মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ০১:৫৮ অপরাহ্ন

উপ-সম্পাদক :: দিদার সরদার
প্রধান সম্পাদক :: সমীর কুমার চাকলাদার
প্রকাশক ও সম্পাদক :: কাজী মোঃ জাহাঙ্গীর
যুগ্ম সম্পাদক :: মাসুদ রানা
সহ-সম্পাদক :: এস.এম জুলফিকার
প্রধান নির্বাহী সম্পাদক :: মামুন তালুকদার
নির্বাহী সম্পাদক :: সাইফুল ইসলাম
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক :: আবুল কালাম আজাদ
সংবাদ শিরোনাম :
খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও তারেক রহমানের সুস্থতা কামনায় গৌরনদীতে দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত গৌরনদীতে এতিমখানা ও মাদ্রাসার দরিদ্র, অসহায় শিক্ষার্থীদের মাঝে ঈদ বস্ত্র বিতরণ ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত বরিশালে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের কারাবন্ধী ও রাজপথে সাহসী সৈনিকদের সম্মানে ইফতার দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠিত আদালতে মামলা চলমান থাকা অবস্থায়, দখিনের খবর পত্রিকা অফিসের তালা ভেঙে কোটি টাকার লুণ্ঠিত মালামাল বাড়িওয়ালার পাঁচ তলা থেকে উদ্ধার, মামলা নিতে পুলিশের রহস্যজনক ভূমিকা গলাচিপা উপজেলা প্রেসক্লাবের কমিটি গঠন, সভাপতি হাফিজ, সম্পাদক রুবেল চোখের জলে বরিশাল প্রেসক্লাব সভাপতি কাজী বাবুলকে চির বিদায় বিএনপি নেতা জহির উদ্দিন স্বপন কারামুক্ত উচ্চ আদালতে জামিন পেলেন বরিশাল মহানগর বিএনপির মীর জাহিদসহ পাঁচ নেতা তসলিম ও পিপলুর নেতৃত্বে বরিশাল জেলা উত্তর ও দক্ষিণ যুবদলের বরিশাল নগরীতে কালো পতাকা মিছিল হিউম্যান ফর হিউম্যানিটি ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে গৌরনদীতে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে বই বিতরণ
ছাত্রদলের বিরুদ্ধে অভিযোগের স্তূপ

ছাত্রদলের বিরুদ্ধে অভিযোগের স্তূপ

জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ইউনিট কমিটি পুনর্গঠন নিয়ে একের পর এক অভিযোগ পড়ছে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে। অভিযোগ এতটাই বেশি যে, দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম- জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকেও বিষয়টি আলোচনায় এসেছে। কমিটির কয়েকজন সদস্য ছাত্রদলের নেতৃত্বের বিরুদ্ধে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ আনেন। সম্প্রতি পদ দেওয়ার বিনিময়ে ‘অনৈতিক লেনদেন ও পক্ষপাতিত্বের’ অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় কয়েকটি বিভাগীয় কমিটিতে পরিবর্তন আনা হয়েছে।

বিভাগীয় কমিটির নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাদের পক্ষপাতিত্বের কারণে ত্যাগী, পরীক্ষিত ও মামলায় জর্জরিত নেতাকর্মীরা অনেক কমিটিতে পদ পাননি। এ নিয়ে তৃণমূলে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কুমিল্লা বিভাগীয় টিমপ্রধানকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। টিম থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে খুলনা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদককে। এ ছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগীয় টিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে জেলা শাখা নেতাদের দেওয়া কমিটি পাল্টে দেওয়ার। এ বিভাগীয় টিমসহ খুলনা টিমের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট অধিকাংশ জেলা শাখা অনাস্থা জানানোর প্রস্তুতিও নিচ্ছে।

ছাত্রদলের কয়েকটি জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আমাদের সময়কে বলেন, কেন্দ্রীয় শীর্ষ নেতারা কমিটি গঠনে অনৈতিক লেনদেনসহ নানা অনিয়মের বিষয়ে মুখ খুলতে নিষেধ করেছেন। এ নিয়ে কথা বললে বহিষ্কারেরও হুমকি দিচ্ছেন। তারা আরও বলেন, ছাত্রদলের পুনর্গঠনের মধ্য দিয়ে কমিটি গঠন হচ্ছে ঠিকই কিন্তু অনেক ত্যাগী নেতাকর্মী সাইজও হচ্ছেন। এটা দলের কেউ কোনো খোঁজ নেন না। এসব নেতাকর্মীর বিশেষ টিম করে খোঁজ নেওয়া উচিত। কীভাবে এসব নেতাকর্মীকে কমিটিতে আনা যায় সে কৌশল নির্ধারণ করতে হবে।

ছাত্রদলকে আরও শক্তিশালী করতে তৃণমূল পুনর্গঠনের উদ্যোগ নেয় বিএনপি হাইকমান্ড। সে অনুযায়ী সারাদেশের থানা-পৌর, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় শাখাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কমিটি গঠনের লক্ষ্যে ১০ সাংগঠনিক বিভাগে ১১টি টিম গঠন করা হয়েছে।

