দখিনের খবর ডেস্ক ॥ রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানার নাশকতার অভিযোগে করা মামলায় হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরীর সাধারণ সম্পাদক মামুনুল হকের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল সোমবার বেলা ১১টা ৯ মিনিটের দিকে তাকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ। এদিন ২০২০ সালের মোহাম্মদপুর থানার একটি ভাঙচুর ও নাশকতার মামলায় তাকে সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাজেদুল হক। রিমান্ড আবেদনে এসআই সাজেদুল বলেন, ২০২০ সালে মোহাম্মদপুর এলাকায় মামুনুলের নির্দেশে কয়েকজন মিলে জিএম আলমগীর শাহীন নামে এক ব্যাক্তিকে আঘাত করে। এ সময় তার কাছ থেকে একটি ‘স্যামসাং এ ৫০’ মোবাইল ফোন, সাত হাজার বাংলাদেশি টাকা ও ২০০ ডলার সমমূল্যের বিদেশি মুদ্রা নিয়ে যায় আসামিরা। মামুনুল ওই আসামিদের চেনেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে চোরাই যাওয়া মালামাল উদ্ধারের সম্ভাবনা রয়েছে। তাই সাত দিনের রিমান্ডে নেয়া একান্ত আব্যশক। রিমান্ড শুনানিতে বিচারক মামুনুলকে বলেন, আপনার কি কিছু বলার আছে? উত্তরে মামুনুল বিচারককে উদ্দেশ্য করে বলেন, আমি প্রতি রমজান মাসে ছয় বার কোরআন শরীফ খতম দেই। রমজান মাস পবিত্র মাস। এই মাসে আমি যেন রোজা, নামাজ ও কোরআন পড়তে পারি তার সুযোগ করে দেয়ার জন্য আবেদন করছি। এর আগে বেলা ১১টা ৯ মিনিটের দিকে মামুনুলকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম দেবদাস চন্দ্র অধিকারী তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। মামুনুল হকের আইনজীবী সৈয়দ মো. জয়নুল আবেদীন মেসবাহ বলেন, আসামির বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা ভিত্তিহীন। এমন অভিযোগে রিমান্ডও নজিরবিহীন। তিনি আরও বলেন, আসামি নিজেই আদালতকে বলেছেন- গতকালই (গত রোববার) তাকে নানা বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। রমজান মাস, তিনি নিয়মিত কুরআন তেলাওয়াত ও ইবাদত করেন। রোববার তাকে যে জায়গায় রাখা হয়েছে, সেটা ইবাদতের উপযোগী না। খুব মানবেতর রাত কেটেছে তার। জবাবে আদালত বলছেন, আপনার ইবাদতে বিঘ্ন হবে না। এর আগে মামুনুল হককে গত রোববার দুপুরে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাকে রাখা হয় তেজগাঁও থানা হাজতে। মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার হারুন অর রশিদ জানিয়েছিলেন, মোহাম্মদপুর থানায় ২০২০ সালের একটি নাশকতার মামলায় মামুনুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তদন্তে ওই ঘটনায় সুস্পষ্ট সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পেয়েই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এটিসহ মামুনুল হকের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে বলেও জানিয়েছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা হারুন। গত রোববার রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানার ওসি আবদুল লতিফ বলেছিলেন, ২০২০ সালের মোহাম্মদপুর থানার একটি ভাঙচুর ও নাশকতার মামলায় তদন্ত চলছিল। তদন্তে হেফাজত নেতা মামুনুলের সম্পৃক্ততার বিষয়টি সুস্পষ্ট হওয়ায় আমরা তাকে গ্রেফতার করেছি। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। গত রোববার দুপুর ১২ টা ৫০ মিনিটের দিকে মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে মামুনুল হককে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগ।
Leave a Reply