দখিনের খবর ডেস্ক ॥ জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা জি এম কাদের বলেছেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়ে সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষের মধ্যে চাপা হাহাকার বিরাজ করছে। কিন্তু সরকার নির্বিকার যেন কিছুই করার নেই। শুধু টিসিবির মাধ্যমে ভর্তুকি দিয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয় বলেও তিনি মন্তব্য করেন। রোববার (৩০ মে) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ মন্তব্য করেন। বিবৃতিতে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, বিশ্ব বাজারে দাম বেড়েছে এ অজুহাতে প্রতিলিটার সয়াবিন তেলে ১২ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছে ব্যবসায়ীরা। এছাড়া চাল, ডালসহ খাদ্য পণ্যের দামও বেড়েছে। অথচ করোনাকালে কাজ হারিয়ে বেকার হয়েছে লাখ লাখ মানুষ। আয় কমেছে কয়েক কোটি মানুষের। বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, মাঝে মধ্যে টিসিবির মাধ্যমে গরিব মানুষের জন্য কিছু খাদ্যপণ্য বিক্রি করা হয়, তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। বর্তমান পরিপ্রেক্ষিতে টিসিরির পক্ষে কোনো পণ্যই চাহিদার তুলনায় যথেষ্ট পরিমাণ সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে টিসিবির মাধ্যমে ভর্তুকি দিয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। মুক্ত বাজার অর্থনীতিতে সেটা কাম্যও নয়। কেননা এতে তাৎক্ষণিকভাবে মূল্য হ্রাস হলেও দীর্ঘমেয়াদে পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে যেতে পারে যাতে সাধারণ ব্যবসায়ীরা বাজারজাতকরণে নিরুৎসাহিত হবে ও সরবরাহ ঘাটতি হয়ে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণহীন হতে পারে। শুধুমাত্র নিম্নবিত্ত জনসমষ্টিকে সহায়তা দেওয়ার জন্য ভর্তুকি হিসেবে সহনীয়মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য বিক্রি টিসিবির উদ্দেশ্য হওয়া উচিত। তবে সব দরিদ্র ও নব্য দরিদ্রদের মধ্যে যাতে এ সহায়তা পৌঁছে তা নিশ্চিত করতে হবে। জি এম কাদের বলেন, পরিকল্পিতভাবে চাহিদা অনুযায়ী পণ্যের সহজলভ্যতা ও সরবরাহ নিশ্চিত করে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এখানে দুটি জিনিসের ওপর বিশেষ দৃষ্টি দিয়েই মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রথমটি হলো সরবরাহকারীরা যাতে নিজেদের ভেতর সিন্ডিকেট সৃষ্টি করে বাজার মূল্যের নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে নিয়ে ইচ্ছা মতো দাম বাড়াতে না পারে। আর দ্বিতীয়টি হলো সরবরাহকারীরা যেন বিভিন্ন পর্যায়ে বারবার চাঁদা বা ঘুষ দিতে বাধ্য না হয়। এতে তাদের পক্ষে ন্যায্য দামে বিক্রি অসম্ভব হয়ে পড়ে। এগুলোই বর্তমান বাজার দর বাড়ার প্রধান কারণ বলে বিভিন্ন সূত্রে অভিযোগ পাওয়া যায়। তদারকি ও ব্যবস্থা গ্রহণ ছাড়া শুধুমাত্র টিসিরির ওপর নির্ভরশীল হয়ে বা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা ও তার মাধ্যমে জেল, জরিমানা করে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ কখনোই সম্ভব নয় বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
Leave a Reply