নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ এবারের দূর্গাপুঁজায় মাস্ক ছাড়া মন্ডপে প্রবেশ করতে পারবে না ভক্ত বা দর্শনার্থীরা। এমনকি মন্ডপের ভিতরে এক সাথে ২০ জনের বেশী অবস্থান এবং প্রবেশের ক্ষেত্রে ৩ ফুট দূরত্ব বজায় রাখতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়াও বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ এবং যে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা এড়িয়ে শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গোৎসব সম্পন্ন করতে ১৫টি নির্দেশনা দিয়েছেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ (বিএমপি) কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান- বিপিএম (বার)। রোববার সকালে নগরীর পুলিশ লাইন্স এর ড্রিল সেডে বরিশাল জেলা ও মহানগর পুঁজা উদযাপন কমিটির শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দর’র সাথে অনুষ্ঠিত সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিএমপি কমিশনার ওই নির্দেশনা দিয়েছেন।
এসময় তিনি বলেছেন, কেউ যেন ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে না পেরে, সে দিকে সবাইকে শৃঙ্খলার সাথে সজাগ থাকতে হবে। আমরা যতো বেশী শৃঙ্খল থাকবো ততোধিক নিরপদ থাকবো। তিনি বলেন, ‘মনস্তাত্ত্বিকভাবে শিথিল হলেও করোনার প্রাদুর্ভাব কমেনি। নিয়ম মেনে মহান আল্লাহ’র কৃপায় আমরা এখন পর্যন্ত সহনশলি পর্যায়ে রয়েছি। স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি ভেঙে চললে দুঃখও রয়েছে। মাস্ক বিহীন কোন লোক পুজা মন্ডপে প্রবেশ করতে না পারে সে বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন বিএমপি কমিশনার।
নিরাপত্তার প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘সাদা পোশাকেসহ আমাদের ঘন ঘন পুলিশি টহল থাকবে। কোথাও কোন ব্যপ্তয় ঘটলে আমাদের অবগত করবেন। যতবেশি জানাবেন, যতোবেশী পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করবেন ততো বেশি সমৃদ্ধ হয়ে নিরাপদ ও সুন্দর পরিবেশ উপহার দিতে পারবো। এদিকে বিএমপি সূত্রে জানাগেছে, এবারে মেট্রোপলিটন এলাকার সর্বমোট ৭৬টি পুজা মন্ডপে সারদীয় দুর্গাপুজা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্রে সর্বোচ্চ ৩৬টি কোতয়ালী মডেল থানা এলাকায়, এয়ারপোর্ট থানা এলাকায় ১৮টি, বন্দর থানা এলাকায় ১১টি এবং কাউনিয়া থানা এলাকায় ১১টি।
সমন্বয় সভায় অংশগ্রহনকারী পুজা উদযাপন কমিটির নেতৃবৃন্দকে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গাৎসব সম্পন্ন করতে বিভিন্ন বিষয়ের উপর ১৫টি দিক নির্দেশনা প্রদান করেছেন বিএমপি কমিশনার। এগুলো হল- আয়োজক কমিটি কর্তৃক প্রয়োজনীয় সংখ্যক নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করে মন্ডপের সার্বিক নিরাপত্তা, ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ও বিসর্জনস্থলে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। স্বেচ্ছাসেবকদের আলাদা পোশাক, দৃশ্যমান পরিচয়পত্র ও স্বেচ্ছাসেবক লিখিত আর্মড ব্যান্ড প্রদান করা।
স্বেচ্ছাসেবক দ্বারা পুজামন্ডপে আগত দর্শনার্থীদের দেহ তল্লাশী করা। নারী দর্শনার্থীদের দেহ তল্লাশীর জন্য পর্যাপ্ত নারী স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা। স্বেচ্ছাসেবকদের নাম-ঠিকানা, মোবাইল নম্বর আগামী ১৫ অক্টোবরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট থানায় প্রেরণ করতে হবে। মন্ডপসমূহ খোলামেরা থাকতে হবে এবং মন্ডপস্থলের চারপাশ খোলা রাখার ব্যবস্থা করতে হবে ও চারপাশ আটকানো থাকলে উপরে খোলা রাখতে হবে। মন্ডপের ভিতরে এক সাথে ২০ জনের বেশী থাকবে না, আগত দর্শনার্থীরা প্রবেশ পথে ৩ ফুট দূরত্ব বজায় রেখে মন্ডপে প্রবেশ করবেন এবং মন্ডপের ভিতরে তিন ফুট দূরত্ব বজায় রাখবেন। প্রত্যেক মন্ডপের প্রবেশ এবং বাহির পথে জীবণু নাশক দিয়েহাত ধোয়ার ব্যবস্থা থাকতে হবে অথবা হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে।
প্রতিটি মন্ডপের গেটে থার্মাল স্ক্যানার/তাপমাত্রা পরিমাপের যন্ত্র রাখতে হবে। কোন ধরনের পটকা/আতশবাজি ফোটানো যাবে না। ‘নো মাস্ক নো এন্ট্রি’ মাস্কবিহীন কোন দর্শনার্থী মন্ডপে প্রবেশ করতে পারবে না। পুজা উদযাপন কমিটি মন্ডপের গেটে ফ্রি মাস্ক এর ব্যবস্থা করবেন। ভিতরে ও বাহিরে কোন প্রসাদ বিতরণ করা যাবে না। কোন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা যাবে না। পুষ্পঞ্জলী/আড়তী ভার্চুয়ালী করতে হবে এবং মন্ডপে বিশুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহ ও অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছেন বিএমপি কমিশনার। বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (সদর দপ্তর) আবু রায়হান মুহাম্মদ সালেহ্’র সভাপতিত্বে এবং সহকারী পুলিশ কমিশনার (ফোর্স এন্ড কাউনিয়া থানা) মো. মাসুদ রানা’র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমন্বয় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার প্রলয় চিসিম, উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মো. মোকতার হোসেন- পিপিএম (সেবা), উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মোহাম্মদ জাকির হোসেন মজুমদার- (পিপিএম), উপ-পুলিশ কমিশনার (নগর বিশেষ শাখা) জাহাঙ্গীর হোসেন মল্লিক, উপ-পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মো. মনজুর রহমান- পিপিএমে (বার), উপ-পুলিশ কমিশনার (সাপ্লাই এন্ড লজিস্টিকস) খান মুহাম্মদ আবু নাসের প্রমুখ।
Leave a Reply