স্টাফ রিপোর্টার ॥ বরিশাল জেলায় নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হওয়া বেশিরভাগ রোগীই বাড়িতে তাদের চিকিৎসা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। হাসপাতাল সূত্রগুলোও বলছে, যাদের অক্সিজেনের প্রয়োজন কিংবা যারা মুমূর্ষু তাদের বাহিরে হাসপাতালে করোনা পজেটিভ রোগীর সংখ্যা কিছুটা কম। তবে দ্বিতীয় দফার এ ঢেউয়ে আক্রান্ত ব্যক্তিদের বাড়ি লকডাউন হওয়ার পাশাপাশি বাস্তবিক অর্থে রোগীকে আইসোলেশনে রাখা হচ্ছে কিনা তা খতিয়ে দেখার মতো কার্যক্রম দৃশ্যমান নয়। তাই এ নিয়ে সংক্রমণ বৃদ্ধির শঙ্কাও করছেন অনেকে। এ বিষয়ে বাসদ বরিশাল জেলা শাখার সদস্য সচিব ডা. মনীষা চক্রবর্তী বলেন, কেউ করোনায় আক্রান্ত হলে তাকে আইসোলেশন করাটা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সে যদি ইচ্ছেমতো বাহিরে ঘোরাঘুরি করে তাহলে সংক্রমণ আরও বাড়বে। পাশাপাশি আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসাসহ প্রয়োজনীয় বিষয়গুলোও নিশ্চিত করা প্রয়োজন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে আগেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি, এবারেও তো সে রকম কিছু দেখি নাই। তবে পরীক্ষার ফলাফলে প্রাপ্তির পর আক্রান্ত ব্যক্তিকে তা জানিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি ঘরে বসে চিকিৎসা নিতে চাইলে তাদের সে সহায়তা করা হচ্ছে বলে জানান বরিশাল জেলার সিভিল সার্জন ডা. মনোয়ার হোসেন। বর্তমানে আক্রান্ত হওয়া বেশিরভাগ রোগী বাড়িতে বসে চিকিৎসা নিচ্ছেন জানিয়ে ডা. মনোয়ার বলেন, ঘরে বসে যারা চিকিৎসা নিতে আগ্রহী তাদের মোবাইলফোনে চিকিৎসা সহায়তার পাশাপাশি সচেতনতা ও সতকর্তামূলক পরামর্শ প্রদান করছেন চিকিৎসকরা। আর সচেতনতা ও সতকর্তামূলক পরামর্শের মধ্যেই আক্রান্ত ব্যক্তিকে আলাদা ঘরে রাখাসহ সুস্থ হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। এছাড়া যারা করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন তাদের সার্বিক তথ্য স্থানীয় প্রশাসনের কাছে পাঠানো হচ্ছে, যাতে তারা স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করতে না পারে। জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, রোববার (১১ এপ্রিল) রাতের প্রাপ্ত নমুনা পরীক্ষার ফলাফলের হিসেবে নতুন করোনায় আক্রান্ত শনাক্ত হওয়া ৩১ জনের মধ্যে মাত্র এক জন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। আবার ওই দিন ২৪ ঘণ্টায় যে ১২ জন সুস্থ হয়েছেন তারা সকলেই বাড়িতে থেকেই সুস্থ হয়েছেন। এর আগের দিন শনিবার ৮৯ জনের মধ্যে মাত্র এক জন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন, বাকিরা বাড়িতেই ছিলেন। আর ওই দিন ২৪ ঘণ্টায় যে ১০ জন সুস্থ হয়েছেন তারা সকলে বাড়িতে থেকেই সুস্থ হয়েছেন। আর গেলো সাত দিনের এই পরিসংখ্যান বলছে, করোনার লক্ষণ দেখা দিলে নমুনা পরীক্ষা করাচ্ছেন রোগীরা। সেই সঙ্গে বাড়িতে থেকেই বেশিরভাগ রোগী সুস্থ হচ্ছেন। উল্লেখ্য বরিশাল জেলায় এ পর্যন্ত পাঁচ হাজার ৭৫০ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে, যার মধ্যে মোট সুস্থ হয়েছে পাঁচ হাজার ১২ জন এবং মোট মৃত্যু হয়েছে ৯৫ জনের। এ জেলায় এ পর্যন্ত তিন হাজার ১৩২ জনের বিদেশগামীদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। যার মধ্যে মাত্র ৭৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।
Leave a Reply