বিনোদন ডেস্ক ॥ গত বছরের দুটি ঈদে মুক্তি পায়নি নতুন কোনো ছবি। আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতরেও নতুন ছবি মুক্তি নিয়ে রয়েছে শঙ্কা। তাই ঈদুল আজহাতে সিনেমা মুক্তি নিয়ে জটিলতা তৈরি হওয়ার আশঙ্কায় নির্মাতারা। বিশেষ করে ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে নির্মিত ছবিগুলোর মুক্তি নিয়ে তৈরি হবে জটিলতা। চলচ্চিত্র-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, স্বাভাবিক সময়ে ছবি দিয়ে বিনিয়োগ উঠে আসে না। নির্মাতা ও প্রযোজকদের দুই ঈদে ছবি মুক্তির পরিকল্পনা থাকে। গত বছর দুটি ঈদে কোনো ছবি মুক্তি পায়নি। সে ছবিগুলো প্রযোজকদের কাছে জমা আছে। নতুন করে ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে বেশ কিছু সিনেমা। এখন লকডাউনের কারণে সিনেমা মুক্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। যদি ঈদুল ফিতরে ছবি মুক্তি না পায়, তবে ঈদুল আজহায় ছবি মুক্তিতে জটিলতা তৈরি হবে। ঈদুল আজহায় বেশ কয়েকজন নির্মাতা ছবি মুক্তির পরিকল্পনা করছেন। কিন্তু এ জটিলতায় নতুন সংকট তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন তাঁরা। কারণ, ইতিমধ্যে ঈদুল ফিতরে মুক্তির পরিকল্পনায় থাকা বেশ কিছু ছবি মুক্তির সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে। ‘অপারেশন সুন্দরবন’ ছবির নির্মাতা দীপংকর দীপন বলেন, ‘এই ঈদে কোনো সিনেমা মুক্তি না পেলে, স্বাভাবিকভাবে ওই নির্মাতারা চাইবেন পরের ঈদে মুক্তি দিতে। কারণ, আগামী এক বছরের মধ্যে এটিই একমাত্র বড় উৎসব। কেউই সিনেমা ফেলে রাখতে চাইবেন না। এদিকে ঈদুল আজহার সিনেমা নিয়ে আমরা প্রস্তুত আছি। এখন দুই ঈদের সিনেমা নিয়ে একটা জট লেগে যাবে। সব কটিই বড় বাজেটের সিনেমা। সবাই চাইবেন সিনেমা মুক্তি দিতে। এদিকে হল কম, বিশাল লগ্নি। সিনেমাটাও দর্শকের কাছে পৌঁছানো দরকার। সবকিছু নিয়ে দুশ্চিন্তা হচ্ছে।’ ঈদুল ফিতরের মুক্তির তালিকায় আছে বিদ্রোহী, মিশন এক্সট্রিম, শান, বিক্ষোভ, অন্তরাত্মাসহ একাধিক সিনেমা। এসব সিনেমার প্রযোজক এখনো পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। কেউ কেউ মনে করছেন, করোনার আতঙ্কের মধ্যে ছবি মুক্তির ঝুঁকি নেবেন না। পরের ঈদে কিংবা অন্য কোনো সময়ে মুক্তির চিন্তা করবেন। জ্বীন, আগামীকাল, বিউটি সার্কাসসহ বেশ কিছু সিনেমা প্রাথমিকভাবে ঈদুল আজহায় মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। ঈদুল ফিতরে কোনো সিনেমা মুক্তি না পেলে, এসব সিনেমার প্রযোজক চাপে পড়বেন। বিউটি সার্কাস ছবির পরিচালক মাহমুদ দিদার বলেন, ‘আমাদের সব কাজ প্রায় শেষ। ঈদুল আজহার জন্য প্রস্তুত। এখন ঈদুল আজহায় যদি সিনেমা নিয়ে জট লেগে যায়, তাহলে সুবিধাজনক কোনো ফাঁকা সময়ে মুক্তি দেব।’নির্মাতা রায়হান রাফি জানান, তাঁর দুটি সিনেমা প্রস্তুত। পরিস্থিতি ভালো দেখে ভেবেছিলেন, একটি ঈদুল ফিতরে মুক্তি দেবেন। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে মুক্তি দিতে সাহস পাচ্ছেন না তিনি। রাফি বলেন, ‘এখন সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক থাকবে। এমন পরিস্থিতিতে কোনো প্রযোজক ছবি মুক্তি দিয়ে ব্যবসায়িকভাবে চাপে থাকতে চাইবেন না। ভেবেছিলাম, এবার ঈদে হল খোলা থাকবে। তাহলে প্রস্তুত থাকা সিনেমাগুলো মুক্তি পেতে পারত। এখন সামনে এত সিনেমা জমেছে যে মুক্তি নিয়ে আশঙ্কায় রয়েছি।’ ঈদকে কেন্দ্র করে একটা উৎসবমুখর পরিবেশ থাকে চলচ্চিত্রপাড়ায়। দুই বছর ধরে ঈদে চলচ্চিত্র অঙ্গন ছিল নির্জীব। প্রযোজক ও পরিদর্শক সূত্রে জানা গেছে, চলতি মাসে কোনো সিনেমা মুক্তির জন্য এখনো আবেদন করেননি কেউ। তাই ছবি মুক্তির জন্য ঈদুল আজহার ওপর ক্রমেই যেন নির্ভরশীলতা বাড়ছে। এদিকে গত মাসে শামীম আহমেদ রনির ‘বিদ্রোহী’ ও এফ আই মানিকের ‘সৌভাগ্য’ সিনেমা দুটি ঈদে মুক্তির জন্য আবেদন করেছিল।
Leave a Reply