বানারীপাড়া প্রতিনিধি ॥ বরিশালের বানারীপাড়ায় চাখারে সন্ধ্যা নদীর তীরে জনগনের সুবিধার্থে শের-ই বাংলা একে ফজলুল হক ১৯৩৩ সালে হাট ও লঞ্চ টার্মিনাল প্রতিষ্ঠা করেন।পরবর্তীতে ওই হাটটি ‘হক সাহেবের হাট’ নামে পরিচিতি অর্জণ করে। ওই হাট ও শেরে বাংলা কলেজ ঘাট নামে লঞ্চ টার্মিনালকে কেন্দ্র সেখানে ছাত্র রেষ্ট হাউজ,১০/১২টি পাটের গুদাম, ক্লাব, মসজিদ বেশ কয়েকটি স্ব-মিল ও রাইস মিল সহ দু’শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে। অবিভক্ত বাংলার মূখ্যমন্ত্রী শের-ই বাংলা আবুল কাসেম ফজলুল হক কলকাতা থেকে সরাসরি ষ্টিমারে এসে চাখারের হক সাহেবের হাটের ওই লঞ্চ টার্মিনালে নেমে নিজ বাড়িতে যেতেন। সপ্তাহের প্রতি শনি ও মঙ্গলবার এ হাটে হাজারো ক্রেতা-বিক্রেতায় মুখরিত হয়ে জমজমাট বিকিকিনি হতো। বেপরোয়া বালু উত্তোলন ও চরের মাটি কেটে ইটের ভাটায় বিক্রি সহ নানা কারণে সন্ধ্যা নদীর অব্যাহত ভাঙনের ফলে দিন দিন ঐতিহ্যবাহী এ হাটটি সংকুচিত হয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে ওই হাটের সিহংভাগ নদী গ্রাস করে ফেলেছে।
এদিকে চলতি বর্ষা মৌসুমে সন্ধ্যা নদীর ভাঙন তীব্ররূপ ধারণ করায় হাটের দুটি স্ব-মিল ও দু’টি রাইস মিল সহ ২০ টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নদী গর্ভে বিলীণ হয়ে গেছে। এছাড়া হাটের পাশের বেশ কয়েকটি বাড়িঘর নদী গ্রাস গ্রাস করে ফেলেছে। নদী রূদ্ররূপ ধারণ করায় যেকোন সময় বাঙালী জাতির অবিসংবাদিত নেতা শের-ই বাংলা আবুল কাসেম ফজলুল হকের প্রতিষ্ঠিত ও স্মৃতি বিজরিত ঐতিহ্যবাহী এ হাটটি নদীগর্ভে বিলীণ হয়ে যেতে পারে।এদিকে চাখারের সন্তান আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য মো. মনিরুল ইসলাম মনি, চাখার ইউপি চেয়ারম্যান খিজির সরদার ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ মজিবুল ইসলাম টুকু সহ এলাকাবাসী মহান নেতা শেরে বাংলার স্মৃতি রক্ষার্থে ও জনস্বার্থে ঐতিহ্যবাহী এ হাটটি রক্ষার জন্য বালু উত্তোলন বন্ধ করা সহ নদীর ভাঙন রোধে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। এ ব্যপারে বানারীপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব গোলাম ফারুক বলেন সন্ধ্যা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে ভেঙ্গে শত শত বাড়ি-ঘর,ধর্মীয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ফসলী জমি ও রাস্তা-ঘাট বিলীণ হয়ে হাজারো পরিবার নিঃস্ব ও রিক্ত হয়ে পড়েছে।এমনকি উপজেলার উত্তর নাজিরপুর গ্রামে তার নিজ বাড়িটিও যেকোন সময় নদী গর্ভে বিলীণ হয়ে যাবে। নদীর ভাঙন রোধে স্থানীয় সংসদ সদস্যের নেতৃত্বে তিনি ভূমিকা রাখছেন বলেও
জানান। এ প্রসঙ্গে স্থানীয় সংসদ সদস্য মো. শাহে আলম বলেন নদীর ভাঙন রোধে ঐতিহ্যবাহী ওই হাটের অদূরে ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে নদী শাসনের কাজ চলছে। এছাড়াও নদীর ভাঙন রোধে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
Leave a Reply