কাজী আবু যাঈদ
বরিশাল বিএনপিতে আধিপত্যবাধি নেতৃত্বের অবসান হওয়ায় আসন্ন বিসিসি নির্বাচনে তৃণমুল বিএনপিতে সরফুদ্দিন আহম্মেদ সান্টুকে মেয়র প্রার্থী করার দাবি প্রবল। এখনই ওয়ার্ডসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মাঝে সাংগাঠনিক কার্যক্রম শুরুর করার আগাম তাগিদ তৃণমুলের। একাধিক ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের সাথে কথা বললে তারা একথা জানান। এনিয়ে নগর বিএনপির তিন নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আব্দুল হক বলেন, সান্টু ভাই প্রার্থী হলে সমস্যা নেই কারণ সে সাধারণ মানুষের মন জয় করতে পেরেছে। যেকারণে সে স্বতন্ত্র প্রার্থী থেকেও ব্যাপক ভোট অর্জন করেছিলো। যদি সান্টু ভাইর মেয়র প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা থাকে তাহলে তার উচিত এখন থেকেই ওয়ার্ড পর্যায়ে বর্তমান ও সাবেক নেতাকর্মীদের নিয়ে সাংগাঠনিক কার্যক্রম করা তাহলে চুড়ান্ত সময়ে সুফল পাবেন। ২০০৮ সালের মেয়র নির্বাচনে ভোটের শেষে সান্টু ভাইকে বিজয়ী হিসেবে পুলিশ প্রটোকলও দেয়া হয়েছিলে। কিন্তু একপর্যায়ে তাকে পরিকল্পিতভাবে হাড়ানো হয়েছে। ঐসময় তার সাংগাঠনিক কাঠামো নাথাকায় তার অর্জিত বিজয় সে ধরে রাখতে পারেনি। তাই এখন থেকেই তার মহানগরে সাংগাঠনিক কাঠামো তৈরী করা উচিত এতে সে কেন্দ্রের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে বেশ সক্ষম হবে। এদিকে নগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক কাউন্সিলর জিয়া উদ্দিন সিকদার বলেন, অন ইলেভেনের প্রার্থীতা আর এখনকার প্রার্থীতা যদিও একবিষয় নয়। তবে সে ব্যক্তিগতভাবে খুব ভালো লোক অঢেল সম্পদের মালিক এবং দানবীরও। পদ তার কাছে লোভনিয় হবেনা। সর্বোপরি সে ভালো লোক আর ভালো লোক আসলে তো ভালোই হবে। এদিকে নগরীর সচেতনমহল মনে করেন, মহানগর এলাকার বাসিন্দাদের চাহিদা হলো একজন স্বচ্ছ ও যোগ্য নগরপিতা। যিনি নগরবাসির উন্নয়নে কাজ করবেন নির্মোহ হয়ে। উন্নয়নের নামে প্রকল্প বানিয়ে জনগণের অর্থ লোপাট করবেনা। এমনও দেখা যায় যে মেয়র হওয়ার আগে রিকশায় চলতো এরপর ব্যক্তিগতভাবে বিলাসবহুল গাড়ি ও একাধিক ব্যবসাসহ বিত্ত বৈভবের মালিক বনে যায়। এমনও দেখা গেছে, মেয়র হওয়ার আগে ঋণের দায়ে সম্পত্তি নিলামে তুলেছে ব্যাংক। কিন্তু মেযর হওয়ার পর নিলাম বাতিল হওয়ার পাশাপাশি সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলে। বিএনপির অন্যান্য নেতা থাকার পরেও শরফুদ্দিন আহম্মেদ সান্টুকে কেনো বিসিসি নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হিসেবে তৃণমুল বিএনপিতে আগ্রহ কেনো। এমন জিজ্ঞাসার ব্যাপারে সরেজমিনে দেখা গেছে, বিএনপির কেন্দ্রিয় মৎস্য বিষয়ক সম্পাদক আহসান হাবিব কামাল বিসিসির মেয়র ছিলেন গত পরিষদে। বার্ধক্যজনিত কারণে এবং সুঠাম নেতৃত্বের অভাবে দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে তেমন কোন জায়গা দখল করতে পারেনি। অপরদিকে সাবেক মেয়র ও সাবেক সাংসদ এবং বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মজিবর রহমান সরোয়ার আধিপত্যবাদি নেতৃত্বের কারণে তৃণমুলে গ্রহণযোগ্যতা কমে আসায় নগর বিএনপির কমিটি থেকেও সড়িয়ে দেয়া হয়েছে তাকে। শুধু তাই নয় ২০০৮সালের বিসিসি নির্বাচনে এবায়েদুল হক চান ও আহসান হাবিব কামাল বিএনপির এদুই প্রার্থীর চেয়েও সান্টু বিপুল পরিমান ভোট পেয়ে চমক সৃষ্টি করেন। আসন্ন বিসিসির নির্বাচনে সান্টুকে দলীয় প্রার্থী করা হলে আবাও বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়ে চমক দেখাতে সক্ষম হবেন বলে তৃণমুল বিএনপির ধারণা। কে এই সান্টু ? নগরীর ব্রাউনকম্পাউন্ড এলাকার বাসিন্দা তিনি। ২০০৮ সালে স্বতন্ত্রী প্রার্থী হয়ে মেযর পদে নির্বাচন করে বিপুল পরিমাণ ভোট অর্জন করে তাক লাগিয়ে দেন। এরপর তিনি বিএনপিতে যোগদান করেন। ব্যক্তিগত জীবনে সান্টু একজকন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। পাশাপাশি সামাজিক জীবনে তিনি স্কুল কলেজসহ একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ও নিয়মিত দাতা। করোনাকালীন সময়ে বরিশাল নগরীসহ তার গ্রামের বাড়ি বানারীপাড়া ও উজিরপুর এলাকায় হতদরিদ্রদের মাঝে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা অনুদান দিয়েছেন। যা একজন রাজনৈতিক নেতার ব্যক্তিগত অর্থায়নের বিষয়টি বিরল ঘটনা বলে মনে করেন সাধারণ মানুষ। শুধু তাই নয়, নিজ এলাকায় এশিয়া মহাদেশের মধ্যে নয়ানাভিরাম ‘গুঠিয়া বায়তুল আমান জামে মসজিদ ঈদগাহ কমপ্লেক্স ও এতিমখানা প্রতিষ্ঠা করে জাতীয়ভাবেও প্রশংসিত হয়েছেন। যা বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় গণমাধ্যমেও একাধিকবার তুলে ধরা হয়েছে। কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে হাজার হাজার শ্রমিকদের আর্থিক সহায়তাসহ ভ্যানগাড়ী উপহার দেয়াসহ হতদরিদ্রদের ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ, যুবতী মেয়েদের সম্পুর্ণ বিয়ের খরচ বহন করে আসছেন তিনি। এছাড়াও রাজনৈতিক জীবনেও শরফুদ্দিন আহম্মেদ সান্টু বিএনপির এই দুর্দীনে দলীয় সকল কর্মসূচীতে আর্থিক সহায়তাসহ নানাবিধ নেতৃত্ব দিয়ে আসছে যার ফলশ্রুতিতে তিনি চারটি রাজনৈতিক মামলার আসামি হয়েছেন।
Leave a Reply