নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ নগরীতে হাত বাড়ালেই মিলছে নিষিদ্ধ যৌন উত্তেজক ওষুধ। ফুটপাত থেকে শুরু করে মুদি দোকান পর্যন্ত সর্বত্রই পাওয়া যাচ্ছে এ অবৈধ ওষুধ। এমনকি বাদ যাচ্ছে না আদালত চত্বরও। প্রশাসনের সু-দৃষ্টির অভাবে ক্রমশই নগর জুড়ে যৌন উত্তেজক ওষুধের বিস্তার ঘটছে বলে দাবি বিশেষ মহলের। খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, ‘দেশের বাজারে প্রায় দুইশ ধরনের যৌন উত্তেজক ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে। হাতে গোনা কয়েকটি ছাড়া বাকি সবগুলোই মানহীন এবং অবৈধ উপায়ে তৈরি। বিক্রির সুবিধার্থে বিভিন্ন সাংকেতিক নাম ব্যবহার করা হচ্ছে অবৈধ এ ওষুধের। ভেষজ ওষুধের নাম করে প্রতিটি ট্যাবলেটের মূল্য রাখা হচ্ছে ৫০ থেকে ১০০ টাকা করে। সরেজমিনে দেখা যায়, ‘আবাসিক হোটেল এবং গণজমায়েত হওয়া এলাকাগুলোতেই অবৈধ এই যৌন উত্তেজক ওষুধ বিক্রি বেশি হচ্ছে। ফুটপাতে টেবিল চেয়ার বা চাদর বিছিয়ে ক্যানভাস করে বিক্রি করা হয় এসব ওষুধ’। এসব জায়গাতে হোটেল বোর্ডার বা গ্রামাঞ্চল থেকে আসা সহজসরল মানুষদের ফাঁদে ফেলে বিক্রি করা হচ্ছে অবৈধ যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট। সরেজমিনে দেখা গেছে, ‘নগরীর লঞ্চঘাট, পোর্ট রোড, ভূমি অফিসের সামনে, ফজলুল হক এভিনিউ সড়ক, জেলা পরিষদের পুকুর পাড়, সাব রেজিস্ট্রার অফিস এমনকি আদালত চত্বরেও প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে এসব অবৈধ যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট।
এর বাইরে নগরীর ফলপট্টি অগ্রণী ব্যাংকের পাশে ও সামনের বেশ কয়েকটি দোকানে, সদর রোড, শেবাচিমের সামনে, আগরপুর রোড এবং হাসপাতাল রোড, নথুল্লাবাদ, রূপাতলী বাসস্ট্যান্ডসহ অন্যান্য এলাকার দোকানেও বিক্রি হচ্ছে যৌন উত্তেজক ওষুধ। যার মধ্যে রয়েছে ট্যাবলেট, ক্যাপসুল এবং কোমলপানীয়।
আলাপকালে এক ফুটপাতে যৌন উত্তেজক ওষুধ বিক্রয়কারী জানান, ‘প্রতিদিন অনেক ক্রেতা আসছে তাদের কাছে। তারা যে ওষুধ বিক্রি করছেন সেটাতে যৌন উত্তেজনা বৃদ্ধি করে। তবে এটা ভেষজ হওয়ায় এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই বলে দাবি করেন বিক্রেতারা। তবে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, ‘যৌন উত্তেজনা বাড়ায় এমন সকল ধরনের ওষুধই মানব দেহের জন্য ক্ষতিকর। তাছাড়া যৌন উত্তেজক ওষুধ রেজিস্ট্রার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া বিক্রির কোন সুযোগ নেই বলেও জানান বিশেষজ্ঞরা। এ প্রসঙ্গে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডার্মাটোলজি (চর্ম ও যৌন রোগ বিশেষজ্ঞ) বিভাগের প্রধান ডা. খলিলুর রহমান বলেন, ‘যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। চিকিৎসকের অনুমতি ছাড়া এগুলো বিক্রি সম্পূর্ণ বে-আইনী। তাছাড়া যৌন উত্তেজক ওষুধের কারণে মানুষের মৃত্যুও ঘটতে পারে। তাই এ বিষয়ে প্রশাসনের নজরদারি বৃদ্ধি জরুরি বলেও জানিয়েছেন এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।
Leave a Reply