বিশেষ প্রতিনিধি ॥ মুলাদীতে সর্বরোগের চিকিৎসার নামে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণার অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার সফিপুর ইউনিয়নের ব্রজমোহন গ্রামের মৃত নাজেম আলী সরদারের পুত্র সোলেমান সরদার ওরফে সোলেমান ফকির দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে চিকিৎসার নামে প্রতারণা চালিয়ে আসছেন। স্থানীয় প্রবীন ব্যক্তিরা জানান কোনো প্রকার লেখাপড়া কিংবা আরবি না জানলেও ৩০ বছর আগে সোলেমান ফকিরের আর্বিভাব ঘটে। প্রথম দিকে এলাকায় সাধারণ মহিলাদের জিনে ধরা, ভুতে ধরা, জাদুটেনা, বানটোনার চিকিৎসার শুরু করেন। অভিজ্ঞতা ! বাড়ার সাথে সাথে সোলেমান ফকিরের চিকিৎসার পরিধিও বাড়তে শুরু করে। বর্তমানে তিনি ঝাড়ফুঁক চিকিৎসার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্থ লিভার, জন্ডিস, কিডনি, হৃদরোগ, ক্যান্সারসহ সকল প্রকার রোগের চিকিৎসা করে থাকেন। লোকমুখে সোলেমান ফকিরের কেরামতির কথা শুনে প্রতিদিন ৮/১০জন রোগী আসেন। ফকির প্রথমে রোগীকে বিভিন্ন প্রকার অশরীরী ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নেন। এ ছাড়া তিনি গোপন আস্থানায় মহিলা রোগীদের একাকী চিকিৎসার নামে অনৈতিক কাজ করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। রোগীরা ভালো হয় কীনা জানলে চাইলে সোলেমান ফকিরের দাবী তিনি অনেক রোগী সুস্থ করে তুলেছেন। কিন্তু বাস্তবতার চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। লোকমুখে সোলেমান ফকিরের কেরামতির কথা শুনে দূর দূরন্ত থেকে রোগীরা ছুটে আসলেও কোনো রোগী তার চিকিৎসায় সুস্থ হয়েছেন কিনা তা জানে কেউ। গোসাইরহাট উপজেলার নলমুরি ইউনিয়নের কোদালপুর গ্রামের কাসেম হাওলাদারের স্ত্রী মাজেদা বেগম জানান, তার মেয়ে মানসিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে লোকমুখে শুনে সোলেমান ফকিরের কাছে নিয়ে আসেন। মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে দীর্ঘ ৪ মাস ধরে চিকিৎসার পরেও তার মেয়ে সুস্থ হয়ে ওঠেনি। হিজলা উপজেলার ছয়গাও গ্রামের ছত্তার বেপারীর স্ত্রী নূরজাহান জানান, ডাক্তার তার লিভারের সমস্যার কথা বলায় জনৈক মহিলার কথায় সোলেমান ফকিরের কাছে আসেন। সোলেমান ফকির তার কাছ থেকে ৮ হাজার টাকা নিয়ে ঝাড়ফুঁক ও পানি পড়া দিয়েছেন কিন্তু তিনি এখনও সুস্থ না হয়ে উল্টো বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। ভেদুরিয়া গ্রামের মৎস্যজীবী জাকির হোসেন বলেন, তিনি তার অসুস্থ স্ত্রী জান্নাত আরাকে নিয়ে সোলেমান ফকিরের কাছে গেলে তিনি জানান জান্নাতকে জাদুটোনা করা হয়েছে। ১০ হাজার টাকা নিয়ে দীর্ঘ আড়াই মাস চিকিৎসার পরেও সুস্থ্য না হওয়ায় ঢাকায় নিয়ে ডাক্তার দেখানোর পরে জান্নাত আরা সুস্থ হয়েছেন। এ ব্যাপারে সোলেমান ফকির চিকিৎসার নামে প্রতারণার বিষয়টি অস্বীকার করে জানান তিনি সুনামের সাথে দীর্ঘ ৩০ বছর সর্বরোগের চিকিৎসা করে আসছেন। মুলাদী থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ এস.এম মাকসুদুর রহমান জানান ভন্ড ফকিরের প্রতারণার বিষয়টির খোজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply