গৌরনদী প্রতিনিধি ॥ তীব্র তাপদাহে অতিষ্ঠ হয়ে পরেছে জনজীবন। তাই তাপদাহে নিজেদের একটু স্বস্থি দিতে শহর থেকে শুরু করে গ্রামীণ জনপদে বেড়ে গেছে তালপাতা দিয়ে তৈরি হাতপাখার কদর। গরমে হাতপাখার কদর বেড়ে যাওয়ায় বরিশালের গৌরনদী উপজেলার চাঁদশী গ্রামের পাখাপল্লীর শতাধিক পরিবারের মাঝে বেড়ে গেছে কর্মব্যস্ততা। সরেজমিনে চাঁদশী গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, পাখা পল্লীর প্রতিটি বাড়িতেই চলছে পাখা তৈরির কাজ। বাড়ির গৃহবধূ থেকে শুরু করে পরিবারের অনেক সদস্যই ব্যস্ত সময় পাড় করছেন পাখা তৈরির কাজে। পাখা তৈরির মূল উপাদান তালপাতা সংগ্রহ, পাতা ছাঁটাই ও তৈরিকৃত পাখা বিক্রির দায়িত্ব পালন করে আসছেন পল্লীর পুরুষ সদস্যরা। আর পাখা তৈরি ও সুতা দিয়ে বাঁধাইয়ের কাজ করছেন গৃহবধু ও পরিবারের নারী সদস্যরা। ওই গ্রামের পাখা তৈরির কারিগররা জানান, এতোদিন গ্রামীণ চাহিদা মিটিয়ে ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে পাখাগুলো রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ হলেও বর্তমানে পাখা তৈরির উপকরণের মূল্য বৃদ্ধি ও মহামারী করোনা ভাইরাসের কারনে বিভিন্ন মেলা বন্ধ থাকায় তৈরিকৃত পাখা বিক্রি করতে পারছেননা। ফলে পল্লীর অনেক কারিগরই এখন পেশা পরিবর্তনের কথা ভাবছেন। এরইমধ্যে অর্থাভাবে একাধিক কারিগর পরিবর্তন করে ফেলেছেন ৪০ বছরের পুরনো এ পেশা। তারা পাখা শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে সুদ মুক্ত ঋণ প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবী জানান। ওই গ্রামের বাসিন্দা ও উপজেলা এনজিও সমন্বয় পরিষদের সভাপতি প্রেমানন্দ ঘরামী জানান, কয়েক যুগ ধরে চাঁদশী গ্রামের অনেক পরিবার পাখা তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। মহামারী করোনার কারনে আগেরমত এখন আর পাখা বিক্রি হচ্ছেনা। ফলে পাখা তৈরির কারিগররা মাবনবেতর জীবনযাপন করছেন। সরকার ক্ষুদ্র শিল্প খ্যাত হাতপাখা তৈরির কারিগরদের সহজ শর্তে ঋনদান করলে এ পেশার সাথে জড়িতদের টিকে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিপিন চন্দ্র বিশ^াস জানান, চাঁদশীর পাখা শিল্পের বিষয়ে ইতিমধ্যে অবহিত হয়েছি। অতি শিগ্রই পাখা পল্লীর বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে পাখা শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply