দখিনের খবর ডেস্ক ॥ দেশব্যাপি প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের ছোবলের মুখে বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলবাসীর রাজধানী ঢাকার সাথে নৌ-যোগাযোগের একমাত্র চলাচলের বাহন বিলাশবহুল লঞ্চগুলো গত ৬৮দিন বন্ধ থাকার পর সরকারী ভাবে লকডাউন শিথিল ঘোষনা আসায় সিমিত আকারে দুরপাল্লা ও অভ্যন্তরীন লঞ্চসহ গণপরিবহন চলাচলের নির্দেশ আসায় বরিশাল নগরীর ঢাকামুখি দুরপাল্লার বিলাশবহুল লঞ্চ অফিসগুলোতে অন্ধকার কেটে আলোর ঝলকানীর পাশাপাশি লঞ্চের অগ্রিম টিকিট পাওয়ার আসায় যাত্রী সাধারনের পা পড়েছে।
আজ শনিবার সকাল থেকে নগরীর ফজলুল হক এ্যাভিনিয় সড়কে সুন্দরবন নেভিগেশন লঞ্চ কোং অফিসের বাহিরে সরকারী নিতিগত নিয়ম স্বাস্থ্য বিধি সামাজিক ও শারীরিক দুরুত্ব বজায় রেখে লাইনে দাঁড়িয়ে অফিস কক্ষে প্রবেশের সাথে সাথে জীবনুনাশক স্প্রে করে টিকিট বুকিং করতে আসা যাত্রীদের ভিতরে প্রবেশ করতে দেখা যায়।
এসময় সুন্দর বন নেভিগেশন কোং চেয়ারম্যান ও কেন্দ্রীয় লঞ্চ মালিক সমিতির সহ-সভাপতি আলহাজ্ব সাইদুর রহমান রিন্টু তার অফিসের শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য কর্মকর্তা ও অফিস কর্মচারীদের বিভিন্ন নির্দেশ দিতে দেখা যায়।
এসময় তিনি বলেন- আমরা লঞ্চ মালিক সমিতি এখন পর্যন্ত কোন টিকিটের মূল্য বৃদ্ধি করেনি। পূর্বে যে রকম ভাড়া ছিল সে ভাড়ায় যাত্রীরা যেতে পারবে। ভাড়ার বিষয় নিয়ে যাত্রী সাধারনের কোন ধরনের বিভ্রান্ত হওয়ার কিছু নেই। একইভাবে মালিক কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মোতাবেক কর্মচারীরা টিকিট বিক্রয় অফিসের ভিতর অতিরিক্ত টিকিট নিতে আসা গ্রাহকদের দুরুত্ব বজায় রেখে কারো কারো কাছে নগদ টিকিট বিক্রয় করা সহ অগ্রিম কেবিন বুকিং খাতায় নাম লিপিবন্ধ করে রাখছে।
এসময় অগ্রিম লঞ্চের টিকিট নিতে আসা যাত্রী সাধারনরা বলেন- দীর্ঘদিন ঢাকায় অফিসিয়াল কাজ বন্ধ হয়ে রয়েছে। এছাড়া প্রায় দু মাস করোনার মহামারির কারনে ঘড় বন্ধি হয়ে থাকার কারনে ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। আমরা কাজের লোক, কাজ ছাড়া একদম ঘড়ে বসে থাকতে থাকতে অর্থনৈতিক ও শারিরীকভাবে অচল হয়ে পড়েছি।
একই সাথে যাত্রীরা বলেন- আমরা সবাই সুস্থ থাকার জন্য সামাজিক ও শারীরিক দুরুত্ব বজায় রেখে চলার মাধ্যমে করোনাকে এদেশ থেকে মুক্ত করার জন্য অন্য সকল যাত্রীদের প্রতি এসব যাত্রীরা আহবান করেন।
এ ব্যাপারে বরিশাল নদী-বন্দর উপ-পরিচালক আজমল হুদা সরকার বলেন, বলেন আগামীকাল (৩১ মে) থেকে বরিশাল নদী-বন্দর থেকে ঢাকাগামী দুরপাল্লার বিলাশবহুল ও অভ্যন্তরীন লঞ্চগুলো যাত্রী নিয়ে পূর্বের ন্যায় পল্টুন ত্যাগ করবে। এখানে আমরা কতগুলো সরকরী নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি যাত্রীকে বাধ্যতামুলক মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। এখানে যে যাত্রী মাস্ক ব্যবহার করবে না তাকে আমরা নৌ কর্তৃপক্ষ লঞ্চে উঠতে দেব না। সে যত বড়ই বড় মিয়া থাকুক না কেন। এছাড়া প্রতিটি লঞ্চে জীবনুনাশক স্প্রে ব্যবহার করার পাশাপাশি লঞ্চগুলো পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার মধ্যে রাখতে হবে। অন্যদিকে বরিশাল বিআইডব্লিউটি’এর কর্মকর্তা কর্মচারী যারাই এখানে কর্তব্যরত আছেন সকলকে নিয়ম মেনেই দায়ীত্ব পালন করতে হবে।
তিনি আরো বলেন- সরকারীভাবে নির্দেশনা এসেছে পল্টুনে যাত্রীদেরকে জীবনুনাশক টার্নেলের ভিতর থেকে যেতে হবে। আমরা এখন পর্যন্ত টার্নেল স্থাপন করতে পারিনি। আসা করছি আগামী এক সপ্তাহের ভিতর টার্নেল স্থাপন করতে সক্ষম হব।
এদিকে বরিশাল নৌ-থানা পুলিশের দায়ীত্বরত এস আই রেজাউল করিম জানান- সরকারী ভাবে আমাদের নৌ-পুলিশকে যে দায়ীত্ব দেয়া হয়েছে তা পারিপূন্নভাবে পালন করা হবে।
অন্যদিকে বরিশাল কেন্দ্রীয় নথুল্লাবাদ বাস মালিক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক কিশোর কুমার দে জানান- আজ শনিবার দুপুরে তাদের মালিক সমিতির এক সভা হয়েছে। সরকারী নিয়ম অনুযায়ী আগামি ১লা জুন থেকে সকল দুরপাল্লার যাত্রীবাহি বাস চলাচল করবে। এখানে নতুন করে ভাড়া বাড়ার কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে কেন্দ্রীয় মালিক সমিতি যে সিদ্ধান্ত গ্রহন করবে আমরা তাই মেনে নেব।
Leave a Reply