জানতে চাইলে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন আমাদের সময়কে বলেন, কোনো বিভাগীয় টিমের বিরুদ্ধে লিখিত কোনো অভিযোগ পাইনি। তবে কারও কারও বিরুদ্ধে মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি, তা আমলে নেওয়ার মতো নয়। টিমে যে পরিবর্তন আনা হয়েছে তা মূলত সংশ্লিষ্ট নেতাদের চাহিদা অনুযায়ী। তবে কুমিল্লা ও ফরিদপুরের টিমে পরিবর্তন আনা হয়েছে। ওই টিম পিছিয়ে ছিল। এক প্রশ্নে তিনি বলেন, কোনো জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক যদি কেন্দ্র থেকে কমিটি ঘোষণার অনুরোধ করেন তা হলেই কেবল তা ঘোষণা করা হয়।

ছাত্রদলের কার্যক্রম দেখভালের জন্য বিএনপির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক ও ছাত্রবিষয়ক সহ-সম্পাদক- দুইটি পদ রয়েছে। গত জাতীয় কাউন্সিলের পর থেকে এ দুইটি পদ শূন্য। যার কারণে সংগঠনটি অনেকটা অভিভাবকশূন্য চলছে। যার প্রভাব পড়েছে তাদের কার্যক্রমে।

অভিযোগ আছে, সংগঠনের শীর্ষ নেতৃত্ব প্রায় সব ইউনিটে নিজেদের পছন্দের লোককে কমিটিতে জায়গা করে দিতে চেষ্টা করছে। যার কারণে একটি ইউনিট কমিটি নিয়ে কয়েকটি গ্রুপ তৈরি হচ্ছে।

সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম বিভাগীয় টিমের প্রধান হচ্ছেন সহ-সভাপতি কেএসএম মুসাব্বির সাফি। তার সঙ্গে রয়েছেন সহ-সভাপতি পাবেল শিকদার, যুগ্ম সম্পাদক এবিএম মাহমুদ আলম সরদার, সহ-সাধারণ সম্পাদক মাইনউদ্দিন নিলয়, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক আহমেদ সাব্বির। এ টিমের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ। তাদের বিরুদ্ধে বান্দরবান জেলার সভাপতি আশরাফুল আমিন ফরহাদ ও অমিত ভূষণ তঞ্চঙ্গ্যা কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন।

সেখানে তারা বলেন, ‘গত ২৩ জুলাই যৌথ স্বাক্ষরে ১৩টি ইউনিট কমিটি জমা দিই। আমাদের দেওয়া কমিটিগুলো স্থানীয়ভাবে আলাপ-আলোচনা ও ছাত্র সমাবেশ করে মতবিনিময়ের মাধ্যমে গঠন করি। কিন্তু বিভাগীয় টিম আমাদের স্বাক্ষরিত কমিটি পুরোপুরি বদলে নিজেদের মনগড়া কমিটি করে আমাদের স্বাক্ষর করার জন্য চাপ সৃষ্টি করছে। উক্ত কমিটিতে স্বাক্ষর করার অর্থ জেলার ত্যাগী, মামলা-হামলা-নির্যাতিত ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে এবং সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমান বীরউত্তমের আদর্শের রাজনীতির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার শামিল বলে মনে করছি।’

একই অভিযোগ রাঙ্গামাটি জেলা ছাত্রদলেরও। এ ছাড়া হাটহাজারী উপজেলা, পৌরসভা, কলেজ শাখাসহ ২০টি ইউনিটের কমিটি ঘোষণা করা হয়। সেখানেও নিয়ম মানা হয়নি। চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষর ছাড়াই কেন্দ্রীয় প্যাডে সহ-দপ্তর সম্পাদক স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ কমিটি দেওয়া হয়। এ কমিটি বাতিলের দাবিতে হাটহাজারীতে প্রতিদিনই বিক্ষোভ মিছিল করছেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা।

সূত্র জানায়, এ ২০ ইউনিটের মধ্যে ৬টির কমিটিতে ত্যাগী ও যোগ্য নেতা না রাখায় স্বাক্ষর করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলার সভাপতি। অভিযোগ রয়েছে, উত্তর জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মনিরুল আলম জনি ও কেন্দ্রীয় ছাত্রদল টিমের যোগসাজশে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির একজন সদস্য নিজের অনুসারী দিয়ে কমিটি গঠন করেন। বিএনপির ওই কেন্দ্রীয় নেতা নিজেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নাম ব্যবহার করে চট্টগ্রাম বিভাগীয় সব ইউনিট কমিটিতে হস্তক্ষেপ করছেন, যা নিয়ে বিব্রত চট্টগ্রামের বিএনপির সিনিয়র নেতারা।

চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) আসনের সাবেক সাংসদ প্রয়াত সৈয়দ ওয়াহিদুল আলমের মেয়ে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার শাকিলা ফারজানা বলেন, কর্মীরা বিভিন্ন নেতার অনুসারী হতে পারে। কিন্তু আমরা তো সবাই একই দলের লোক। হাটহাজারীতে ছাত্রদলের কমিটি গঠনের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ সুপার ফাইভে যোগ্যতার ভিত্তিতে সমন্বয় করা যেত। কিন্তু তা করা হয়নি। ঘোষিত কমিটিতে ছাত্রলীগের ও মাদক ব্যবসায়ীরাও রয়েছে। এটা তো আমাদের নেতা তারেক রহমানের ভাবমূর্তির সঙ্গে যায় না।

বিএনপির কেন্দ্রীয় এক নেতা বলেন, দলের মধ্যে একটা নতুন গ্রুপ তৈরি হয়েছে, যারা তারেক রহমানের নাম ব্যবহার করে কমিটি গঠন থেকে শুরু করে বিভিন্নভাবে প্রভাব বিস্তার করছে। এরা কোনো সিনিয়র নেতাকে সম্মানও দেন না। এদের কারণে অনেকেই তারেক রহমানের ওপর অসন্তুষ্ট। এখনই এদের তৎপরতা বন্ধ করা উচিত।

চট্টগ্রাম-২ আসনে গত নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন পাওয়া মো. আজিমউল্লাহ বাহার বলেন, ফটিকছড়ির কমিটি নিয়ে জেলা শাখা আমার সঙ্গে কোনো রকম আলোচনা করেনি। এ ব্যাপারে বিভাগীয় টিমের সঙ্গে কথাও বলেছি। আমার নির্বাচনী এলাকায় কমিটি হবে আর আমি জানব না তা তো হতে পারে না। এলাকার দলীয় সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে যদি কমিটি দেওয়া না হয় তা হলে দ্বন্দ্ব আরও বাড়বে। কমিটি গঠনে অনৈতিক লেনদেনের কথাও শুনেছেন বলেও জানান তিনি।

ফটিকছড়ির এক নেতা জানান, উপজেলা কমিটিতে গার্মেন্টসে চাকরিরত একজনকে শীর্ষ পদে বসাতে মরিয়া কেন্দ্রীয় বিভাগীয় টিম। এ ছাড়াও স্থানীয় সব নেতাকে পাশ কাটিয়ে বিএনপির নির্বাহী কমিটির ওই নেতার পছন্দের লোকজনকে দিয়ে কমিটি দেওয়ার চেষ্টা চলছে। ত্যাগী ও যোগ্যদের বাদ দিয়ে কমিটি হলে তা মেনে নেওয়া হবে না। এসব ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে অবহিত করা হয়েছে।

এ ছাড়াও সম্প্রতি কক্সবাজার জেলার আওতাধীন ১৮টি শাখা কমিটি ঘোষণার পরও অনৈতিক লেনদেন ও ত্যাগীদের বাদ দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। কমিটি বাতিলের দাবিতে কক্সবাজার শহরে বিক্ষোভ মিছিলও করেছে পদবঞ্চিতরা। খুলনা বিভাগীয় ছাত্রদলের টিমপ্রধানের বিরুদ্ধে একাট্টা হয়েছেন অধিকাংশ জেলার নেতারা। গত ২৫ জুন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন অধিকাংশ জেলার নেতারা। লিখিত অভিযোগে তারা বলেন, ‘বিভাগীয় টিম তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন না করে কেন্দ্রীয় সিনিয়র সহ-সভাপতির এজেন্ডা বাস্তবায়নে ব্যস্ত। তারা অসৎ ও অনৈতিক উদ্দেশ্যে কাজ করছেন। প্রতিটি জেলায় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বাইরে আলাদা বলয় তৈরি ও সংশ্লিষ্টদের আগামীতে বড় পদের আশ্বাস দিয়ে সাংগঠনিক কিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে। ’

খুলনা বিভাগের বিভিন্ন জেলার শীর্ষ নেতারা বলেন, টিমপ্রধান কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান সজীবের বিরুদ্ধে আমরা ২ পৃষ্ঠার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দিয়ে অপসারণের দাবি করেছিলাম। কিন্তু ৬ অক্টোবর ৫টি বিভাগীয় সাংগঠনিক টিম পুনর্গঠন করা হলেও তাকে বহালতবিয়তে রাখা হয়েছে। আমরা তার বিরুদ্ধে অনাস্থার প্রস্তুতি নিচ্ছি। এ ছাড়াও ফেনীর ফুলগাজী ও দাগনভূইয়া, সিলেট, ঝিনাইদহ, মুন্সীগঞ্জসহ বেশ কয়েকটি জেলার বিভিন্ন ইউনিটের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করেও নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। কমিটি বাতিলের দাবিতে এসব এলাকায় বিক্ষোভ মিছিলসহ নানা কর্মসূচি পালন করছেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Dokhinerkhobor.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com