আমতলী প্রতিনিধি ॥ আমতলীর সেই দূর্ণীতিবাজ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ শহীদুল ইসলাম মৃধাই পেলেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন। সোমবার আমতলী প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন মোঃ আসাদুজ্জামান মিন্টু মল্লিক। সংবাদ সম্মেলনে তিনি দূর্নীতিবাদ চেয়ারম্যান মোঃ শহীদুল ইসলাম মৃধার মনোনয়ন বাতিল করে তদন্ত সাপেক্ষে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে তাকে মনোনয়ন দেয়ার দাবী জানান। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ২০০৯ সালে আমার ভাই মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন ফারুক মল্লিক ব্রেন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। আমার ভাইয়ের মৃত্যুর মোঃ শহীদুল ইসলাম মৃধা ভোট চুরি করে হলদিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। চেয়ারম্যান হওয়ার পরেই তিনি গড়ে তোলেন দূর্ণীতির স্বর্গ রাজ্য। ইউনিয়ন পরিষদের ভিজিএফ, ভিজিডি চাল ও ৪০ দিনের কর্মসূচীর কাজ না করে সমুদয় টাকা আত্মসাৎ করেন। শুধু ভিজিডির চাল চুরি করেই খ্যান্ত হয়নি তিনি। প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের প্রাদূর্ভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হতদরিদ্র মানুষের জন্য চাল বরাদ্দ দেন। ওই চাল তিনি দরিদ্রদের না দিয়ে আত্মসাৎ করেন। ওই চাল চুরির ঘটনা ধরা পরে স্থানীয় জনতার হাতে। এ নিয়ে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে খবর প্রকাশিত হয়। পরে আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল আদালতের বিচারক মোঃ সাকিব হোসেন তার বিরুদ্ধে স্বপ্রনোদিত হয়ে মামলা দায়ের করেন। তিনি আরো বলেন, চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম মৃধা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে একটি কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। ওই কলেজের নামে তিনি উপজেলা প্রকৌশলী অফিস থেকে ১০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ নেন। ওই কাজ না করে সমুদয় টাকা আত্মসাৎ করেছেন। শুধু এতোটুকুই নয় ২০০৫ সালে শহীদুল ইসলাম মৃধার আমতলী পৌরসভায় শ^শুর বাড়ীর এক খন্ড জমি ছাড়া আর কিছুই ছিল না। ২০০৬ সালের পরে তিনি আলাদিনের চেরাগ পেয়ে রাতারাতি কোটি পতি বনে যান। ওই বছর তিনি আমতলী উপজেলা প্রকৌশলী অফিস থেকে ৮টি আয়রন ব্রীজের নামে অন্তত ৬ কোটি টাকা বরাদ্দ নেন। কাগজে-কলমে কাজ দেখিয়ে ওই ব্রীজগুলো না করে সকল টাকা আত্মসাৎ করেন। এ নিয়ে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। যা সারা দেশের জন্য টক অর দ্যা টাউনে পরিনত হয়েছে। শুন্য হাতের শহীদুল ইসলাম মৃধার বর্তমানে রয়েছে আমতলী উপজেলা শহরে দ্বি-তল ভবনের একটি আলিশান বাড়ী, ঢাকায় মেয়ে এবং ছেলের নামে দুটি ফ্লাট রয়েছে। শহীদুল ইসলাম মৃধার অভিযোগের অন্ত নেই। যার দুর্নীতির চিত্র আমতলী উপজেলাবাসীসহ গোটা দেশের মানুষ অবগত। সোমবার প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ সকল অভিযোগ করেন মিন্টু মল্লিক। তিনি আরো বলেন, আমতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন ফারুক মল্লিক আমার বড় ভাই। আমার অপর বড় ভাই আল মামুন লিটন মল্লিক কেন্দ্রিয় সেচ্ছাসেবক লীগ সদস্য। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় আমার ভাই মামুন গুরুতর আহত হন। তিনি এখনো তার শরীরে ৩৬০ টি স্প্রিন্ডার নিয়ে বেঁচে আছেন। আমি একজন আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান হয়েও দলীয় মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত হয়েছি। আমাকে উপেক্ষা করে একজন চিহিৃত দুর্নীতিবাজ মোঃ শহীদুল ইসলাম মৃধা প্রভাবশালী এক নেতাকে অর্থের বিনিময়ে মনোনয়ন এনেছেন। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে তার (শহীদুল ইসলাম) মনোনয়ন বাতিল করে তদন্ত সাপেক্ষে তাকে মনোনয়ন দেয়ার দাবী জানান তিনি। এ সময় উপস্থিতি ছিলেন আমতলী পৌর যুবলীগ সভাপতি জেলা পরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট মোঃ আরিফ-উল- হাসান আরিফ, এলাহী মোল্লা, শাহীন হাওলাদার ও আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ অর্ধ-শতাধিক সমর্থক। এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ শহীদুল ইসলাম মৃধা বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ মিথ্যা। মনোনয়ন না পেয়ে আমাকে রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতে এ অভিযোগ আনা হয়েছে।
Leave a Reply