দখিনের খবর ডেস্ক ॥ অবৈধভাবে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করে অঢেল সম্পদের পাহাড় গড়ার অভিযোগ গড়েছে পাথরঘাটা পৌরসভার হিসাব রক্ষক মো. বেলায়েত হোসেন। আর সেই অর্থ দিয়ে একের পর এক বিভিন্ন স্থানের জমি কিনে চলেছেন তিনি। এ ঘটনায় স্থানীয় সমাজসেবক রফিকুল ইসলাম কাকন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রধান কার্যালয়, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং বরগুনা জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার কাকচিড়া ইউনিয়নের জালিয়াঘাটা এলাকার সেলিম তালুকদারের ছেলে বেলায়েত হোসেন পাথরঘাটা পৌরসভায় হিসাবরক্ষক হিসেবে ২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর যোগদান করেন। এর চার বছর পর ২০১১ সালে তিনি তিনটি দলিলে জমি কিনতে শুরু করেন। এরপর ২০১২ সালে তিনি ৫টি, ২০১৩ সালে ২টি, ২০১৪ সালে ২টি, ২০১৫ সালে ৪টি, ২০১৬ সালে ৪টি, ২০১৮ সালে ৯টি, ২০১৯ সালে ৯টি ও চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ২টি দলিলে জমি কিনেছেন। এসব জমি পাথরঘাটা সাবরেজিস্ট্রার কার্যালয় থেকে রেজিস্ট্রি করা হয়েছে। গত ১০ বছরে বেলায়েত হোসেন নিজ নামে, স্ত্রী সুরাইয়া সুলতানা, ছেলে আবদুল্লাহ আল নোমান ও শ্বশুর সেলিম সিকদারের নামে সব মিলিয়ে ৪৩টি দলিলে ৬ একর ৫০ শতক জমি কিনেছেন। এসব জমির দাম দলিলে উল্লিখিত অঙ্ক অনুযায়ী আড়াই কোটি টাকারও বেশি।
পাথরঘাটা উপজেলা সাবরেজিস্ট্রার মামুন সিকদার বরিশালটাইমসকে জানান, গত ১০ বছরে বেলায়েত হোসেন ও তার স্বজনদের নামে অন্তত ৪৩টি দলিলে ৬৫০ শতক (সাড়ে ৬ একর) জমি রেজিস্ট্রি হয়েছে। জমি রেজিস্ট্রির সময় সাধারণত ক্রেতার আয়ের উৎস দেখা হয় না। বিক্রেতার কাগজপত্র যাচাই করে জমির দলিল সম্পাদন করা হয়ে থাকে।
অভিযোগকারী সমাজসেবক রফিকুল ইসলাম কাকন বরিশালটাইমসকে জানান, পৌরসভার হিসাবরক্ষক বেলায়েত হোসেনের ঘুষের টাকার উৎস বহুমুখী। বেলায়েত হোসেন সাবেক কাউন্সিলরদের সম্মানী ভাতা অনুমোদন করাতে মোটা অঙ্কের টাকা ঘুষ নেন। এছাড়া তার বিরুদ্ধে ঠিকাদারি কাজের বিল প্রস্তুত করতে ৭ শতাংশ ঘুষ, ঠিকাদারদের সঙ্গে নিয়ে সিন্ডিকেট তৈরি, পৌরসভার সব বিল ভাউচার তৈরির ক্ষেত্রে ২০-৩০ শতাংশ ঘুষ নেয়। এ বিষয় ইতিপূর্বে পাথরঘাটা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছি।
জমি কেনার বিষয়টি অকপটে স্বীকার করে হিসাব রক্ষক বেলায়েত হোসেন বরিশালটাইমসকে জানান, কিছু না করলে তো কিছু হয় নাই। অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা না হলেও কিছুতো একটা আছেই। তবে দুর্নীতি করে কিছুই করিনি। এ বিষয়ে পাথরঘাটা পৌর মেয়র আনোয়ার হোসেন আকন বরিশালটাইমসকে জানান, বেলায়েত দীর্ঘদিন ধরে পৌরসভায় চাকরি করেন, কিন্তু তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি কোনো অভিযোগ পাইনি। এমনকি পৌরসভার কোনো টাকা আত্মসাৎ করছে বলেও অভিযোগ নেই। তবে সে এত সম্পদ কিভাবে গড়েছে তা আমার জানা নেই। বিষয়টি খতিয়ে দেখে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply