ভোলা প্রতিনিধি ॥ ভোলায় দুই দিনে পৃথক তিন শিশু-কিশোরকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার দিনদুপুরে দৌলতখান ও লালমোহন উপজেলায় দুই শিশু এবং মঙ্গলবার রাতে বোরহানউদ্দিনে অপর এক শিশু ধর্ষণের শিকার হয়। তবে বুধবার পর্যন্ত অভিযুক্ত কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, মঙ্গলবার রাতে বোরহানউদ্দিন উপজেলার কুঞ্জেরহাট এলাকার চকডোস গ্রামে জাকির হোসেন নামে সৌদি প্রবাসী এক যুবক প্রেমের অভিনয় করে ৯ম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ উঠেছে। ভিকটিমের স্বজনরা জানান, প্রায় একমাস আগে পার্শ্ববর্তী এলাকার সৌদি প্রবাসী মো. জাকিরের সাথে একটি বিয়েবাড়িতে ওই ছাত্রীর প্রথম পরিচয় হয়। ওই পরিচয়ের সূত্র ধরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মঙ্গলবার রাতে জাকির ভিকটিমের বাড়িতে আসেন। তখন ঘরে কেউ না থাকার সুযোগে জাকির ওই ছাত্রীটিকে অজ্ঞাত ওষুধ খাইয়ে ধর্ষণ করেন। এরপর পালিয়ে যান। পরে স্বজনরা এসে অচেতন অবস্থায় কিশোরীকে উদ্ধার করে প্রথমে বোরহানউদ্দিন হাসপাতালে এবং পরে ভোলা সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে। ভোলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার সিরাজ উদ্দিন জানান, যৌন নির্যাতনের শিকার হিসেবে হাসপাতালে ভর্তি করার পর ভিকটিমের মেডিকেল টেস্ট করা হয়েছে। এদিকে বোরহানউদ্দিন থানার ওসি মাজাহারুল আমিন জানান, ভিকটিমের পরিবারকে মামলা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অপরদিকে সোমবার দুপুরে দৌলতখান উপজেলার দক্ষিণ জয়নগর এলাকায় অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীকে তার চাচাতো ভাই ধর্ষণ করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ভিকটিমের বাবা বাদী হয়ে বুধবার দৌলতখান থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ আইনে মামলা দায়ের করেন। দৌলতখান থানা পুলিশ বুধবার ভিকটিমকে নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ ডেস্কের তত্ত্বাবধানে মেডিকেল টেস্টের জন্য ভোলা সদর হাসপতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। ভিকটিমের স্বজনরা জানান, সোমবার দুপুরে তার বাবা-মা তাকে ঘরে একা রেখে পাশের বাড়ি কাঠ আনতে যান। তখন চাচাতো ভাই ঘরের ভেতর ঢুকে শিশুটিকে ধর্ষণ করেন। তখন তার মা পাশের বাড়ি থেকে এসে ঘরে প্রবেশ করলে ধর্ষক তার মাকে ধাক্কা মেরে পালিয়ে যান। ঘটনার পর ধর্ষক গা ঢাকা দিয়েছেন। এ ব্যাপারে দৌলতখান থানার ওসি বজলার রহমান বলেন, মামলা প্রক্রিয়াধীন। মামলার বর্ণনা অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে মঙ্গলবার সকালে লালমোহন উপজেলার পশ্চিম চর উমেদ ইউনিয়নের গজারিয়া এলাকায় রিয়াজ নামের দুই সন্তানের জনক ১২ বছরের শিশুকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় রিয়াজকে আসামি করে বুধবার লালমোহন থানায় মামলা করেছেন শিশুটির মা। ভিকটিমকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য বুধবার ভোলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয় বলে জানা গেছে। মামলার এজাহার সূত্র ধরে লালমোহন থানার ওসি মাকসুদুর রহমান মুরাদ জানান, পশ্চিম চর উমেদ ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের সংশদি বাড়ির ফারুকের ছেলে রিয়াজ ওরফে রিয়াদ ধান ক্ষেতে কাজ করতে যান। সকাল ৮টার দিকে পানি খাওয়ার অজুহাতে রিয়াদ ধান ক্ষেতের পাশের একটি ঘরে ঢুকেন। ওই সময় ঘরে আর কেউ না থাকার সুযোগে শিশুটিকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে পালিয়ে যান তিনি। তাৎক্ষণিক বিষয়টি স্থানীয়দের জানালে তারা স্থানীয়ভাবে ফয়সালার কথা বলেন। কিন্তু ফয়সালা না হওয়ায় বুধবার শিশুর মা থানায় এসে মামলা করেন। আসামি রিয়াদকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
Leave a Reply