নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি কিংবা ফৌজদারী মামলার সঙ্গে জড়িত বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের (বিসিসি) কর্মকর্তা – কর্মচারীদের বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে শাস্তির খড়গ। যাদের কাছে কর্পোরেশন জিম্মি ছিল তাদেরকে অপসারণের মাধ্যমে নাগরিক সেবার মান বৃদ্ধি করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এভাবে সিটি কর্পোরেশনকে ঢেলে সাজানোর প্রক্রিয়া শুরু করায় বর্তমান মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহকে সাধুবাদ জানিয়েছেন অনেকে। বিসিসি সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার নানা অনিয়ম তুলে ধরে করপোরেশনের চার কর্মকর্তাকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হয়। তারা হচ্ছেন সেখানকার বাজেট কাম হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মোঃ মশিউর রহমান, ট্রেড লাইসেন্স সুপারিনটেনডেন্ট আজিজুর রহমান শাহীন, হাটবাজার শাখার সুপারিনটেনডেন্ট মোঃ নুরুল ইসলাম এবং উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ। এর আগে গত ২০ আগস্ট সিটি মেয়রের ব্যক্তিগত সহকারী শাখাওয়াত হোসেন শাহিনকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
সূত্র মতে আরো জানা গেছে, বিসিসিতে বর্তমানে সাময়িক বরখাস্ত রয়েছেন ১৫ জন। এর মধ্যে ৯ থেকে ১০ জনই কর্পোরেশনের অভ্যন্তরীণ নানা দুর্নীতিতে অভিযুক্ত। বাকি পাঁচজনের বিরুদ্ধে রয়েছে ফৌজদারি মামলা। অন্যদিকে ২০ জন রয়েছেন ওএসডি। এদের মধ্যে কেউ কেউ ৬ মাস থেকে ১ বছর ধরে সাময়িক বরখাস্ত কিংবা ওএসডি রয়েছেন।
প্রতিষ্ঠানটির জনসংযোগ কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) স্বপন কুমার দাস বলেন, ‘নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে এ পর্যন্ত ৪১ জনকে সাময়িক বরখাস্ত এবং ওএসডি করা হয়েছে। এর মধ্যে এ পর্যন্ত পাঁচজন চাকরিচ্যুত হয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে কর্পোরেশনের অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি কিংবা ফৌজদারি মামলাও রয়েছে। বরখাস্ত হওয়াদের কারণ দর্শানো হয়েছে। তবে যারা দুর্নীতি বা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত নন তাদের কোন ভয় নেই জানিয়ে এই কর্মকর্তা বলেন,‘ যারা দুর্নীতিগ্রস্ত তাদের সমস্যা হতেই পারে। কিন্তু যারা দুর্নীতি করেননি, তাদের ভয়ের কারণ নেই। আর নানা অভিযোগে অভিযুক্তদের শাস্তি নিশ্চিত করণের মাধ্যমে নগরবাসীকে আরো অধিক সেবা দিতে পারবে বিসিসি এমনটাই মনে করেন প্যানেল মেয়র গাজী নাইমুল ইসলাম লিটু। তিনি জানান, বর্তমান মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ বরিশাল সিটি কর্পোরেশনকে বিগত দিনের চেয়েও কার্যকর করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সে কারণে যারা দীর্ঘদিন কর্পোরেশনের চাকরিটিকে শুধুমাত্র নিজের আখের গোছানোর কাজে লাগিয়েছেন তাদেরকে চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনছেন। নতুন করে সিটি কর্পোরেশন ঢেলে সাজানোর মাধ্যমে সেবার মান ও ধারা বৃদ্ধি পাবে।
সারাদেশে প্রধানমন্ত্রীর দুর্নীতি বিরোধী অভিযানের প্রতিফলন বরিশাল সিটি কর্পোরেশনে পড়েছে বলে জানান আরেক প্যানেল মেয়র আয়শা তৌহিদ লুনা। তিনি বলেন, ‘আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকল প্রশাসনিক স্তর থেকে দুর্নীতি – অনিয়ম দূর করতে বদ্ধপরিকর। এতদিন কিছু দুর্নীতিবাজ ও প্রভাবশালী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হাতে বিসিসি জিম্মি ছিল। তাদের অপসারণের মাধ্যমে দক্ষ ও যোগ্য ব্যক্তিরা সামনে এসে মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ’র হাতকে শক্তিশালী করতে পারবেন। এতে করে নাগরিক সেবা বৃদ্ধি পাবে বলেও মনে করেন এই নারী জনপ্রতিনিধি।
Leave a Reply