স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ নগরীর পাইকারি ইলিশ বিক্রয় কেন্দ্র থেকে ঢাকায় সীমিত পরিসরে ইলিশ মাছ সরবরাহ শুরু হয়েছে। প্রাথমিকভাবে পোর্ট রোডের পাইকারি ইলিশের আড়ত থেকে ১৬শ’ কেজি ইলিশ ঢাকায় পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন সরবরাহকারীরা। শনিবার সকালে ইলিশ সরবরাহকারীদের সুপারভাইজার বাদশা মিয়া জানান, সাধারণত ইলিশের চাহিদা এ সময়ে প্রচুর থাকে। কিন্তু লকডাউনের শুরুতে মাছ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর শুক্রবার সকাল থেকে ঢাকার বাজারে অল্প পরিমাণে ইলিশ মাছ পাঠানো শুরু হয়েছে। তবে সরবরাহকৃত মাছের দাম অন্তত দেড়গুণ বৃদ্ধি পাওয়ার কথা জানিয়ে তিনি আরও জানান, এক কেজি সাইজের ইলিশ মাছ ১৫শ’ টাকা ও আটশ’ গ্রাম ওজনের ইলিশ এক হাজার টাকা কেজি দরে পাঠানো হয়েছে। যা আগে এক হাজার টাকা ও সাত থেকে আটশ’ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতো। বাদশা মিয়া জানান, স্বাভাবিক সময়ে পাঁচ থেকে ছয়টি ট্রাকে প্রতিদিন কমপক্ষে তিন থেকে চারশ’ মণ ইলিশ পাঠানো হতো। এখন পাঠানো হচ্ছে খুবই কম। নগরীর পোর্ট রোড মৎস্য আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক নীরব হোসেন টুটুল জানান, এ সময় অভয়াশ্রম থেকে মাছ ধরা বন্ধ। লকডাউনের কারণে বাইরের নদী থেকে মাছ ধরে সীমিত পরিসরে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। ফলে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে দামও কিছুটা বেড়েছে। তিনি বলেন, বাজারে তেমন ইলিশ নেই। জেলেরা বড় নদীতে জাল ফেলতে পারছেন না। স্থানীয় নদী থেকে ইলিশ সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠাতে হচ্ছে। এই মুহুর্তে ভোলার নদ-নদীতেই কিছু ইলিশ ধরা পরছে। মাছের আড়তে প্রায় দুই থেকে তিন হাজার শ্রমিক কাজ করলেও বর্তমানে অধিকাংশ শ্রমিক অলস সময় পার করছেন। শ্রমিকরা জানান, তারা সাধারণত লোড ও আনলোডের কাজ করে থাকেন। বাজারে মাছের সরবরাহ না থাকলে তাদের কাজের সুযোগ নেই। কাজ থাকলে দিনে ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত আয় হয়। লকডাউন শুরুর পর থেকে অধিকাংশ শ্রমিক বেকার। বরিশালের মৎস্য কর্মকর্তা (ইলিশ) বিমল চন্দ্র দাস বলেন, অভয়াশ্রমে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত মাছ ধরা বন্ধের নির্দেশ রয়েছে। এ সময় এখানকার নদীতে জেলেরা জাল ফেললেই তাদের জেল-জরিমানা করা হচ্ছে। এতে আগামী মৌসুমে বড় আকারের ইলিশ পাওয়ার সম্ভব হবে। বরিশাল মৎস্য অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আনিছুর রহমান তালুকদার জানান, স্বাভাবিক সময়ে বরিশাল বিভাগের মাছের আড়তগুলোতে কয়েক হাজার মণ ইলিশ সরবরাহ হলেও এখন তা অন্তত দশ ভাগের এক ভাগে নেমে এসেছে। তাই বাজারে ইলিশের দামও এখন বৃদ্ধি পেয়েছে।
Leave a Reply