বরগুনা প্রতিনিধি ॥ তরমুজ পরিবহন গাড়ী থেকে বরগুনার আমতলী উপজেলার সোনাখালী গ্রামের শামিম হাওলাদার নামের এক ব্যাক্তি চাঁদা আদায় করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি ব্যবস্থাপনা দলের রশিদ বহি ব্যবহার করে তিনি প্রতি ট্রাক থেকে ৩’শ টাকা চাঁদা আদায় করছেন বলে অভিযোগ করেন ট্রাক চালকরা। বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ কায়সার আলম বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নামে চাঁদা আদায়ের কোন সুযোগ নেই। চাঁদাবাজ শামিম হাওলাদারের বিরুদ্ধে দ্রুত শাস্তিমুলক ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানিয়েছেন ট্রাক চালক ও ব্যবসায়ীরা। জানাগেছে, আমতলী উপজেলার আঠারোগাছিয়া, কুকুয়া, হলদিয়া ও চাওড়া ইউনিয়নে তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে তরমুজ ব্যবসায়ীরা এসে ওই সকল এলাকার তরমুজ ক্রয় করছেন। ওই তরমুজ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রপ্তানী হচ্ছে। এ তরমুজ পরিবহনে প্রতিদিন শত শত ট্রাক গাজীপুর, সোনাখালী, উত্তর সোনাখালী, মধ্য সোনাখালী ও কাঠালতলায় অবস্থান করছে। ওই স্থানগুলো থেকে ট্রাক তরমুজ লোড দেয়া হয়। বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি ব্যবস্থাপনা দলের রশিদ বহি ব্যবহার করে ওই সকল ট্রাক থেকে প্রতিদিন ৩’শ টাকা করে স্থানীয় শামিম হওলাদার নামের এক ব্যাক্তি চাঁদা আদায় করছে বলে অভিযোগ করেন ট্রাক চালকরা। তার দাবীকৃত চাঁদা না দিলে ট্রাক আটকে রাখছেন এমন অভিযোগ করেন ট্রাক চালক মোঃ রবিউল। খোজ নিয়ে যানা গেছে, শামিম হাওলাদার গত ১৫ দিন ধরে তরমুজ পরিবহনে আসা ট্রাক চালকদের কাছ থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নামে ৩’শ টাকা আদায় করছেন। পানি উন্নয়ন বোর্ডের রশিদ বহিতে ভুক্তভোগীর নাম ও তারিখ নেই। প্রত্যক্ষদর্শী ইব্রাহিম ও জালাল চৌকিদার বলেন, তরমুজ বিক্রির শুরু থেকেই শামিম ট্রাক প্রতি চালকদের কাছ থেকে ৩’শ টাকা আদায় করছেন। তারা আরো বলেন, ট্রাক চালক চাঁদা দিতে না চাইলে তাদের আটকে চাঁদা আদায়ে বাধ্য করছেন তিনি। নাটোরের ট্রাক চালক রবিউল, সিরাজগঞ্জের মফিজ, ময়মনসিংহের মোশাররফ ও গাজীপুরের ওসমান বলেন, শামিমকে চাঁদা না দিয়ে ট্রাক আটকে রাখে। বাধ্য হয়ে চাঁদা দিতে হয়। তারা আরো বলেন, যতবার ট্রাকে তরমুজ লোড দেই, ততবাই শামিমকে চাঁদা দিতে হচ্ছে। এই চাঁদাবাজ শামীমের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানান তারা। তরমুজ ব্যবসায়ী অহিদুল ও মোশাররফ হোসেন বলেন, ট্রাকে তরমুজ লোড দেয়ার সাথে সাথেই শামিম এসে চাঁদা দাবী করেন। চাঁদা না দিলে গাড়ীতে তরমুজ লোড দিতে দেয় না। বাধ্য হয়ে আমাদের চাঁদা দিতে হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের চাঁদা আদায়কারী মোঃ শামিম হাওলাদার অবকাঠামো পরিচালন ও রক্ষনাবেক্ষন বাবদ ৩’শ টাকা চাঁদা আদায়ের কথা স্বীকার করে বলেন, টাকা আদায়ের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড আমাকে নিয়োগ দিয়েছে। এই টাকা আদায় করে রাস্তা ও স্লুইজ মেরামত করা হবে। বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ কায়সার আলম বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নাম ব্যবহার করে চাঁদা আদায়ের কোন অনুমতি কাউকে দেয়া হয়নি। চাঁদা আদায় করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের রাস্তা ও স্লুইজ মেরামত করতে হবে এ কথা সম্পূর্ণ ভুয়া। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নাম ব্যবহার করে যে চাঁদা আদায় করছে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমতলী থানার ওসি মোঃ শাহ আলম হাওলাদার বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। এখন খোজ খবর নিয়ে শামিমের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। আমতলী উপজেলা কৃষি অফিসার সিএম রেজাউল করিম বলেন, তরমুজ পরিবহনে চাঁদা বন্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেয়া হবে।
Leave a Reply