পিরোজপুর প্রতিনিধি ॥ পিরোজপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম এমপিকে নিয়ে বিভিন্ন অ্যাপসের মাধ্যমে কল্পিত কাহিনি তৈরি করে ফেসবুক ও মেসেঞ্জারে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বেশ কিছুদিন ধরে এসব ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে একটি চক্র। বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকায় তোলপাড় চলছে। আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার হায়াতুল ইসলাম খান। বিভিন্ন সূত্র ও এলাকার অনেকেই জানান, মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম পিরোজপুর-১ আসন থেকে এমপি হওয়ার পর একের পর এক উন্নয়নমূলক কাজে হাতে দেন। মাদক সিন্ডিকেট, ঘুষ, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধে এক ধরনের জেহাদ ঘোষণা করেন। দীর্ঘদিনের নিয়োগ বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি বন্ধে মুখ্য ভূমিকা পালন করেন। এসব কারণে বেশ কিছুদিন ধরে একটি চক্র তার বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র করে আসছিল। সাবেক এমপি এ কে এম এ আউয়াল ব্যক্তিগতভাবে তাকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেন। তার অনুসারীরাও সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন সময় অহেতুক সমালোচনায় সরব ছিলেন। এবার ভিন্ন কৌশলে এক অজ্ঞাত নারীকে ব্যবহার করে রেডিও গুলিস্তান, ডিজিটাল বাংলার জয়, ঢাকা অনলাইন, ডেইলি পিরোজপুরসহ বেশ কয়েকটি পেইজের মাধ্যমে বানোয়াট খবর ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া তার ছোট ভাই এস এম নুরে আলম সিদ্দিকীকে নিয়েও অপপ্রচার চালাচ্ছে চক্রটি। এ ব্যাপারে মন্ত্রীর ছোট ভাই এস এম নুরে আলম সিদ্দিকী জানান, রাজনৈতির প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে পিরোজপুরের একটি রাজনৈতিক অপশক্তি আমাদের পরিবারের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা ও বানোয়াট অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে। হঠাৎ করে মাদক সিন্ডিকেট, ঘুষ, দুর্নীতি বন্ধ, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসীদের আধিপত্য খর্ব হওয়ায় উত্তেজিত হয়ে ওই সিন্ডিকেট আমাদের পরিবারের ইমেজ নষ্ট করার চক্রান্ত করছে। এ বিষয়ে নাজিরপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি এবং ঢাকার সিআইডি পুলিশ বিভাগের সাইবার ক্রাইম ইউনিটে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। এদিকে ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ থেকে প্রতিবাদ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আক্তারুজ্জামান ফুলু বলেন, মন্ত্রী দালাল-বাটপার পোষেন না। তিনি জনসম্পৃক্ত হয়ে দীর্ঘদিনের জমে থাকা অন্ধকার সাফ করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। শ্রমিকদের চাঁদামুক্ত করেছেন। হাত দিয়েছেন জরাজীর্ণ পিরোজপুরের উন্নয়নে। এতে একটি পক্ষের স্বার্থে ঘা লাগায় তারা এসব হীনচক্রান্তে লিপ্ত হয়েছেন। আমাদের দাবি, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এদেরকে আইনের আওতায় আনুক। এ ব্যাপারে পিরোজপুর-২ আসনের সাবেক এমপি অধ্যক্ষ শাহ আলম বলেন, মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমের জনপ্রিয়তা সহ্য না করতে পেরে একটি কুচক্রী মহল এসব কুরুচিপূর্ণ, ভিত্তিহীন, অবিশ্বাস্য ও আপত্তিকর তথ্য প্রচারের ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। তিনি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, এর সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও স্থানীয় জনসাধারণসহ অন্য সব রাজনৈতিক দলের নেতারাও প্রতিবাদ করেছেন। এ ব্যাপারে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম এমপি বলেন, সংসদ সদস্য নির্বাচিত ও মন্ত্রী হওয়ার পর আমি এলাকার প্রত্যেকটি কাজে জনগণের কাছে নিজেকে স্বচ্ছ আয়নার মতো পরিষ্কার রেখেছি। সুযোগ দিনি অবাধে মাদক ব্যবসার। চাঁদাবাজি বন্ধ করেছি। নিয়োগবাণিজ্য, টেন্ডারবাজি বন্ধ করে দিয়েছি। এসব সহ্য না করতে পেরে আমার বিরুদ্ধে যারা এসব করছেন, তারা শেষ পর্যন্ত সফল হতে পারবেন না। একটি মিথ্যা দিয়ে হাজারটা সত্যকে ঢেকে দেওয়া যায় না। এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার হায়াতুল ইসলাম খান বলেন, বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। খোঁজখবর নিচ্ছি। এ ঘটনায় আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
Leave a Reply