নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ চাকরির প্রলোভনে নিজের ভাইয়ের মেয়েকে ঢাকার বাসায় নিয়ে আটকে রেখে যৌণ ব্যবসায় বাধ্য করা ও পরবর্তীতে দুই লাখ টাকায় বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। টানা পাঁচ মাস পর পালিয়ে গ্রামের বাড়িতে ফিরে সোমবার দিবাগত রাতে থানায় মামলা দায়ের করেছেন ভূক্তভোগী ওই যুবতী।
মামলায় ভূক্তভোগী নির্যাতিতা যুবতীর (১৯) চাচা সোহেল খান, ফুপু মেহেন্দীগঞ্জের ভাষানচর এলাকার বাসিন্দা নুপুর বেগম ও ফুপা নজরুল ইসলামকে আসামি করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে মামলা দায়েরের সত্যতা স্বীকার করে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের বন্দর থানার ওসি মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, অভিযুক্তদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশ অভিযান শুরু করেছে। এজাহারে উল্লেখ করা হয়, বরিশাল বন্দর থানা এলাকার বাসিন্দা এক ট্রলার চালকের কন্যা ওই যুবতীর ১৪ মাস আগে বিয়ে হয়েছিলো। দাম্পত্য কলহের জেরে বিয়ের দুই মাস পর স্বামীর বাড়ি ছেড়ে ওই যুবতী বাবার বাড়িতে চলে আসেন। বাবার আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় ফুপু নুপুর বেগম তাকে (যুবতী) ঢাকায় চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখায়। ফলে নয় মাস আগে চাচা সোহেল খানের সহায়তায় ওই যুবতী ঢাকার জুরাইন এলাকার শনিরআখড়ার ফুপুর বাসায় গিয়ে ওঠেন। ওই যুবতী অভিযোগ করে বলেন, চাকরির প্রলোভনে তাকে ঢাকায় নেয়া হলেও সেখানে গিয়ে দেখি ফুপু যৌণ ব্যবসার সাথে জড়িত। এ যৌণ ব্যবসার সাথে জড়িত অনেক ছেলে-মেয়ে তার বাসায় আসা যাওয়া করে। কয়েকদিন পর ফুপু ও ফুপা মিলে আমাকেও দেহ ব্যবসায় জন্য চাঁপ প্রয়োগ করে। আমি তাতে বাঁধা দিলে তারা আমাকে অমানুষিক নির্যাতন করে। দীর্ঘ পাঁচ মাস একটি কক্ষে আটকে রেখে তারা দেহ ব্যবসায় বাধ্য করায়। তখন মা ও বাবার সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলা হলেও তাদের শেখানো কথা বলতে হতো।
নির্যাতিতা যুবতী আরও বলেন, চার মাস আগে তাকে অন্য আরেকজনের কাছে দুই লাখ টাকায় বিক্রি করে দেয়া হয়। সেখানে কিছুদিন থাকার পর এক নারীর সহায়তায় তিনি পালিয়ে বরিশাল বন্দর থানার নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন।
ওই যুবতীর দিনমজুর পিতা বলেন, মেয়ে বাড়িতে ফিরে আসার পর আমার বোন ও তার জামাই এবং ভাই আমাকে তাদের বাড়িতে নিয়ে আটক করে রাখে। ওইসময় এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হবেনা বলে মুচলেকা দিয়ে আমি মুক্তি পাই। পরবর্তীতে অভিযুক্তরা আমার মেয়েকে মেরে ফেলার নানা ষড়যন্ত্র করায় উপায়অন্তুর না পেয়ে অবশেষে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
Leave a Reply