খুলনার টুম্পা রানী মন্ডল হত্যা মামলায় স্বামীসহ তিনজনের ফাঁসির রায় হয়েছে। সোমবার খুলনা জেলা ও দায়রা জজ মো. মশিউর রহমান চৌধুরী এ রায় ঘোষণা করেন। ঘোষিত রায়ে টুম্পার স্বামী প্রসেনজিৎ গাইনের সাথে অনিমেষ মন্ডল ও বিপ্লব কান্তি মন্ডলকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে। আর অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় খালাস পেয়েছেন সুদাশ গাইন। প্রসেনজিৎ ও বিপ্লব পলাতক।
মামলার বিবরণ অনুয়ায়ী, জেলার ডুমুরিয়া উপজেলাধীন চন্ডিপুর গ্রামের সুরঞ্জন মন্ডলের মেয়ে টুম্পা রানীর(২৫) সাথে একই উপজেলার সেনপাড়া গ্রামের পরিমল গাইনের ছেলে প্রসেনজিৎ গাইনের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
২০১৫ সালের জুলাইয়ে তারা গোপনে বিয়ে করে এবং খুলনা মহানগরীর একটি ভাড়া বাসায় সংসার শুরু করে। ব্যাপারটি জানাজানি হলে উভয়ের পরিবার আত্মীয়-স্বজন নিয়ে ধুমধামের সাথে পুনরায় বিয়ে দেয়ার কথা বলে তাদের বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যায়। কিন্তু কিছুদিন পরেই স্বামীপক্ষ সবকিছু অস্বীকার ও টুম্পা ও তার পরিবারের সাথে অসদাচরণ শুরু করে। বিষয়টি বুঝতে পেরে টুম্পা শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে অবস্থান নিলে তাকে পিটিয়ে তাড়িয়ে দেয়া হয়। এরপরে টুম্পা রানী বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলা করার কিছুদিন পর প্রসেনজিৎ টুম্পার সাথে গোপনে আবারো যোগাযোগ শুরু করে এবং স্ত্রীর স্বীকৃতি প্রদান ও মামলা প্রত্যাহারের কথা বলে। তার কথায় রাজি হয়ে টুম্পাও বিভিন্ন সময় ফোন ও সরাসরি তার সাথে সাক্ষাৎ করতে থাকে।
এভাবে চলার একপর্যায়ে ২০১৬ সালের ৭ অক্টোবর বিকেলে টুম্পা স্বামীর সাথে দেখা করতে বাড়ি থেকে বের হয়। তারপর থেকে তার কোনো খোঁজ পাচ্ছিল না তার পরিবার। দুইদিন পর ৯ অক্টোবর সন্ধ্যায় শোভনা ইউনিয়নের বাদুরগাছা মঠ-মন্দিরের পাশে ঘ্যাংরাইল নদীতে এক নারীর লাশ ভাসতে দেখতে পেয়ে গ্রামবাসী পুলিশে খবর দেয়। ডুমুরিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে টুম্পার স্বজনদের খবর দেয় এবং তারা লাশ টুম্পার বলে শনাক্ত করেন। এ ব্যাপারে টুম্পার ভাই সমিত মন্ডল বাদী হয়ে ডুমুরিয়া থানায় মামলা করেন। ২০১৭ সালের ২৫ নভেম্বর ৪জনকে অভিযুক্ত করে পুলিশ মামলার চার্জশিট দেয়।
Leave a Reply