দখিনের খবর ডেস্ক ॥ ‘ভাই বড় ধন রক্তের বাঁধন, যদিও পৃথক হয় নারীর কারণ’- সামাজিক যোগযোগমাধ্যম ফেসবুকে এই লাইন দুটো এখন ভাইরাল। হবেই বা না কেন, কারণ, পোস্টটি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই এবং নোয়াখালীর কোম্পানিগঞ্জ উপজেলার বহসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। ওই পোস্টে কাদের মির্জা দুটি ছবি সংযুক্ত করেছেন। এর একটিতে দেখা যাচ্ছে তিনিসহ তারা চার ভাই- ওবায়দুল কাদের, ফজলুল কাদের ওরফে মিন্টু এবং ছোট ভাই শাহদাত হোসেন পাশাপাশি দাঁড়িয়ে আছেন। ওবায়দুল কাদের ও মির্জা কাদেরের পেছনে দাঁড়িয়ে ফজলুল কাদেরের ছেলে ফজলুল করিম ওরফে তমাল। অপরটিতে এক ভাই অন্য ভাইকে জড়িয়ে ধরছেন। পোস্টের ক্যাপশনে লেখা ছিল- ‘ভাই বড় ধন রক্তের বাঁধন যদিও পৃথক হয় নারীর কারণ। আবদুল কাদের মির্জা, মেয়র, বসুরহাট পৌরসভা।’ কেন, কি কারণে তিনি এই পোস্ট দিয়েছেন, তা জানা যায়নি। এমনকি পোস্টে নারীর প্রসঙ্গ টানলেও, এ দিয়ে তিনি কী বুঝিয়েছেন- তাও বোঝা যাচ্ছে না। তবে, স্থানীয়রা মনে করছে- কাদের মির্জা তার ভাবি অর্থাৎ ওবায়দুল কাদেরের স্ত্রী নিয়ে সমালোচনা করতে গিয়ে এ পোস্টটি দিয়েছেন। মূলত এই পোস্টটি দেওয়া হয় গতকাল শনিবার বিকেল বিকেল চারটার দিকে। নিজের ভ্যারিফায়েড ফেসবুক আইডতেই পোস্টটি করেন মির্জা। হু হু করে পোস্টে লাইক-কমেন্ট পড়তে থাকে। নানা ধরনের মন্তব্য আসতে শুরু করলে পোস্টটি সরিয়ে ফেলা হয়। পরে রাত ৮টার দিকে পোস্টটি আবার পোস্ট করা হয় কাদের মির্জার ফেসবুক থেকে। এখন পর্যন্ত পোস্টটিতে লাইকসহ বিভিন্ন রি-অ্যাকশন পড়েছে প্রায় ৯ হাজার। কমেন্ট পড়েছে এক হাজারের বেশি। শেয়ার হয়েছে ৫০০ বার। সাব্বির পাটোয়ারি নামে একজন কমেন্ট করেছেন, ‘খুব শীঘ্রই এই একই ফ্রেমে আবারও দেখা যাবে নোয়াখালীর গর্বিত পরিবারের এই চার ভাইকে।’ তানভির আহমেদ শাকিন লিখেছেন, ‘দুইটা লাশের পরনি এই কথা।’ নাভিব চৌধুরী লিখেছেন, ‘অভিনয়ের জন্য অস্কার পাবেন আপনি! গ্রেপ্তারের ভয়ে এখন ওবায়দুল কাদের আপনার ভাই।’ নুর হাসান পলি নামে একজন লিখেছেন, ‘সব ঠিক হয়ে যাবে লিডার। বসুরহাট পৌরসভার নির্বাচনের সময় থেকেই বেশ সরব হয়েছে মির্জা কাদের। বেশিরভাগ সময় নিজের ভাইর বিরুদ্ধে গিয়ে কথা বলছেন। আবার কখনও ভাই ওবায়দুল কাদেরের গুনগান করছেন। ভাইয়ে ভাইয়ে এমন সম্পর্কের ব্যাপারে জনগণে আগ্রহ থাকলেও বিষয়টি নিয়ে বেশি কথা বলছেন না সেতুমন্ত্রী। এদিকে, বসুরহাটে আওয়ামী লীগের বিবদমান দুটি গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে নিহত ও মারধরের ঘটনায় মেয়র আবদুল কাদের মির্জার বিরুদ্ধে থানায় দায়ের করা দুটি এজাহার এখনও রেকর্ডভুক্ত হয়নি। ফলে শ্রমিক আলা উদ্দিন হত্যা এবং মুক্তিযোদ্ধাকে মারধরের ঘটনায় কাদের মির্জাকে প্রধান আসামি করা এজাহার দুটি দায়ের করতে আজ রোববার সকালে নোয়াখালীর আদালতে যাচ্ছেন ভুক্তভোগী দুই বাদী। গত ৮ মার্চ বিকেলে বসুরহাট রূপালী চত্বরে উপজেলা আওয়ামী লীগের নতুন অফিস উদ্বোধন করতে গেলে মেয়র আবদুল কাদের মির্জার নেতৃত্বে তার অনুসারীরা মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খানকে মারধর করেন। অপরদিকে ৯ মার্চ রাতে আওয়ামী লীগের বিবদমান দুই গ্রুপের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে আলাউদ্দিন নামে একজন নিহত হন।
Leave a Reply