তালতলী প্রতিনিধি ॥ বরগুনা তালতলী উপজেলা শহরে যন্ত্রণার আরেক নাম মাইকিং। ছাগল হারানো থেকে শুরু করে মাছ-মাংসের দাম ওঠা-নামাতেও শুরু হয় উচ্চ শব্দে মাইকিং। সকাল থেকে অনেক রাত পর্যন্ত রিকশা কিংবা অটোরিকশার দুই পাশে চোঙা (হর্ন) লাগিয়ে চলে এই যন্ত্রণাদায়ক প্রচার। বিচিত্র বিষয়ে নিয়ম বহির্ভূত মাইকিংয়ের শব্দ দূষণে শহরের লোকজন অতিষ্ঠ হলেও দেখার যেন কেউ নেই। তালতলীতে প্রতিদিন সকাল না হতেই বিচিত্র সব বিষয়ে শুরু হয় মাইকে প্রচার। শাপলা ক্লিনিক, দোয়েল ক্লিনিক, পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, মাংসের দোকানে মহিষের মাংস বিক্রি, আজকের জন্য মোবাইল সিমে বিশেষ ছাড়, বিভিন্ন কোম্পানির পণ্যে বিশাল মূল্য ছাড় ছাড়াও হারানো বিজ্ঞপ্তি, সভা, সেমিনার, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের কর্মসূচির নামে চলে বেপরোয়া মাইকিং। এ ছাড়া বিভিন্ন ডেকোরেটর এবং ব্যক্তি মালিকানায় ভাড়া দেওয়া মাইক থেকেও প্রচার চালানো হয় বেপরোয়া ভাবে। কখনও আবার ঢাকঢোল এবং বাদ্যযন্ত্রসহ পিকআপভ্যান ব্যবহার করা হয় মাইকিংয়ে।
শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা ২০০৬ অনুযায়ী, আবাসিক এলাকায় সকাল ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সর্বোচ্চ শব্দ সীমা ৫৫ ডেসিবল। বিধিমালা অনুযায়ী স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালতের ১০০ গজের মধ্যে কোনো প্রকার উচ্চ শব্দ ব্যবহার করা যাবে না। পাশাপাশি রাত ১০টার পর কোনো ভাবেই শব্দ দূষণকারী যন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না। কোনো উৎসব, সামাজিক বা রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে লাউড স্পিকার, অ্যাম্পিফায়ার বা কোনো যান্ত্রিক কৌশল ব্যবহার করতে কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি নিতে হবে। কিন্তু এ সব আইন বা বিধিমালার তোয়াক্কা না করে অতি মাত্রার শব্দে নানা বিষয়ে মাইকিং এখন নিত্যদিনের ঘটনা। যন্ত্রণাদায়ক এই প্রচারে অসহায় হয়ে পড়েছেন শহরের মানুষজন। তালতলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রেজবি উল কবির জমাদ্দার বলেন, এ সব বন্ধ করতে হলে প্রয়োজন সচেতনতা। সচেতনতার অভাবেই দিনরাত মাইক বাজে। তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আসাদুজ্জামান বলেন, রাস্তাঘাটে ও বাজার এলাকায় মাইকিং হচ্ছে, তা বন্ধের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেব।’
Leave a Reply