নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
‘সামনে বন্যার আশংকা রয়েছে। মাঠ পর্যায় পরিদর্শন বাড়িয়ে ঝুঁকিপূর্ণ স্থান চিহ্নিত করে কাজ করতে হবে। সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বাধের কাজ করতে হবে। এছাড়া নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পসমূহের বাস্তবায়নের নির্দেশসহ ব্যর্থতার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।’
বুধবার (৩১ আগস্ট) পানি ভবনের সম্মেলন কক্ষে ২০২২-২৩ অর্থ বছরে বাস্তবায়নাধীন এডিপিভূক্ত প্রকল্পসমূহের অগ্রগতি পর্যালোচনা সভায় পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক এসব কথা বলেন।
এ সময় যথাসময়ে প্রকল্প বাস্তবায়নেরও তাগিদ দেয়া হয়। কোথায়ও বাঁধা ক্ষতিগ্রস্ত হলে সঙ্গে সঙ্গে তা সংস্কারের দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে । যে যে এলাকায় বন্যার আশঙ্কা আছে সেখানকার প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা যৌথভাবে কাজ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে সভার সভাপতিত্ব করেন পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক। সভার শুরুতে প্রতিমন্ত্রী শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৫ আগষ্টের শহীদদের।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আসন্ন বন্যায় ক্ষতি আরও কমাতে হবে এর জন্য আগাম প্রস্তুতিসহ ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ ও স্থান চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ারও তাগিদ দেন প্রতিমন্ত্রী। মেধা, সততা ও মানবিকতার সমন্বয়ে কাজ করতে হবে।
সরকার বন্যা মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে মানুষের দুর্ভোগ ও ক্ষয়ক্ষতি যথাসম্ভব কমিয়ে আনার ব্যাপারে সচেতন ভূমিকা রাখছে। এর মাধ্যমেই বন্যার ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলা সম্ভব।
তাছাড়া বন্যা-পরবর্তী সময়ে বন্যাকবলিত এলাকার মানুষের স্বাস্থ্যসেবা জোরদার করাও জরুরি। মনে রাখতে হবে, বন্যার ক্ষয়ক্ষতি লাঘবে আগাম প্রস্তুতি একটি কার্যকর উপায়।
এ সময় সভায় বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের পর্যালোচনা সভায় ৮ টি প্রকল্প নিয়ে আলোচনা হয়।
* ১৪৮৩২.৫৩ লাখ টাকা ব্যয়ে দোহার-মারিচর- নারিশাবাজার প্রকল্পের ইতোমধ্যে ৪৭ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।
* নোয়াখালী জেলার জলাবদ্ধতা নিরসনে বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও নিষ্কাশন ব্যবস্থার জন্য ৩২৪৯৮.৮৫ লাখ টাকার প্রকল্পের ৭৫.৫৫ শতাংশ শেষ হয়েছে।
* চট্টগ্রাম মহানগরীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ জলাবদ্ধতা নিরসন ও নিষ্কাশনে ১৬২০৭৩.৫০ লাখ টাকার প্রকল্পের ১৫ শতাংশ কাজ সমাপ্ত হয়েছে।
* কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী- উলিপুর-ব্রক্ষ্মপুত্র নদীর ডান তীর ভাঙ্গন রোধে ৪৪৮৩১ লাখ টাকার প্রকল্পের ৬৮.৮৭ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।
* ৭২২০০ লাখ টাকা ব্যয়ে রাজশাহী জেলার চারঘাট ও বাঘা উপজেলায় পদ্মা নদী ভাঙ্গন হতে রক্ষা প্রকল্পের ৩১.১ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।
* ভৈরব নদীর(মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা) পুন:খনন কাজ ২৮.৩০ শতাংশ শেষ হয়েছে।
* বরিশালের কির্তনখোলা নদীর ভাঙ্গন হইতে বরিশাল সদর উপজেলাধীন চরবাড়ীয়া এলাকা রক্ষা প্রকল্পের ৮৮ শতাংশ শেষ হয়েছে।
সীমান্ত নদী সংরক্ষণ ও উন্নয়ন প্রকল্প ব্যয় ৪৬৬৫৯.৪৪লাখ টাকা এবং প্রকল্পের ৭২ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। সিলেট, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ী, ফেনী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগা, কুড়িগ্রাম, ঠাকুরগা, দিনাজপুর ও পঞ্চগড় জেলা।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার, অতিরিক্ত সচিব মিজানুর রহমান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহপরিচালক ফজলুর রশিদ, অতিরিক্ত মহাপরিচালকবৃন্দ প্রধানকৌশলীবৃন্দ এবং মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ । অতিরিক্ত সচিব এস.এম. রেজাউল মোস্তফা কামাল সভার কার্যবিবরণী উপস্থাপন করেন।
Leave a Reply