দখিনের খবর ডেস্ক ॥ সরকারি সব সংস্থাকে নিজেদের টাকায় চলার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।তিনি বলেছেন, নিজেরা যে টাকা আয় করে, সেই টাকা দিয়ে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হবে। বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশনস কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল), বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের মতো সবাইকে চলতে হবে। মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় তিনি এ নির্দেশনা দেন। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গণভবন থেকে শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষের সঙ্গে যুক্ত হয়ে বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এনইসি সম্মেলন কক্ষে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও সচিবরা উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। একনেক বৈঠকে দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের উদ্ধৃতি দিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সরকারি সংস্থাগুলো তো নিজেরা আয় করে। তাহলে যে টাকা আয় করে, সেই টাকা দিয়ে কেন চলতে পারে না। কেন সরকারের দিকে মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হয়। সরকারি সংস্থাগুলোকে নিজেদের পায়ে দাঁড়ানো এবং স্বাবলম্বী হওয়ার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকারি কোষাগার থেকে সংস্থাগুলোকে টাকা দেওয়া হবে না বলেও জানান পরিকল্পনামন্ত্রী। সরকারি সংস্থাগুলো কীভাবে চলবে- এ প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, আপনি ব্যবসা করবেন, সেখানে তো আমি গিয়ে বুদ্ধি দিতে পারি না। আপনি ব্যবসা করেন, তাই আপনিই বুদ্ধি খাটিয়ে কাজ করুন। সকাল-সন্ধ্যায় যদি মন্ত্রী-সচিবরা সংস্থাগুলোকে বুদ্ধি দিতে যান, সেটা নিশ্চয়ই ভালো দেখাবে না। একনেক গতকাল (মঙ্গলবার) ১১ হাজার ৯০১ কোটি ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ১০টি প্রকল্প অনুমোদন করেছে। এসব প্রকল্পের মধ্যে সরকারি অর্থায়ন আট হাজার ৯৯১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। বৈদেশিক উৎস থেকে ঋণ দুই হাজার ৯৯ কোটি ৯১ লাখ টাকা। আর সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৮০৯ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। প্রকল্পগুলো হলো- ৯৫ কোটি ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহে টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক স্থাপন (প্রথম পর্যায়); ৯১২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ে সাইনবোর্ড-মোড়েলগঞ্জ-রায়েন্দা-শরণখোলা-বগী সড়কের পানগুচি নদীর ওপর পানগুচি সেতু নির্মাণ; এক হাজার ৬৪৯ কোটি ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ে উপজেলা পর্যায়ে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম (দ্বিতীয় পর্যায়) প্রকল্প; ৫২৪ কোটি ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তরের বহুতল ভবন নির্মাণ; ১৯৪ কোটি ৮৫ লাখ টাকা ব্যয়ে (সর্বমোট ব্যয় ১৫৬১ কোটি ১৮ লাখ টাকা) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল স্থাপন (প্রথম সংশোধিত); ৩৩৮ কোটি ৫৪ টাকা ব্যয়ে রাঙ্গামাটি জেলার কারিগর পাড়া থেকে বিলাইছড়ি পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন ও ব্রিজ/কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্প; আড়াই হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও চাঁদপুর জেলার গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প; এক হাজার ১৫৮ কোটি ৩৬ লাখ টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রাম জেলার পটিয়া উপজেলার বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্প; এক ৪৫২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ে তিস্তা সেচ প্রকল্পের কমান্ড এলাকার পুনর্বাসন ও সম্প্রসারণ প্রকল্প এবং তিন হাজার ৭৬ কোটি ২২ লাখ টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন ও ক্ষমতাবর্ধন (খুলনা বিভাগ) প্রকল্প।
Leave a Reply