নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরগুনার বেতাগীতে আমড়া পাড়তে গিয়ে গাছ থেকে পড়ে মৃত্যু হয় মুদি দোকানি আবুল বাশারের। শনিবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের জলিশা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী মির্জাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানকার দায়িত্বরত চিকিৎসক তানভির হাসান তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর লাশ হস্তান্তরের প্রক্রিয়া যায় মির্জাগঞ্জ থানায়। বাশারের অপমৃত্যুকে ‘খুন’ দাবি করে ২০ হাজার টাকা দাবি করার অভিযোগ উঠেছে ওই থানা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। টাকা দিতে অপারগতা স্বীকার করায় মৃতের পরিবারের সদস্যদের মারধর করা হয়েছে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। মির্জাগঞ্জ থানার পুলিশ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে লাশ হস্তান্তরে স্বজনদের সঙ্গে নানা টালবাহানা করে। বেতাগী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সরেজমিন প্রতিবেদনে আবুল বাশারের মৃত্যকে ‘অপমৃত্যু’ বললেও বিষয়টি মানতে নারাজ মির্জাগঞ্জ থানা কর্তৃপক্ষ। মৃতের স্বজনদের দাবি, লাশ নিতে হলে ২০ হাজার টাকা দাবি করেছেন মির্জাগঞ্জ থানার ওসি মহিবুল্লাহ। তিনি স্বজনদের বলেন, লাশের শরীরে কোনো আঘাত না থাকলেও মাথার আঘাত দেখে মনে হচ্ছে এটি খুন হয়েছে, এটা অপমৃত্যু নয়। সুতরাং লাশ ময়নাতদন্তে পাঠাতে হবে। পরিস্থিতি সামাল দিতে না পেরে গতকাল রাত ২টায় স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করেন মির্জাগঞ্জ থানার ওসি মো. মহিবুল্লাহ। মৃত আবুল বাশারের স্ত্রী আসমা বেগম বলেন, ‘গুরুতর আহত অবস্থায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পরপরই আমার স্বামীর মৃত্যু হয়। এরপর পুলিশ লাশ নিতে টাকা দাবি করে। আবুল বাশারের ছোট ভাই শাহাদাৎ বলেন, ‘মির্জাগঞ্জ থানার ওসি বেতাগী থানায় যেতে বলেন। তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবেন বলে বাড়িতে আসি। বেতাগী থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এবং বলে মির্জাগঞ্জ থানায় যান, আমরা বলে দিয়েছি। গেলেই লাশ দিয়ে দেবে। এরপর আবারও মির্জাগঞ্জ থানায় যাই। ওসি মহিবুল্লাহ এবার বলেন, লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়া নিতে হলে ২০ হাজার টাকা খরচ দিতে হবে। মির্জাগঞ্জ থানার এসআই সাইফুল বলেন, ‘যা হইছে তা তো দেখেছেনই। যা পারেন কইরেন। আমি আপনাদের দেখে নেব। মামলা গুনেও শেষ করতে পারবেন না। বেতাগী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জানিয়েছি এটি নিঃসন্দেহে একটি অপমৃত্যু। তার পরও কেন মির্জাগঞ্জ থানা পুলিশ লাশ হস্তান্তরে গড়িমসি করেছে, কী আইনি জটিলতা ছিল এ ব্যাপারে আমাদের কোনো মন্তব্য নেই। এসব অভিযোগের ব্যাপারে মির্জাগঞ্জ থানার ওসি মো. মহিবুল্লাহ বলেন, ‘পরিস্থিতি সামাল দিতে তিনজনকে আটক করা হয়েছিল, পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তাদেরকে মারধর করা হয়নি। লিখিত রেখে লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আর্থিক লেনদেনের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘চা খেতে আসুন, ফোনে আর কী বলব। রাতে তো ঘুমের সময় ভাই।
Leave a Reply