নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ করোনা যোদ্ধা হিসেবে পরিচিতো বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের শতাধিক চিকিৎসক, নার্স ও সংশ্লিষ্ট অন্যদের জন্য সাতটি উন্নতমানে আবাসিক হোটেল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যেগুলোর মধ্যে রয়েছে নগরে বিলাসবহুল হোটেল। সেগুলো হলো গ্রান্ড পার্ক, হোটেল সেডোনা, হোটেল এরিনা, হোটেল এথেনা, হোটেল ইস্টার্ন, হোটেল আলি এবং রোদেলা। বরাদ্দকৃত এসব হোটেলের মধ্যে গ্রান্ড পার্কে ১০ জন চিকিৎসক এবং হোটেল সেডোনায় ২৭ জন ডাক্তার ও নার্স এরইমধ্যে উঠেছেন। পর্যায়ক্রমে অন্য হোটেলগুলোতে ডাক্তার-নার্সসহ অন্যরা উঠবেন বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
বরিশাল জেলা প্রশাসনের মিডিয়া সেল সূত্রে জানা যায়, করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বরিশালে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এর ধারাবাহিকতায় শুক্রবার থেকে দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম চিকিৎসাকেন্দ্র শেবাচিম হাসপাতালের শতাধিক চিকিৎসক, নার্স এবং অন্যদের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাতটি উন্নত ও থ্রি-স্টার মানের হোটেল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এতে করে করোনা ওয়ার্ডসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন স্থানে দায়িত্বরত চিকিৎসক, নার্সসহ অন্য স্টাফরা নিজের এবং তাদের পরিবারের সুরক্ষায় এসব হোটেলে নিয়মানুযায়ী থাকতে পারবেন। ফলে এসব করোনা যোদ্ধারা করোনা রোগীদের সেবা নিশ্চিত করার পাশাপাশি নিজের এবং তাদের পরিবারের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের।
বরিশালের জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান সাংবাদিকদের বলেন, শেবাচিমের চিকিৎসক-নার্সসহ অন্যরা যাতে নিজেরা সুস্থ থেকে করোনা রোগীদের সার্বক্ষণিক সেবা দিতে পারে সেজন্য এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জনস্বার্থে এ ধরনের উদ্যোগ অব্যাহত রাখার পাশাপাশি করোনা মোকাবিলায় যা যা করণীয় তার সব কিছুই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে করা হবে।
এদিকে শুক্রবার (০১ মে) সন্ধ্যায় বরিশালে শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ড এবং আইসোলেশন ইউনিটে চিকিৎসাধীন রোগীদের জন্য উপহার হিসেবে ইফতার সামগ্রী পাঠিয়েছেন জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান। শুক্রবার (০১ মে) সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসকের পক্ষে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জিয়াউর রহমান শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সহকারি পরিচালক ডা. একেএম নাজমুল আহসানের হাতে এই ইফতার সামগ্রী তুলে দেন। ইফতার সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে পাঁচ কেজি খেজুর, ১০ কেজি মাল্টা, ১০ কেজি আপেল, ৬০পিস লেবু, এক হাজার টাকার লবঙ্গ, দারচিনি ও এলাচি, ১ কেজি কালিজিরা, ২ কেজি আঁদা, ২০ কৌটা মধু, আড়াইশ গ্রাম ওজনের ২০ প্যকেট মুড়ি (৫ কেজি) এবং ২০ প্যাকেজ টিস্যুবক্স।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াউর রহমান সাংবাদিকদের জানান, হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে বিকেল পর্যন্ত নয়জন রোগী চিকিৎসাধীন ছিলেন। জেলা প্রশাসকের দেয়া ইফতার সামগ্রী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। তারা তাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় করোনা ওয়ার্ডের রোগীদের মধ্যে ইফতার সামগ্রী বিতরণ করবেন। ওই সামগ্রী দিয়ে করোনা ওয়ার্ডের রোগীরা অনেকদিন ইফতার করতে পারবেন। প্রয়োজনে তাদের জন্য আরও ফলমূল ও ইফতারি সামগ্রী দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসক।
এরআগে, জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসা কার্যক্রম নির্বিঘœ করার লক্ষে চিকিৎসক, নার্স ও চিকিৎসা কর্মীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে বাস সার্ভিস চালু করা হয়।
Leave a Reply