গৌরনদী প্রতিনিধি ॥ দীর্ঘ সাড়ে চার মাসের কৃষকের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল বোরো ধান কৃষকের গোলায় উঠতে শুরু করায় কৃষকের মনে আনন্দের বন্যা বইছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে এবছর সবচেয়ে বেশি বোরো আবাদ হয়েছে বরিশাল জেলার আগৈলঝাড়া, গৌরনদী ও উজিরপুর উপজেলায়। ইতিমধ্যে বাগেরহাট, মাদারীপুর ও রাজবাড়ীসহ দূরবর্তী জেলা থেকে আগত শ্রমিকরা এসব উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করে কৃষকের পাকা বোরো ধান কাটতে শুরু করেছেন। এমনকি মেশিনের সাহায্যে চলছে ধান কর্তনের কাজ। এছাড়াও স্থানীয় গ্রামীণ কৃষক-কৃষানীরা সকাল থেকে শুরু করে সন্ধ্যা পর্যন্ত পাকা ধান কর্তন, ঝাড়াই-মাড়াই, সিদ্ধ ও গো-খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত কুটো শুকাতে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন। একাধিক কৃষকদের সাথে আলাপকালে জানা গেছে, গত বছর বোরোর ফলন ভাল হয়েছিলো। এবছর কালবৈশাখি ঝরের প্রভাবে ধানে চিটের পরিমান বেশি। তারা আরও জানান, হারভেষ্টার জাতীয় মেশিন দিয়ে পাকা বোরো ধান মাড়াই করা হলে ধানের খর (কুটো) ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে বছরের শেষে গো-খাদ্যের সংকট দেখা দেয়। এজন্য অধিকাংশ কৃষকরা ধান মাড়াইয়ের জন্য বিকল্প মেশিন ব্যবহার করছেন। ধান কাটতে আসা একাধিক শ্রমিকরা জানান, দেশি প্রজাতির ধানের চেয়ে এবছর হাইব্রিড ধানের ফলন ভালো হয়েছে। সব মিলিয়ে তাদের (শ্রমিক) শ্রমমূল্যে পুষিয়ে নিতে পারবেন। গৌরনদী উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ মামুনুর রহমান জানান, এবছর গৌরনদী উপজেলার ছয় হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন প্রজাতির বোরো আবাদ হয়েছে। বৃষ্টিপাত কম হওয়ার কারনে ধানে চিটার পরিমান বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে গৌরনদী উপজেলায় বোরোর ভাল ফলন পাওয়া যাবে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক হৃদয়েশ্বর দত্ত জানান, চলতি বোরো মৌসুমে বরিশাল জেলায় ৫২ হাজার ৮শ’ ৮২ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। এরমধ্যে ২৫ হাজার ১৪২ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড, ২৫ হাজর ১০ হেক্টর জমিতে উফসি ও দুই হাজার ৩০ হেক্টর জমিতে স্থানীয় জাতের বোরো আবাদ হয়েছে। তিনি আরও জানান, গত বছর কৃষকরা ধানের ন্যায্যমূল্যে পাওয়ায় এবছর অনাবাদি জমিগুলোও বোরো চাষের আওতায় এসেছে। ফলে জেলায় বোরোর কাঙ্খিত লক্ষামাত্রা অর্জিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
Leave a Reply