আগৈলঝাড়া প্রতিনিধি ॥ আগৈলঝাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কোভিড-১৯ রোগ নির্ণয় কার্যক্রমের জন্য জিন এক্সপার্ট মেশিন উদ্বোধন করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে উদ্ভাবিত জিন এক্সপার্ট প্রযুক্তির এ মেশিনের মাধ্যমে মাত্র ৫০ মিনিটে করোনাভাইরাস পরীক্ষা করা যাবে। জানা গেছে, শনিবার সকালে আগৈলঝাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কোভিড-১৯ রোগ নির্ণয় কার্যক্রমের জন্য জিন এক্সপার্ট মেশিন উদ্বোধন করেন বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডাঃ বাসুদেব কুমার দাস। সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ বখতিয়ার আল মামুনের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সহকারী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডাঃ শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল, উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রইচ সেরনিয়াবাত। এসময় উপস্থিত ছিলেন আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাঃ মামুন মোল্লা, ডাঃ মিজানুর রহমান, ডাঃ সৈকত জয়ধর, ডাঃ সাবিনা আফরোজ, ডাঃ তানজিলা আক্তার, ডাঃ নুর-ই-জান্নাত বাধন, মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট (ল্যাব) মোঃ রেমন, স্যানেটারী ইন্সেপেক্টর সুকলাল সিকদার, মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট (ইপিআই) মোঃ মিজানুর রহমান প্রমুখ। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিযুক্ত ব্র্যাকের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) মোঃ রেমন জানান, প্রাথমিক পর্যায়ে জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির অধীনে এই উপজেলায় করোনা ভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা শুরু হয়েছে। তিনি দাবি করেন, যেখানে পিসিআর ল্যাবে পরীক্ষা করতে আট ঘণ্টা সময় লাগে, সেখানে জিন-এক্সপার্ট মেশিনে নমুনা প্রক্রিয়াকরণ করতে পাঁচ মিনিট সময় লাগে এবং ৫০ মিনিটেই ফল পাওয়া যায়। পজিটিভ রোগীর ফলাফল ৩০ মিনিটে পাওয়া সম্ভব। নতুন এই পদ্ধতিতে ভিটিএম টিউব থেকে নমুনা সরাসরি কার্টিজে দেওয়া হয়। এক ধাপে নমুনা পরীক্ষা (টেস্ট) সম্পন্ন হয় এবং সরাসরি কম্পিউটার থেকে ফলাফল পাওয়া যায়। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ বখতিয়ার আল মামুন জানান, কম খরচে অধিক সংখ্যক পরীক্ষার জন্য জিন-এক্সপার্ট মেশিনে এখন থেকে এ উপজেলার জনগন সুফল ভোগ করতে পারবে। সহকারী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডাঃ শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল জানান, তুলনামূলক কম খরচ ও স্বল্প সময়ে অধিকসংখ্যক পরীক্ষার জন্য জিন-এক্সপার্ট মেশিনটি খুবই কার্যকর। এ পরীক্ষা ক্লিনিক্যাল মূল্যায়নে করোনাভাইরাস পজিটিভ ও নেগেটিভ রোগীর ক্ষেত্রে প্রায় শতভাগ সাফল্য পেয়েছে। জিন-এক্সপার্ট মেশিন ব্যবহার করে করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য ইতিমধ্যে অনুমোদন দিয়েছে ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ)। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) থেকেও অনুমোদন পাওয়া গেছে। বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডাঃ বাসুদেব কুমার দাস বলেন, চাহিদা অনুযায়ী কিটের সরবরাহ পাওয়ায় হাতের কাছেই নমুনা পরীক্ষার দ্বার খুলে গেলো। এখন এই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেই হবে করোনাভাইরাস সংক্রমণের পরীক্ষা। বরিশালে নমুনা পাঠিয়ে আর অপেক্ষা করতে হবে না। তিনি বলেন, নতুন পদ্ধতির এই টেস্ট দ্রুত কোভিড-১৯ শনাক্তকরণে ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ব্যবস্থা গ্রহণে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
Leave a Reply