দখিনের খবর ডেস্ক ॥ চৈত্র আসতেই তেতে উঠছে প্রকৃতি। প্রতিদিনই বাড়ছে তাপমাত্রা। খরতাপে পুড়তে শুরু করেছে গ্রামীণ জনপথের মাঠঘাট। ঋতুরাজ বসন্তের দ্বিতীয় মাসের শুরুতেই বসন্তের আমেজ বিদায় নিচ্ছে। পঞ্জিকার পাতায় গ্রীষ্ম আগমনের বাকি প্রায় এক মাস। কিন্তু আগেভাগেই বিস্তার করেছে গ্রীষ্মের আমেজ। স্বাভাবিক বৃষ্টির দেখা নেই। গেল ফেব্রুয়ারি মাসে সারা দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে গড়ে ৯৯ ভাগ এবং জানুয়ারি মাসে ৯৭ ভাগ কম বৃষ্টিপাত হয়েছে, মানে বৃষ্টিই হয়নি বলা চলে। রুক্ষ-শুষ্ক আবহাওয়ায় নদনদী, খাল-বিল, হাওর-বাঁওড় শুকিয়ে প্রায় তলানিতে ঠেকেছে। সেই সঙ্গে ফল-ফসল চাষাবাদে পানির অভাব দেখা দিয়েছে। আবার বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকটও বাড়ছে শহর, গ্রাম-জনপথে। আবহাওয়া দপ্তর বলছে, তাপমাত্রা যেভাবে চড়ছে তাতে এই মার্চ মাসের শেষের দিকে তাপপ্রবাহের সম্ভাবনা রয়েছে। গত কয়েক দিন যাবৎ দেশের বিভিন্ন স্থানে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে থাকছে। যশোরে প্রায় ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠেছে তাপমাত্রা। রাজধানীর তাপমাত্রাও ৩৫ ডিগ্রির বেশিতে পৌঁছে গেছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষজ্ঞ আবহাওয়াবিদ শামছুদ্দীন আহমেদ বলেন, তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে মৃদু তাপপ্রবাহ বলা হয়, ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস উঠলে মাঝারি ও ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে এটিকে তীব্র তাপপ্রবাহ বলা হয়। আবহাওয়া দপ্তর জানায়, উপকূলবর্তী এলাকায় তাপমাত্রার পারদ ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে উঠলে তা তাপপ্রবাহ। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত বৃহস্পতিবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল যশোরে, ৩৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি। এর দুই দিন আগে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ফরিদপুরে ৩৫ দশমিক ৬ ডিগ্রি। গতকাল ঢাকায় সর্ব্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এক দিন আগে বুধবার ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৪ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। একদিনেই ঢাকায় তাপমাত্রা প্রায় ১ ডিগ্রি বেড়েছে। আবহাওয়াবিদ মো. আফতাব উদ্দিন বলেন, তাপমাত্রা বাড়ছে। বাড়তে থাকবে। মার্চের শেষের দিকে দুই-একটি অঞ্চলে তীব্র তাপপ্রবাহ দেখা দিতে পারে। তাতানো গরম পড়বে এপ্রিলে। একটি অঞ্চলে কয়েকটি স্টেশনে তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি অতিক্রম করতে হয়, তবেই সেটা তাপপ্রবাহ হয়। তিনি বলেন, এখন বাতাসের আর্দ্রতাও কিছুটা কম। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে বৃষ্টি হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। আবহাওয়াবিদ আব্দুর রহমান বলেন, আবহাওয়ার যে পরিস্থিতি তাতে এখন বৃষ্টিপাত না হলে দাবদাহ শুরু হতে পারে। প্রথমে দুই-এক জায়গায় তাপমাত্রা বেড়ে যাবে। তারপর ধীরে ধীরে বেশি এলাকায় বেড়ে যাবে। যশোরের পর উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জায়গায় তাপমাত্রা ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে উঠে যেতে পারে। আবহাওয়া এখন দাবদাহের দিকেই অগ্রসর হচ্ছে। এদিকে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামী দুই দিন তাপমাত্রা আরো বাড়বে। অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। লঘুচাপের বর্ধিতাংশ হিমালয়ের পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।
Leave a Reply