গলাচিপা প্রতিনিধি ॥ পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নের চর লতা গ্রামের সরকারি গাজীর খালে সেচ দিয়ে পানি শূন্য করে মাছ শিকার করছে চেয়ারম্যান জাহিদুল নেতৃত্বে স্থানীয় লোকজন। এভাবে মাছ শিকার করে লক্ষ লক্ষ টাকার মাছ বিক্রি করে লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন খাল পাড়ের দুই শতাধিক কৃষক। লবনাক্ত এলাকায় কৃষি কাজের জন্য খালে বাঁধ দিয়ে মিষ্টি পানি সংরক্ষন করা হলেও প্রভাবশালীদের লাভবান হওয়ার কারণে এখন কৃষক তাদের বরি ফসলের জন্য পানি পাচ্ছেন না। ফলে কৃষক তাদের রবি ফসলের জন্য পানির সংকটে ভূগছেন। তাছাড়া শুকনার মৌসুমের কারণে গবাদী পশুর খাবার পানির সংকট দেখা দিবে। এদিকে রাতে আধাঁরে খালের ধরা মাছ পাচারে সহযোগিতা না করায় ট্রলার চালক ইব্রাহিম হাওলাদারকে মিটিয়ে জগম করেছে র্দুবৃত্তরা। ওই ইউনিয়নের কৃষি উপ-সহকারী কর্মকর্তা অলক কুমার জানায়, গাজীর খালের দুই পাড়ে অন্তত ২৫ হেক্টর জমিতে বরি ফসলের আবাদ হয়েছে। চলতি রবি মৌসুমে কৃষকের রবি ফসল তরমুজ উঠে গেলেও এখন চলছে খালের দুই পাড়ে বোরো আবাদ। খেতে আছে মুগ ও ফেলন ডাল। বিশেষ করে বোরো ফসলের জন্য প্রয়োজন প্রচুর পানি। কিন্তু খালে সেচ দিয়ে মাছ শিকার করার ফলে কৃষক বোরো আবাদের ফলন কম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সেচযন্ত্র বসিয়ে খালের পানি সেচ দেওয়া হচ্ছে। পানি কমে যাওয়ায় প্রভাবশালীর লোকজন নিয়ে খালে নেমে মাছ ধরায় ব্যস্ত রয়েছে। এভাবে মাছ ধরার ব্যাপারে জানতে চাইলে আলা হাওলাদার নামে স্থানীয় প্রভাবশালী বিএনপি নেতা জানান, খালের পাড়ে তাদের বাড়ি ও কৃষিজমি। এখানকার ৩৩ জন মিলে নিজেদের টাকায় পানি সেচ দিয়ে খাল পরিস্কার করছেন। এতে কিছু মাছ ধরা পড়ছে। মাছ বিক্রি করে খরচের টাকা তোলার পর যদি কিছু লাভ হয়ে তাহলে নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নিবেন তারা। তবে খাল সেচ দিয়ে শুকিয়ে ফেলায় কৃষক মিষ্টি পানি সংকটে পড়বে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, তরমুজ উঠে গেছে। ধানের আবাদ কম, কাজেই তেমন ক্ষতি হবে না। তবে স্থানীয় কয়েকজন কৃষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, যারা খাল সেচ দেয় তারা স্থানীয় প্রভাবশালী। তাই প্রকাশ্যে এর প্রতিবাদ করতে পারছেন না তারা। করোনা পরিস্থিতির কারণে উপজেলা প্রশাসন বর্তমানে এখানে কম আসার সুযোগে স্থানীয় চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে হানিফ হাওলাদার, আব্বাছ ফকির, মজিবর গাজী, শুকুর গাজী কতিপয় প্রভাবশালীরা বাঁধ দেওয়া খালে সংরক্ষিত মিষ্টি পানি সেচে মাছ শিকার করছে। ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে সাধারণ কৃষক। ওই এলাকার কৃষক মো.ইউনুস হাওলাদার জানান, এবছর এখন পর্যন্ত কোন বৃষ্টি হয় নায়, তার ওপর খালে পানি নাই গরু মহিষ লইয়া আমাগো বিপদে পরতে হইবে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) মাহাবুব হাওলাদার মুঠোফোনে বলেন, বিষয়টি তিনি জানেন না। এছাড়াও স্থানীয় সাংসদর খালে সেচ দেওয়া নিষেধ করে গেছেন। এরপরও কিভাবে খাল সেচ দিয়ে মাছ ধরা হচ্ছে বলে উল্টো প্রশ্ন করেন তিনি। এদিকে ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম হাওলাদার জানান, তিনিও ওই এলাকার লোকজনদের খাল সেচ দিয়ে মাছ ধরা নিষেধ করেছিলেন। তবে সেখানকার লোকজন তার কথা শুনছেন না বলে জানান তিনি। এ প্রসঙ্গে তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাশফাকুর রহমান জানান, দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ ও কৃষি কর্মকর্তাকে নির্দেশে দেয়া হয়েছে।
Leave a Reply