আগৈলঝাড়া প্রতিনিধি ॥ আগৈলঝাড়ায় মেয়ের জামাতার শ্বশুরকে হত্যার অভিযোগ এনে মামলা দায়েরের পর আদালতের নির্দেশে কবর থেকে লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। বরিশাল অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের নির্দেশে গতকাল বুধবার সকালে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.আবুল হাশেমের উপস্থিতিতে ব্যবসায়ী আব্দুল মালেক হাওলাদারের লাশ কবর থেকে উত্তোলন করেন বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালের ডোম বিজয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা হাসপাতালের ডা.জাহেদ হোসেন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসি (তদন্ত) মাজহারুল ইসলামসহ প্রমুখ। লাশের ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল নেওয়া হয়েছে। ময়না তদন্তের শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। উল্লেখ্য, উপজেলার ফুল্লশ্রী গ্রামের বিশিষ্ট প্রবীন ব্যবসায়ি আব্দুল মালেক হাওলাদার চলতি বছর ৮মার্চ রাতে নিজ বাড়িতে মারা যান। পরদিন সকালে যথাযথ ধর্মীয় রীতি মেনে তাকে দাফন করা হয়। এদিকে আ. মালেক হাওলাদারের একমাত্র মেয়ে জামাতা একই গ্রামের আইয়ুব আলী পাইকের ছেলে আসাদুল হক পাইক ওরফে বুলু তার শ্বশুর আব্দুল মালেক মিয়ার মৃত্যু স্বাভাবিক নয়; বরং তাকে হত্যা করা হয়েছে এমন অভিযোগ এনে গত ১৫মার্চ বরিশাল অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে তিন ছেলে, তাদের স্ত্রী, ছেলেসহ সাত জনকে আসামী করে দঃ বিঃ ৩০২/ ৩৪ নালিশী মামলা দায়ের করেন। আদালতের বিজ্ঞ বিচারক আমিনুল ইসলাম বাদীর আবেদনে আগৈলঝাড়া থানার ওসিকে অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গন্য করে তদন্তের নির্দেশ প্রদান করেন। গত ১৭মার্চ রাতে ওসি মো. গোলাম ছরোয়ার নালিশী অভিযোগটি হাতে পেয়ে মামলা হিসেবে থানায় রেকর্ড করেন। ওসি মো. গোলাম ছরোয়র এজাহারের বরাত দিয়ে জানান, আব্দুল মালেক হাওলাদারের তিন পুত্র এক কন্যা থাকা সত্বেও একমাত্র মেয়ে লাইলী পারভীন নিজের ইচ্ছায় বাদী বুলুকে বিয়ে করায় তাকে সম্পত্তি থেকে বাদ রেখে তার জীবদ্দশায় তিনি তার তিন ছেলের নামে সমস্ত সম্পত্তি লিখে দেন। বাদী তা অস্বীকার করে ওই সম্পত্তি জোর পূর্বক তিন ছেলে লিখে নিয়েছে বলে আদালতে অভিযোগ করেন। বাদী তার অভিযোগে আরও জানান, ছেলেরা তার বাবার কাছ থেকে জোর পূর্বক সম্পত্তি লিখে নেয়ার কারণে ব্যবসায়ি মালেক হাওলাদারের স্ত্রী (বাদীর শ্বাশুরী) জাহান আরা বেগম সম্পত্তি থেকে মেয়ে বঞ্চিত হওয়ার শোক ও পরিবারের মানসিক যন্ত্রনা সহ্য করতে না পেরে ২০১৯ সালের ১৩ জানুয়ারি হার্ট ফেল করে মারা যান। ছেলেদের নামে সম্পত্তি লিখে দেয়ার পরে আব্দুল মালেক হাওলাদার তার তিন ছেলেকে বোন লাইলীর নামে কিছু সম্পত্তি লিখে দেয়ার কথা বললেও ছেলেরা তাদের বোনের নামে কোন সম্পত্তি লিখে দেয়নি। ঘটনার দিন ৮মার্চ রাতে আব্দুল মালেক হাওলাদার তিন ছেলেকে ডেকে তাদের বোন লাইলী পারভীনের নামে কিছু সম্পত্তি লিখে দিতে বললেও তার ছেলেরা তা না দেয়ায় পিতা-ছেলেদের মধ্যে রাতে বাকবিতন্ডা হয়। ওই রাতেই মালেক হাওলাদারকে তার ছেলেরাসহ অন্যান্যরা বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাস রোধ করে মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরদিন তরিঘরি করে মালেক হাওলাদারের লাশ দাফন করে তার পরিবার। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসি (তদন্ত) মাজহারুল ইসলাম জানান, আদালতের নির্দেশে কবর থেকে লাশ উত্তোলন করে বরিশাল প্রেরন করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
Leave a Reply