নিজস্ব প্রতিবেদক: শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালের ডাক্তার ও আয়া-বুয়াদের রোগীর রোগ পরীক্ষার কোন কমিশন না দিতে ডায়ানস্টিক ও প্যাথলজি মালিকদের নির্দেশনা দিয়েছেন বরিশাল সিটি মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ। বিষয়টি তদারকি করতে বান্দ রোড ডাগায়নস্টিক ও প্যাথলজি মালিকদের জরুরী একটি কমিটি গঠন করে কঠোর তদারকির নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। কমিটির প্রধান উপদেস্টা থাকবেন মেয়র নিজেই। বৃহস্পতিবার (২২ অক্টোবর) রাত ৯টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত নগরীর কালীবাড়ি রোডে সিটি মেয়রের বাসভবনে এক দির্ঘ মতবিনিময় সভায় এই নির্দেশনা দেন মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ। সভায় উপস্থিত একাধিক ডায়াগনস্টিক সেন্টার মালিক এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ডায়াগনস্টিক ও প্যাথলজি সেন্টার থেকে ডাক্তার, আয়া-বুয়াদের কমিশন আদায়ের রেওয়াজ বহু পুরনো।
সাম্প্রতিক সময়ে ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে কমিশন আদায়ের ঘটনা নিয়ে অনাকাংখিত ঘটনা ঘটে শের-ই বাংলা মেডিকেলে। এ ঘটনার পর ডাক্তার এবং আয়া-বুয়াদের প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকার কমিশন আদয়ের ঘটনা ফাঁস হয়ে যায়। এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (২২ অক্টোবর) রাতে শের-ই বাংলা মেডিকেলের সামনে বান্দ রোডের ডায়াগনস্টিক ও প্যাথলজি মালিকদের জরুরী তলব করে নিজের বাসায় ডেকে নেন সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ। পরে ডায়াগনস্টিক মালিকরা মেয়রের বাসায় তার সাথে এক দির্ঘ মতবিনিময় করেন। মতবিনিময় সভায় মেয়র ডায়াগনস্টিক সেন্টার মালিকদের কাছে ডাক্তার ও আয়া-বুয়াদের কমিশন বানিজ্যের বিষয়টি জানতে চান। সভায় অংশগ্রহনকারী ডায়াগনস্টিক মালিকরা মেয়রকে বলেন, রেফারেন্স ডাক্তার, ট্রলিতে করে রোগী নিয়ে আসা আয়া-বুয়া এবং রিপোর্টেড ডাক্তারকে পরীক্ষা ফি’র মোট ৮০ ভাগ অর্থ কমিশন দিতে হয়। বাকী ২০ ভাগ অর্থে ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর রি-এজেন্ট, ক্যামিক্যাল, ঘরভাড়া, কর্মচারী বেতন এবং বিদ্যুত বিল দিয়ে মালিকরা চলতে পারছেনা।
ডায়াগনস্টিক মালিকদের দেয়া বক্তব্যে মেয়র বিস্ময় প্রকাশ করেন। কোন কোন ডাক্তার ও আয়া-বুয়া রোগীর রোগ পরীক্ষার কমিশন আদায় করেন তা বিস্তারিত অবগত হন মেয়র। ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে ইন্টার্ন চিকিৎসক ও মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের কেউ কোন উপদ্রব করেন কিনা তাও খুটিয়ে খুটিয়ে জানার চেস্টা করেন মেয়র। মতবিনিময়ের এক পর্যায়ে মেয়র শের-ই বাংলা মেডিকেলের কোন রেফারেন্স ডাক্তার এবং আয়া-বুয়াকে রোগীর রোগ পরীক্ষা বাবদ কোন কমিশন না দেয়ার জন্য ডায়াগনস্টিক ও প্যাথলজি মালিকদের কঠোর নির্দেশনা দেন। ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি ডাক্তার ও আয়াদের কমিশন বানিজ্য কঠোরভাবে রুখতে বান্দ রোডের (মেডিকেলের সামনে) ডাগায়নস্টিক ও প্যাথলজি মালিকদের জরুরী ভিত্তিতে একটি কমিটি গঠনের তাগিদ দেন তিনি।
কমিটির প্রধান উপদেস্টা থাকার আগ্রহ প্রকাশ করেন মেয়র নিজেই। কমিশন বানিজ্য সম্পূর্নভাবে বন্ধে ডাগায়নস্টিক ও প্যাথলজি মালিক সংগঠনের পক্ষ থেকে নিয়মতি পরিদর্শক রেখে কঠোর তদারকি নিশ্চিত করার নির্দেশ দেন মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ। মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত কেউ কোন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কোন ধরনের উৎপাত করলে বিষয়টি তাৎক্ষনিক সিটি মেয়র তাকে জানাতে বলেন সংশ্লিস্টদের। সভায় উপস্থিত একাধিক ডায়াগনস্টিক মালিক এই তথ্য জানিয়েছেন।
মতবিনিময় সভায় সিটি মেয়র ছাড়াও ডায়াগনস্টিক মালিক হাবিব মিয়া, মাহবুব মিয়া, কাজী মিরাজ, বেলায়েত হোসেন, মো. ওয়াহিদ, মো. শামীম, মো. শাহিন, মো. দুলাল সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন। ডাক্তার ও আয়া-বুয়াদের রোগীর রোগ পরীক্ষার কমিশন আদায় বন্ধ এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টারের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সিটি মেয়রের পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন নগরীর বিশিস্টজনরা। সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ’র মুঠোফোনে বলেন, করোনাকালে ডাক্তারদের ভূমিকা প্রসংশনীয়।
দুই-একজন ডাক্তারের কারনে বরিশালের ডাক্তার সমাজের বদনাম কোনভাবে কাম্য নয়। তিনি ডায়াগনস্টিক মালিকদের বক্তব্য শুনেছেন। কোন কোন ডাক্তার কমিশন নেয় এবং ছাত্রলীগের কেউ এর সাথে জড়িত কিনা সব কিছু অবহিত হয়েছেন। যেসব ডাক্তার কমিশন নেয় তাদের বিরুদ্ধে শের-ই বাংলা মেডিকেলের পরিচালক এবং তার (মেয়র) কাছে লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছেন। ডায়াগনস্টিক মালিকরা লিখিত অভিযোগ দিলে আলোচনা করে এ বিষয়ে কঠোর সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা বলেন মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ।সুত্র বিডি নিউজ
Leave a Reply