নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
গতকাল ১৩ মে শুক্রবার দুপুর সোয়া ২ টার সময় বরিশাল সদর উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের বিল্ববাড়ি গ্রামের মুখার্জীর পুল বাজার সংলগ্ন এলেম উদ্দিন জামে মসজিদে নামাজ আদায় শেষে বাড়ি ফেরার পথে জাকির হাওলাদারের ঘরের সামনে মাদক সেবনসহ বিক্রয়ের প্রস্তুতিকালে বাঁধা প্রদান করায় একই এলাকার মান্নান খলিফার পুত্র চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী নাঈম খলিফা ও পলাশের হামলায় দৈনিক দখিনের খবর পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক কাজী মো: আবু সাঈদ প্রান্ত ও আ’লীগ নেতা জাকির হাওলাদারের পুত্র ছাত্রলীগ কর্মী সজিব হাওলাদার গুরুতর আহত হন। তাৎক্ষনিক আহত সজিব হাওলাদারকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করলে সংবাদ পেয়ে বিমানবন্দর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
বিল্ববাড়ী গ্রামনিবাসী মরহুম মান্নান খলিফার তৃতীয় স্ত্রীর সন্তান নাঈম খলিফা। পেশায় একজন মাদক ব্যবসায়ী। লাকুটিয়া সড়ক বিল্ববাড়ী মুখার্জি পুল বাজার সংলগ্ন জাকির হাওলাদারের বসত ঘরের সামনে থাকা পরিত্যাক্ত একটি দোকান ঘরের পিছনে বসে দীর্ঘদিন ধরে গাঁজা ও ইয়াবা ব্যাবসা করে আসছে নাঈম খলিফা, পলাশসহ প্রায় ডজন খানেক তাদের অনুসারী। নাঈম ও পলাশ দুজনেই গাঁজা ও ইয়াবাসহ একাধীকবার পুলিশের হাতে অটক হলেও খুব দ্রুত সময়ে বেড়িয়ে এসে পুনরায় মাদক ব্যবসা শুরু করেন। তাদের মাদক ব্যবসায় বাঁধা দেয়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে জাকির হাওলাদার ও তার ছেলে সজিবসহ পরিবারের সবার সাথে বিরোধ চলে আসছিলো।
শুক্রবার (১৩ মে-২০২২) জুমার পর দুপুর সোয়া ২ টার সময় নাঈম ও পলাশ জাকির হাওলাদারের পরিত্যাক্ত দোকানের সামনে বসে গাঁজা সেবনসহ বিক্রির প্রস্তুতিকালে দৈনিক দখিনের খবর পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক কাজী মোঃ আবু সাঈদ প্রান্ত ও সজীব হাওলাদার বাঁধা দিলে সাথে থাকা ধারালো অস্ত্র, লাঠি সোটা নিয়ে প্রান্ত ও সজীবের উপর হামলা চালায় মাদক ব্যবসায়ী নাঈম ও পলাশ। তাদের হামলায় প্রান্ত ও সজীব দুজনেই গুরুতর আহত হয়। এক পর্যায় খুন করার উদ্দেশ্যে লাঠি দিয়ে সজীবের মাধার উপর আঘাত করে নাঈম ও সজীব। হামলায় সজীবের কপাল ফেটে যায় এবং প্রান্ত ও সজীবের শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত ও ফাঁটা ফুলা যখম হয়। ঘটনা স্থল থেকে স্থানীয় লোকজনের সমঝোতায় সবাই চলে যায়। এর কিছুক্ষণ পরে সজীব ও প্রান্তকে ফাঁসাতে নাটকীয়ভাবে নাঈম অসুস্থতার ভান ধরে। সজিব ও প্রান্তকে মামলা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে নাঈমকে মেডিক্যাল নিয়ে যায় মাদক সম্রাট পলাশসহ তাদের অনুসারী মাদক ব্যাবসায়ীরা। সংবাদ পেয়ে এসআই শফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এবং উভয় পক্ষকে বিরোধে না জড়িয়ে মিমাংসার পরামর্শ দেন। কিন্তু উপস্থিত পুলিশের সামনে মাদক ব্যবসায়ী নাঈম ও পলাশের মাদক ব্যবসায় অর্থসহায়তাকারী স্থানীয় ভুমিদস্যু ও বিশিষ্ট সুদখোর নামে খ্যাত শাহে আলম হাওলাদার, তার ছেলে হিরণসহ তার পরিবারের সবাই মিলে পুনরায় উভয় পক্ষের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি করে হামলায় চেষ্টা চালায়। এসময় পুলিশ লাঠিচার্জ করে সুদখোর ও মাদক ব্যবসায় অর্থযোগান দাতা শাহে আলমতে ঘটনাস্থল থেকে লাঠিচার্জ করে তাড়িয়ে দেয়। উপস্থিত পুলিশের কাছে স্থানীয়রা জানায়, নাঈম ও পলাশ দুজনেই পেশাদার মাদক ব্যাবসয়ী। স্থানীয়রা আরও জানান, নাঈম ও পলাশ কিছুদিন পূর্বেও মাদকসহ পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। পুলিশও শিকার করেন হামলাকারীরা পেশাদার মাদক ব্যাবসায়ী। এ ঘটনায় বিমান বন্দর থানায় সজীবের পিতা জাকির হোসেন হাওলাদার নাঈম খলিফা ও পলাশকে আসামি করে একটি অভিযোগ দায়ের করেন বলে জানান জাকির হাওলাদার।
Leave a Reply