নোমান সিকদার, চরফ্যাসন প্রতিনিধি ॥ চরফ্যাসনের দক্ষিণ শিবা জামিলা ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসায় সহকারী গ্রন্থগারিক কাম ক্যাটালগার নিয়োগে জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। সদ্য অবসরে যাওয়া মাদ্রাসা সুপার এবং ডিজির প্রতিনিধির স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে শিহাব উদ্দিন নামে এক ব্যক্তির সনদপত্র দিয়ে শাহাবুদ্দিন নামে অপর ব্যক্তিকে নিয়োগ দেখিয়ে উক্ত পদে নিয়োগ সম্পন্ন করে বেতন ভাতার জন্য আবেদন করা হয়েছে। মাদ্রাসা ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. ইলিয়াছ মাষ্টার সহকারী গ্রন্থগারিক কাম ক্যাটালগার পদে নিয়োগের নামে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে এমন অপকর্ম করেছেন বলে সদ্য বিদায়ী সুপার আবুল বাশার অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ সূত্রে জানাযায়, দক্ষিণ শিবা জামিলা ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার সহকারি গ্রন্থগারিক কাম ক্যাটালগার পদে নিয়োগের জন্য গত বছরের ৫ জুলাই একটি গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী গত ২৭ আগষ্ট লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে ২৮ আগষ্ট মো. শাহাবুদ্দিনকে নিয়োগ পত্র প্রদান করা হয়। নিয়োগপ্রাপ্ত মো. শাহাবুদ্দিন-এর বেতন ভাতা ছাড় করার জন্য গত ৪ এপ্রিল অনলাইনে আবেদন ছাড় করা হয়েছে। বেতন ভাতা উত্তোলনে জন্য মো. শাহাবুদ্দিন ইতিমধ্যে রুপালী ব্যাংক চরফ্যাসন শাখা সঞ্চয়ী হিসেবে খুলেছেন। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, নিয়োগ-যোগদান এবং অনলাইনে বেতন ভাতার জন্য আবেদন পর্যন্ত সব ধারাবাহিক মনে হলেও বিপত্তির কারণ বহুমূখী। সদ্যবিদায়ী সুপার মো.আবুল বাশার-এর অভিযোগ, গত ৩১মার্চ তিনি চাকুরী থেকে অবসরে যান। মাদ্রাসার সুপার পদ থেকে তিনি অবসরে যাওয়ার পর মাদ্রাসা ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. ইলিয়াছ তার(সদ্য বিদায়ী সুপার) এবং ডিজির প্রতিনিধির স্বাক্ষর জাল করে পেছনের তারিখ দেখিয়ে এই নিয়োগ সম্পন্ন করেছেন। এছাড়াও স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে দেয়া এই নিয়োগে নিয়োগপ্রাপ্ত সহকারি গ্রন্থগারিক কাম ক্যাটালগার মো. শাহাবুদ্দিনকে নিয়োগ দেয়া হলেও সনদপত্র ও পরিচয় ব্যবহার করা হয়েছে মো. শিহাব উদ্দিন নামে অপর ব্যক্তির। নিয়োগপ্রাপ্ত মো. শাহাবুদ্দিনের সহাকারি গ্রন্থগারিক পদে নিয়োগের জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ না থাকায় জালিয়াতির ভয়ংকর এই পন্থা অনুসরন করা হয়েছে বলে ধারনা করা হচ্ছে। সদ্য অবসরে যাওয়া সুপার আবুল বাশার এই নিয়োগ জালিয়াতির বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য গত ৭ এপ্রিল মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ম্যানেজিং কমটিরি এক সদস্য জানান, শাহাবুদ্দিননের নিয়োগ নিয়ে জাল জালিয়াতির বিষয়টি প্রকাশ্য চলে আসায় সে নিয়োগের বিষয়টি গোপন রেখে ফের ২০১৮ সনের তার নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি। অভিযোগ প্রসঙ্গে মাদ্রাসা ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো.ইলিয়াছ বলেছেন, শিহাব উদ্দিন নয় আমরা যথাযথ ভাবে মো. শাহাবুদ্দিনকে ওই পদে নিয়োগ দিয়েছি। একটি চক্র শাহাবুদ্দিনের সনদ সরিয়ে ফেলে নিয়োগ প্রক্রিয়া অন্যের সনদ দিয়ে শাহাবুদ্দিনকে জালসনদধারী প্রমান করাতে চেষ্টা করছে। শাহাবুদ্দিনে তো ফাজিল পাশের সনদ নাই সে তো সিহাব উদ্দিন নামের একজনের সনদ দিয়ে নিয়োগ নিয়েছেন এমন প্রশ্নের জবাবে ম্যানিজিং কমিটির সভাপতি কোন উত্তর দিতে পারনি। অর্থ লেনদেনের বিষয়টি মোটেও সঠিক নয়। অভিযোগ প্রসঙ্গে মো. শাহাবুদ্দিন জালজালিয়াতি করে নিয়োগ নেয়া প্রসঙ্গে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে তিনি বলেন ওই মাদরাসায় আমার কোন নিয়োগ হয়নি। তবে নিয়োগ না হলে তাকে নিয়োগ পত্র ও যোগদান পত্র কেন দেয়া হয়েছে এমন প্রশ্নের কোন উত্তর তিনি দিতে পারেনি। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো.মহিউদ্দিন জানান, চরফ্যাসনে আমি নতুন যোগদান করেছি। দক্ষিণ শিবা জামিলা ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার সহকারী গ্রন্থগারিক কাম ক্যাটালগার ওই নিয়োগটা আমার যোগদানের আগেই হয়েছে। তবে বিল বেতনের জন্য অনলাইনে আবেদনের সময় আমি ছিলাম। নিয়োগ প্রক্রিয়ার সব কাগজ পত্র ঠিক আছে কিনা সেটা আমি দেখেছি। কিন্তু সনদ গুলোতে কোন জালতালিয়াতি আছে কিনা সেটা দেখার সুযোগ আমার নাই। জাল জালিয়াতি করে নিয়োগের বিষয়টি যখন আলোচনায় আসে তখন আমি মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের মহাপরিচালকে বিষয়টি জানিয়েছি। তিনি সনদ ও সব বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবেন।
Leave a Reply