স্টাফ রিপোর্টার ॥ মুমূর্ষু রোগীর জীবন বাঁচাতে আইসিইউ অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু দক্ষিণের কোটি মানুষের উন্নত চিকিৎসার ভরসাস্থল শের-ই বাংলা মেডিকেলের করোনা ওয়ার্ডে আইসিইউ বেড রয়েছে মাত্র ১২টি। অথচ মহামারীর এই সময় করোনা ওয়ার্ডে অন্তত ৩০টি আইসিইউ প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এদিকে আইসিইউ বেড পরিচালনার জন্য নেই প্রয়োজনীয় দক্ষ ডাক্তার ও নার্স। এ অবস্থায় শের-ই বাংলা মেডিকেলের করোনা ওয়ার্ডে জরুরি ভিত্তিতে আরও আইসিইউ বেড এবং দক্ষ জনবল দেয়ার দাবী জানিয়েছেন রোগীরা। এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক এবং বরিশালের জেলা প্রশাসক। গত বছর করোনা মহামারী শুরুর পর ১২টি আইসিইউ বেড সহ দেড়শ’ শয্যার করোনা ওয়ার্ড করা হয় শের-ই বাংলা মেডিকেলের নতুন বর্ধিত ভবনে। কিন্তু শুরু থেকেই রোগীর চাপের কারণে ১২টি আইসিইউ বেডে মুমূর্ষু রোগীর সংকুলান হচ্ছিলো না। গত এক বছরে অধিক ব্যবহারের কারণে একটি আইসিইউ বেড অচল হয়ে গেছে। দীর্ঘ এক বছরেও করোনা ওয়ার্ডে বাড়ানো হয়নি আইসিইউ বেড। নিয়োগ করা হয়নি প্রয়োজনীয় স্থায়ী জনবল। এ অবস্থায় করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে আইসিইউ বেডের চরম সংকট চলছে শের-ই বাংলা মেডিকেলের করোনা ওয়ার্ডে। ভুক্তভোগীরা বলছেন, জরুরি মুহূর্তে আইসিইউ বেড পাওয়া যায় না শেবাচিমের করোনা ওয়ার্ডে। প্রয়োজনের এক তৃতীয়াংশ আইসিইউ বেড দিয়ে মুমূর্ষু রোগীর জীবন বাঁচাতে পারছে না মেডিকেল কর্তৃপক্ষ। জনবল সংকটের কারণে ডাকলেও পাওয়া যায় না ডাক্তার-নার্স। এ অবস্থায় করোনা ওয়ার্ড এবং আইসিইউ ইউনিটের জন্য জরুরি ভিত্তিতে দক্ষ জনবল নিয়োগ এবং আইসিইউ বেড বাড়ানোর দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডের নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, অন্যান্য ওয়ার্ড থেকে ধার করা ৩জন ডাক্তার এবং ৩ জন নার্স ৩ শিফটে করোনা ওয়ার্ডের আইসিইউ ইউনিট পরিচালনা করছেন। করোনা ওয়ার্ড কিংবা আইসিইউ ইউনিটের জন্য গত এক বছরেও কোন জনবল কাঠামো অনুমোদন হয়নি। নিয়োগ করা হয়নি স্থায়ী জনবল। ধার করা জনবল দিয়ে প্রত্যাশিত সেবা দেয়া যাচ্ছে না বলে স্বীকার করেছেন হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মো. মনিরুজ্জামান। শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ছাড়া দক্ষিণাঞ্চলে আর কোন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে আইসিইউ বেডের ব্যবস্থা নেই। দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় ১ কোটি মানুষের জন্য শের-ই বাংলা মেডিকেলের করোনা ওয়ার্ডের আইসিইউ শেষ ভরসা। শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. সাইফুল ইসলাম জানান, প্রয়োজনের তুলনায় ১২টি আইসিইউ বেড একেবারে নগণ্য। আরও ৪০টি আইসিইউ বেডের জন্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে আরও আইসিইউ বেড সরবরাহ করা হলে মুমূর্ষু রোগীর সেবা দিতে পারবেন তারা। এদিকে করোনা ওয়ার্ড সহ হাসপাতালের জনবল সংকটের বিষয়টি মন্ত্রণালয়ে জানানো হয়েছে বলে দাবী করেছেন বরিশালের জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার। মন্ত্রণালয় থেকে অচিরেই শেবাচিম হাসপাতালের জন্য জনবল নিয়োগের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
Leave a Reply