বাউফল প্রতিনিধি ॥ অর্থাভাবে চিকিৎসা বন্ধ হয়ে গেছে শিশু সোহানের। ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে তার সময় কাটে শুয়ে থেকে। টানা ব্যয়বহুল চিকিৎসায় সর্বশান্ত তার পরিবার। বাধ্য হয়ে হাসপাতাল ছেড়ে এখন বাড়িতেই বিনা চিকিৎসায় কষ্ট পাচ্ছেন। চোখের সামনে ছেলে এ অসহনীয় কষ্ট দেখে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন সোহানের অসহায় বাব-মা। আর তাই সোহানের চিকিৎসায় সমাজের বিত্তবানদের সহায়তা কামনা করছেন তাঁরা। পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার দাশপাড়া গ্রামের খোকন মৃধার ছেলে সোহান(১৩)। তার বাবা পেশায় একজন টমটম চালক। ভিটে-মাটি ছাড়া আর কোন জমি-জমা নেই খোকনের। টমটম চালিয়ে দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে ৫ সদস্যের পরিবারের ব্যয়ভার বহন করে সোহানের চিকিৎসা খরচ চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাঁকে। তিনি জানান, দু’বছর আগে দাঁতের ব্যাথা অনুভব করলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে অপারেশন করা হয়। কিন্তু সুস্থ্য হয়ে ওঠেনি সোহান। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানের চিকিৎসক আবার অপারেশন করার পরামর্শ দেন। কিন্তু অর্থাভাবে সেবার অপারেশন করা সম্ভাব হয়নি। পরে বাড়ী নিয়ে আসেন এবং ডাক্তারের দেয়া পেসক্রিপসন অনুযায়ী ঔষধ খাওয়াতে থাকেন। এক পর্যায়ে শারীরিক অবস্থার অবনতি ও দাঁতে প্রচন্ড ব্যাথা সহ রক্তক্ষরণ হলে গত ৩ মার্চ প্রথমে ঢাকা মিটফোর্ড আল আরাফাত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানের চিকিৎসক সোহানকে ঢাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে পাঠালে ওই হাসপাতালের প্রফেসর ডাঃ এটিএম আতিকুর রহমানকে দেখানো হয়। তিনি বিভিন্ন ধরনের প্যথলজিক্যাল পরীক্ষা নীরিক্ষা করার জন্য পরামর্শ দেন। পরে প্যাথলজিক্যাল ওই রিপোর্ট দেখে সোহান মরনব্যাধি ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানান এবং হাসপাতালে ভর্তি হতে বলেন। যে বয়সে ছেলের স্কুলে যাওয়ার কথা,সহপাঠীদের সঙ্গে খেলাধূলা করার কথা, সেই বয়সে মরনব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার কথা শুনে হতভম্ব হয়ে যান সোহানের বাবা। পরে সেখানের চিকিৎসা ব্যয়বহুল হওয়ায় এবং হাতে কোন টাকা পয়শা না থাকায় সোহানকে হাসপাতালে ভর্তি না করে বাড়ী নিয়ে আসেন। বাড়ী বসে দিনে দিনে সোহান আরো অসুস্থ্য হয়ে পড়লে গত ১৬ মার্চ ভর্তি করা হয় বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। সেখানে ২১ মার্চ পর্যন্ত চিকিৎসাসেবা নেয়ার পরে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ প্রশান্ত কুমার সাহা ঢাকার মহাখালী জাতীয় ক্যান্সার হাসপাতালে পাঠান। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ধার দেনা করে ও মানুষের সহায্য সহযোগিতা নিয়ে ২২ মার্চ জাতীয় ক্যান্সার হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানেও বিভিন্ন ধরনের প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা নীরিক্ষা করতে হয়েছে। যা খুবই ব্যায়বহুল। ওই পরীক্ষা-নীরিক্ষা করাতে গিয়ে ধারদেনার টাকা সব শেষ হয়ে যায়। পরে অর্থাভাবে অসুস্থ্য সন্তানের চিকিৎসা না করেই বাড়ী নিয়ে আসতে বাধ্য হন তিনি। সোহানকে সুস্থ্য করে তুলতে হলে আবারও ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা করা প্রয়োজন। সে জন্য অর্থের প্রয়োজন। সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত সোহানের সুস্থ্যতার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হওয়া, দৈনন্দিনের ঔষধ, ইনজেকশন ও রক্ত ক্রয়করাসহ এসব মিলিয়ে প্রায় ১০ লক্ষাধিক টাকার প্রয়োজন। টাকার পরিমান বেশী না হলেও সোহানের বাবার একার পক্ষে তা বহন করা সম্ভব নয়। তাই সোহানকে সুস্থ্য করে তুলতে সমাজের বিত্তবানদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন সোহানের বাবা। মানবতের সেবায় কোন বিত্তবান ব্যক্তি সাহায্য-সহযোগিতা পাঠাতে চাইলে যোগাযোগ করতে পারেন সোহানের বাবা খোকন মৃধার ০১৭৭৮২৫০০৩২ এই নম্বরে।
Leave a Reply