দখিনের খবর ডেস্ক ॥ অতিমারী করোনার মধ্যেও ডিজিটাল নিরাপত্তার মতো ‘কালো আইন’ সাংবাদিক ও বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অপপ্রয়োগে করে সরকার তার ফ্যাসিবাদী চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এনটিভি’র খুলনা ব্যুরো প্রধান আবু তৈয়ব মুন্সী এবং ফেনী ও নোয়াখালীর চাটখিলে নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা, গ্রেপ্তার ও হয়রানির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে গতকাল শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে তিনি এ মন্তব্য করেন। বিবৃতিতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলসহ গ্রেপ্তারকৃত সংবাদিকসহ বিএনপি নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, হয়রানি বন্ধসহ নিবর্তনমূলক জোর দাবি জানান মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘অনৈতিক সরকারের ব্যর্থতা, অযোগ্যতা, দমন-নিপীড়ণ, গণতন্ত্র ও গণবিরোধী কার্যকলাপ এবং ক্ষমতাসীন দলের মন্ত্রী, এমপি ও নেতাকর্মীদের দুর্নীতি, লুটপাট, অনৈতিকতা, অনিয়ম, বেপরোয়া আচরণ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখালেখির জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে লেখক, সাংবাদিক, কবি, কার্টুনিষ্ট, মানবাধিকার ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীদেরকে গ্রেপ্তার ও তাদের ওপর ধারাবাহিক নিষ্ঠুর জুলুম চলছে।’ বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘গণতান্ত্রিক অধিকার খর্বের পর এখন এই কালো আইন ব্যবহার করা হচ্ছে, যাতে মানুষ নিজেদের কষ্ট ও ক্ষোভ ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে ব্যক্ত করতে না পারে। যারা স্বাধীনভাবে গণমাধ্যমে নিজের মত প্রকাশের চেষ্টা করছে কিংবা বিরোধী দলীয় নেতাকর্মী যারা সরকারবিরোধী আন্দোলনে অংশ নিচ্ছে তাদের জীবনে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নিষ্ঠুর কালাকানুনের দ্বারা নেমে আসছে ভয়ঙ্কর দুর্বিষহ পরিণতি।’ বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই বলেন, ‘এরই ধারাবাহিকতায় ভোট ডাকাতির নির্বাচনে মেয়র ও তার স্বজনদের দুর্নীতি, অনৈতিক ও বেআইনি অপকর্মের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের জন্য খুলনা প্রেসক্লাবের সাবেক সহ-সভাপতি, এনটিভি’র ব্যুরো প্রধান আবু তৈয়ব মুন্সীর বিরুদ্ধে মিথ্যা ও সাজানো মামলা দায়ের, গ্রেপ্তার ও তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। গণমাধ্যমের স্বরকে নিস্তব্ধ করার অংশ হিসেবেই ভোট ডাকাতির নির্বাচনে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক’র ষড়যন্ত্রে সাংবাদিক আবু তৈয়ব মুন্সীকে ফাঁসানো হয়েছে।’ দলীয় নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার মামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ফেনী জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক গাজী হাবিবুল্লাহ মানিক, স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন দোলন, ছাত্রদলের সভাপতি সালাউদ্দিন মামুন এবং ছাত্রদল কর্মী এমরানুল হকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। নোয়াখালীর চাটখিলের রামনারায়ণপুর ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক আব্দুল করিম পাটোয়ারী মিন্টু এবং ফেনীর ছাগলনাইয়া পৌর বিএনপি নেতা ও সাবেক কমিশনার জয়নাল আবেদীন ফারুককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এছাড়া, ফেনীর ছাত্রদল কর্মী এমরানুল হকের জামিন নামঞ্জুর করে তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। আওয়ামী সরকারের এসব ন্যাক্কারজনক ঘটনা চলমান ভয়াবহ দুঃশাসনের খণ্ড চিত্র মাত্র।’
Leave a Reply