দখিনের খবর ডেস্ক ॥ দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে থাকায় এখন কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি না মানলে সামনে বড় বিপদের ‘শঙ্কা’ দেখছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক এবিএম খুরশীদ আলম। গতকাল রোববার ঢাকার শ্যামলীর টিবি হাসপাতালে ওয়ান স্টপ টিবি সেন্টারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ বলেন। তিনি বলেছেন, ‘এখন যারা আক্রান্ত হচ্ছেন, তাদের বেশিরভাগই তরুণ, আক্রান্তদের অনেককেই আইসিইউতে ভর্তি করা লাগছে।’ অধ্যাপক এবিএম খুরশীদ আলম বলেন, ‘গত দুই মাসে আমার কাছে কখনোই আইসিইউ বেডের জন্য কোনো অনুরোধ আসে নাই। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে ফোন পাচ্ছি আইসিইউ বেড পাওয়া যাচ্ছে না, দেন। আগে আমরা দেখছিলাম যাদের কোমর্বিডিটি আছে তাদের আইসিইউ লাগত। এখন ইয়াং, ভালো, সুস্থ, তারাও আক্রান্ত হচ্ছেন।’ সবাইকে সতর্ক করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ‘গেল দুই মাস আমরা স্বস্তিতে ছিলাম, তাই এখন আমরা কোনো কিছু মানছি না। সামনের দিকে আমরা আরও বড় বিপদে পড়তে যাচ্ছি যদি আমরা স্বাস্থ্যবিধি না মানি।’ দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমতে থাকায় গত ১৯ জানুয়ারি দৈনিক শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নিচে নেমে এসেছিল, এক পর্যায়ে তা ৩ শতাংশেরও নিচে নেমে আসে। এর মধ্যে সারা দেশে করোনা ভাইরাসের টিকাদানও শুরু হয়। কিন্তু মার্চের শুরু থেকে সংক্রমণ বাড়তে থাকায় শনাক্তের হারও বাড়তে থাকে। ৯ মার্চ তা আবার ৫ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়। শুক্র ও শনিবার দৈনিক শনাক্তের হার ছিল ৬ শতাংশের বেশি, রোববার তা বেড়ে ৭ দশমিক ১৫ শতাংশ হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, নতুন করে সংক্রমণ বৃদ্ধির ধারায় গত এক সপ্তাহে দেশে নতুন রোগী শনাক্তের সংখ্যা বেড়েছে ৬৭ দশমিক ২৭ শতাংশ; আর মৃত্যু বেড়েছে ৪৯ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ। মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশে মোট ৫ লাখ ৫৭ হাজার ৩৯৫ জন কোভিড রোগী শনাক্ত হয়েছে, মৃত্যু হয়েছে ৮ হাজার ৫৪৫ জনের। সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় ইতোমধ্যে দেশের সব হাসপাতালকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে জানিয়ে ডা. খুরশীদ আলম বলেন, ‘ইতোমধ্যে সিভিল সার্জন অফিসগুলোতে চিঠি পাঠানো হয়েছে, সারা দেশে আইসিইউগুলো প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে।’ ‘সমস্ত দেশে ডিভিশনাল হাসপাতাল এবং ঢাকায় যতগুলো হাসপাতাল আছে, সেগুলোর পরিচালকদের সঙ্গে বসেছিলাম, তাদের সুবিধা-অসুবিধা কার কী অবস্থা আমরা সেগুলো শুনেছি। সেভাবেই আমরা ব্যবস্থা করছি। তাদের বলেছি যে কয়টা বেড আছে, আপনারা রেডি রাখেন। বি রেডি ফর ম্যানেজমেন্ট ফর দ্য কোভিড পেশেন্টস’, বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির পরিচালক অধ্যাপক ডা. সামিউল ইসলাম, আইসিডিডিআর, বির শর্ট স্টে ইউনিটের প্রধান ডাক্তার আজহারুল ইসলাম খান, শ্যামলী টিবি হাসপাতালের উপ-পরিচালক মো. আবু রায়হান প্রমুখ।
Leave a Reply