পিরোজপুর প্রতিনিধি ॥ ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে নদ-নদীর অতিরিক্ত জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে অন্তত বিশটি গ্রাম। ইন্দুরকানি উপজেলার ৯৪ কিলোমিটার বাঁধের বেশির ভাগ ক্ষতিগ্রস্ত ছিল আগে থেকেই। ইয়াসের প্রভাবে পানির চাপে ভেঙে গেছে বাকি বেড়িবাঁধগুলোও। এতে প্লাবিত হয়েছে উপজেলার কচা ও বলেশ্বর নদের তীরবর্তী প্রায় বিশটি গ্রাম। হাট-বাজার, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও ঘর-বাড়ির সামনে পানি থই থই করছে। সবজিক্ষেত, কলাবাগান, পানের বরজও তলিয়ে রয়েছে পানিতে। অনেকের বাড়ির উঠান, বাগান ও ঘরবাড়িতে পানি আসায় গরু, ছাগল, মহিষ ও হাঁস-মুরগি স্থানীয় সাইক্লোন শেল্টারসহ নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয় গতকাল। বৃহস্পতিবারও পানি না নামায় দুর্ভোগে রয়েছে এ উপজেলার কয়েক হাজার মানুষ। বৃহস্পতিবার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে জানা যায়, উপজেলার টগরা, চারাখালী আবাসন, পাড়েরহাট আবাসন, কলারন জাপানি ব্যারাক, কালাইয়া, উত্তর কলারণ, পূর্ব চর বলেশ্বর, পূর্ব চণ্ডীপুর, বালিপাড়া, খোলপেটুয়া ও সাউদখালী গ্রাম প্রতিরক্ষা বাঁধের অধিকাংশ স্থানই ভাঙা রয়েছে। ভাঙা বাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে। পানিতে প্লাবিত হওয়ায় বিভিন্ন গ্রামের পুকুর ও ঘেরের মাছ ভেসে গেছে। এতে লোকসানের মুখে পড়েছেন শত শত মাছচাষি। এদিকে, জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়ে গেছে উপজেলার চণ্ডীপুর হাট পাড়েরহাট বাজার এলাকা। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে বাজারের ব্যবসায়ী ও ক্রেতাসাধারণ। ইন্দুরকানী উপজেলার টগরা গ্রামের বাসিন্দা উপজেলা যুবলীগ নেতা কামরুজ্জামান শাওন তালুকদার এ প্রতিবেদককে জানান, কচা নদীতীরবর্তী টগরা গ্রামের প্রায় সাড়ে ৩০০ পরিবার রয়েছে। ইয়াসের প্রভাবে কচা নদীর অতিরিক্ত পানির চাপে এখানকার সব বাসিন্দার ঘর-বাড়িতে পানি উঠায় চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছে স্থানীয় সব বাসিন্দারা। জেলার ইন্দুরকানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হোসাইন মোহাম্মাদ আল মুজাহিদ জানান, জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় আমরা আগে থেকেই ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রেখেছি। উপজেলায় ১৯টি আশ্রয়কেন্দ্র এবং প্রতি ইউনিয়নে ১টি করে মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। গতকালই ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে শুকনো খাবার পাঠানো হয়। এখানে স্বেচ্ছাসেবক, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি এবং মেডিক্যাল টিমসহ উপজেলা প্রশাসন সার্বিকভাবে কাজ করছে। তিনি আরো জানান, তিন দিকে নদীবেষ্টিত উপজেলাটি। তা ছাড়া এ উপজেলার অধিকাংশ ভেড়ি বাঁধ ভাঙা। যার কারণে সহজেই পানি ঢুকে প্লাবিত হয়েছে নদীতীরবর্তী গ্রামগুলো।
Leave a Reply