স্টাফ রিপোর্টার ॥ অপহরনের পর হত্যা করে লাশ গুমের নিরাপদস্থান, মাদক বিক্রেতাদের নিরাপদ রুট, জুয়ার আসর, ইজিবাইক ছিনতাইয়ের পর অচেতন করে চালকদের ফেলে যাওয়া, সর্বশেষ বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে নিখোঁজের একদিন পর এক ব্যবসায়ীকে মুমূর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের পাশ্ববর্তী বার্থী এলাকা থেকে। গৌরনদী উপজেলার বার্থী এলাকা এখন একটি আতঙ্কের জনপদে পরিনত হয়েছে। ওই এলাকায় একের পর এক অপরাধ সংঘটিত হলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের এখনও ঘুম ভাঙেনি। ফলে অপরাধীদের কাছে বার্থী এলাকা নিরাপদ রুটে পরিনত হয়েছে। এমনকি ওই এলাকার আলোচিত কোন ঘটনারই রহস্য উদ্ঘাটন করতে পারেনি পুলিশ। যেকারণে রহস্যে ঘেরা বার্থী এলাকা নিয়ে সচেতন বরিশালবাসীর মধ্যে নানাপ্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। সূত্রমতে, গৌরনদীতে দুইটি থানা (মডেল থানা ও হাইওয়ে থানা) থাকা সত্বেও অপরাধীরা নিবিঘ্নে মহাসড়কের বার্থী এলাকায় অপরাধ সংঘঠিত করার বিষয়টিও রহস্যজনক বলে মনে করছেন স্থানীয় সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দরা। তারা অনতিবিলম্বে বার্থী এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিশেষ অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি প্রযুক্তির মাধ্যমে কঠোর নজরদারি বৃদ্ধির দাবি করেছেন। সর্বশেষ ২৭ মে রাতে নিখোঁজের একদিন পর কাওসার হোসেন (২৭) নামের এক ব্যবসায়ীকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের বার্থী এলাকার কটকস্থল পেট্টোল পাম্প সংলগ্ন এলাকা থেকে মুমূর্ষ অবস্থায় কাওসারকে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত কাওসার আগৈলঝাড়া উপজেলার পূর্ব পতিহার গ্রামের সৈয়দ রকিব হোসেনের পুত্র। তার (কাওসার) গৌরনদীতে তুবা টেলিকম এন্ড মোবাইল ব্যাংকিং বিকাশের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। গত ২৬ মে বিকেলে নিজ বাড়ি থেকে ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানে আসার পথে রহস্যজনকভাবে কাওসার নিখোঁজ হয়। এ ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেছিলেন নিখোঁজের মা তাসলিমা বেগম। এরপূর্বে নিখোঁজের পর মুক্তিপন দাবি, পরবর্তীতে সাতদিন পর মহাসড়কের পাশ্ববর্তী বার্থী হাইস্কুলের সামনের খালের কচুরিপানার মধ্যে গুম করে রাখা গলাকাটা অবস্থায় উজিরপুরের উত্তর মোড়াকাঠী এলাকার যুবক ইজিবাইক চালক মামুন রাঢ়ীর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বার্থী এলাকার অপর একটি খাল থেকে বস্তা ভর্তি অজ্ঞাত এক নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়। সম্প্রতি বার্থী এলাকার বিদ্যুত অফিসের পাশের জঙ্গল থেকে অজ্ঞান অবস্থায় এক ইজিবাইক চালককে উদ্ধার করা হয়েছে। বার্থী এলাকায় একের পর এক অপরাধ সংঘটিত হলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের এখনও ঘুম ভাঙেনি। ফলে অপরাধীদের কাছে বার্থী এলাকা একটি নিরাপদ রুটে পরিনত হয়েছে। যেকারণে রহস্যে ঘেরা বার্থী এলাকা এখন আতঙ্কের জনপদে পরিনত হয়েছে। এ ব্যাপারে গৌরনদী মডেল থানার ওসি মোঃ আফজাল হোসেন বলেন, ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের নির্জন ফাঁকা জায়গার মধ্যে বার্থী একটি অন্যতম এলাকা। ফলে অন্য কোনস্থান থেকে হত্যা কিংবা অজ্ঞান করে রাতের আঁধারে এই নির্জন এলাকায় ফেলে রেখে যাচ্ছে অজ্ঞাতনামা অপরাধীরা। যার প্রতিটি ঘটনার তদন্ত চলছে। তবে ক্লু বিহীন ঘটনা হওয়া প্রতিটি অপরাধের মুলরহস্য উদ্ঘাটনে সময় লাগছে। তিনি (ওসি) আরও বলেন, অপরাধীদের সনাক্ত করার মাধ্যমে নির্জন এলাকায় প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে আলোচনা চলমান রয়েছে।
Leave a Reply