানে এখন পাকা রাস্তায় গাড়িতে চড়ে ওই ইউনিয়নের মানুষ এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে যাতায়ত করছেন। শিক্ষা বঞ্চিত শিশু কিশোরদের একাধিক প্রাইমারী ও হাইস্কুল ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবল থেকে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য সাইক্লোন সেল্টার নির্মিত হয়। একসময় এই ইউনিয়নের অধিকাংশ মানুষই তেটুুলিয়া নদীতে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করতো। বর্তমানে অনেকেই জীবিকা পরিবর্তন করেছেন। পাকা রাস্তায় বেটারি চালিত অটো গাড়ি, ইঞ্জিল চালিত টেম্পু, টমটমসহ ভাড়ায় মটর সাইকেল চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন। মূল ভূখন্ড থেকে এখন বিচ্ছিন্ন সেই ইউনিয়নের আড়াই হাজারে পরিবার বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত হবে। বাউফল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি সূত্রে জানা গেছে, নাজিরপুর ইউনিয়নের নিমদি লঞ্চ ঘাট এলাকায় মূল ভূখন্ড থেকে তেটুুলিয়া নদীর তলদেশ দিয়ে (মেরিন সাব কেবল) লাইন টেনে চন্দ্রদ্বিপ ইউনিয়নে বিদ্যুৎ নেয়া হবে। এ জন্য প্রতিকিলোমিটারে ২১ লাখ টাকা করে ১০৫ কিলোমিটারে সরকারে ব্যয়ে হবে ২২ কোটি ৫ লাখ টাকা। খাম্বা স্থাপন ও লাইন টানার কাজ প্রায় শেষের পথে। এখন মেরিন সাব কেবল স্থাপনের কাজ বাকি রয়েছে। ১৭ মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবর্ষের দিন ওই ইউনিয়ন বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত হবে। চন্দ্রদ্বিপ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এনামুল হক আলকাস মোল্লা বলেন,‘চন্দ্রদ্বিপ ইউনিয়নের প্রতিটি বসতি আলোকিত ভাবতেই আনন্দ লাগছে। একসময় চন্দ্রদ্বিপের মানুষ দূর থেকে শহরের বিদ্যুতের আলো জ্বলতে দেখতো। এখন নিজেদের ঘরে বিদ্যুতের আলো জ্বলবে। চন্দ্রদ্বিপ ইউনিয়নের সকল মানুষ খুশিতে দিশেহারা। এ জন্য তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
Leave a Reply