উজিরপুর প্রতিনিধি ॥ জেলার উজিরপুর উপজেলার হিন্দু অধ্যুষিত সাতলা ইউনিয়নের পটিবাড়ি গ্রামের কৃষকের প্রায় আড়াই হাজার বিঘা জমিতে জোরপূর্বক মাছ চাষের চেষ্ঠা করছেন স্থানীয় দুই প্রভাবশালী সহদর। জোরপূর্বক মাছ চাষ করার জন্য সাবেক প্রয়াত ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক আজাদের পুত্র মশিউর রহমান ও মনির মিয়াসহ তাদের সহযোগিরা ইতোমধ্যে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে মাছ চাষের পক্ষে জোরপূর্বক স্বাক্ষর দিতে বাধ্য করছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমনকি মাছ চাষের বিরোধীতা করলে সংখ্যালঘুদের বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে শতাধিক ভূক্তভোগীরা সোমবার সকালে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান খায়রুল বাশার লিটনের কাছে মাছ চাষ বন্ধের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর মশিউর ও তার ছোট ভাই মনির মিয়া তাদের সহযোগিদের নিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার জন্য স্থানীয় প্রাইমারি স্কুলের সামনে জরো করেন। খবর পেয়ে উজিরপুর মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাঠিচার্জ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মঙ্গলবার সকালে উল্লেখিত প্রভাবশালীরা পূর্ণরায় এলাকাবাসিকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি প্রদর্শন করায় এলাকায় তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করার পাশাপাশি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মাঝে আতংক বিরাজ করছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ১২ বছর ধরে সাতলা ইউনিয়নের পটিপাড়ি গ্রামে হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের আড়াই হাজার বিঘা জমি জবর দখল করে অবৈধভাবে মাছ চাষ করে আসছিলো সাবেক প্রয়াত ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক আজাদ। গত বছর ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান আব্দুল খালেক আজাদ। তার মৃত্যুর পর এলাকাবাসি অবৈধ মাছ চাষে বাঁধা প্রদান করেন। চলতি মৌসুমে নতুন করে আবার পূনরায় মাছ চাষ করার পরিকল্পনা করে খালেক আজাদের পুত্র মশিউর রহমান ও তার ছোট ভাই মনির মিয়া। ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে সাতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উজিরপুর উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ খায়রুল বাশার লিটন বলেন, দীর্ঘ ১২ বছর ধরে অবৈধভাবে হিন্দু মুসলিম সম্প্রদায়ের আড়াই হাজার বিঘা জমি জবর দখল করে মাছ চাষ করেছেন আব্দুল খালেক আজাদ। এর প্রতিবাদ করায় খালেক আজাদ এবং তার দুই পুত্রের হামলা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন অসংখ্য মানুষ। খালেক আজাদের মৃত্যুর পর তার দুই পুত্র পিতার মতো হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের ওপর জুলুম ও নির্যাতন চালাচ্ছে। বিষয়টি তিনি বরিশালের জেলা প্রশাসক ও উজিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবহিত করেছেন। তারা এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন। অভিযোগের ব্যাপারে মোবাইল ফোনে অভিযুক্ত মশিউর রহমান ও মনির মিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলেও তারা এ বিষয়ে কোন কথা বলতে রাজি হননি। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মোঃ জসীম উদ্দীন হায়দার বলেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনকে ভয়ভীতি ও নির্যাতনের হুমকির অভিযোগ পেয়ে জরুরি ভিত্তিতে বিষয়টি তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
Leave a Reply